ভাঙন, ভিটে ভুলিয়েছে ভোট
গ্রাসী নদী ক্রমশ এগিয়ে আসছে গ্রামের দিকে। কেউ ভিটেমাটি ছাড়া হয়েছেন। কেউ ভিটেমাটি ছাড়ার অপেক্ষায় প্রমাদ গুনছেন। আর ওই আতঙ্কই রাজনীতি ভুলিয়ে দিয়েছে গোটা গ্রামকে। কে ডান আর কে বাম, তা যেন বোঝার উপায় নেই। সকলের দাবি, ‘নদী বাঁধ সংস্কার চাই। গ্রাম না থাকলে রাজনীতি করে কী হবে?”
রবিবার এ দৃশ্য দেখল শীতলখুচির কুর্শামারি গ্রাম। এ দিন ওই গ্রামে গিয়ে দেখা যায় তৃণমূলের প্রার্থী উত্তম সরকার, পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী রাম সরকার, ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রার্থী কানাইলাল সরকার এক বেঞ্চে বসে । একসঙ্গে সেচ দফতরের কর্তাদের অনুরোধ করছেন, “কিছু করুন।” তাঁরা জানান, দিন কয়েক আগে গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়ে তাঁরা সেচ দফতরে স্মারকলিপিও দিয়েছেন।
রামবাবু বলেন, “ভোটে দাঁড়িয়েছি। নীতির লড়াই হচ্ছে। কে কতটা গ্রামের উন্নয়ন করেছে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। কিন্তু বাসিন্দারা যেখানে ভিটেমাটি ছাড়া হওয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন সেখানে রাজনীতি করে কী হবে?” অনেকটা একই সুরে সুর মিলিয়ে ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী কানাইলালবাবুর বক্তব্য “রাজনীতির আগে আমরা সবাই গ্রামের মানুষ। এখন সকলেই বিপদে পড়েছি। তাই সকলে মিলে মোকাবিলা করছি।” তিনি জানিয়েছেন, সিপিএমের পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী শিশির সরকার ব্যক্তিগত কাজে বাইরে গিয়েছেন। তিনি বাসিন্দাদের পাশে রয়েছেন। শিশিরবাবু বলেন, “আমি পরে এলাকায় যাই। বাসিন্দাদের সবাই আতঙ্কে রয়েছেন। এলাকায় রাজনীতি না করে একযোগে লড়াই করে বাঁধ মেরামতির দাবি করছি।” এলাকার বাসিন্দা অনিল মন্ডল, স্বপন বারুই, বীনা বারুইরা জানান, মানসাই নদী ভাঙন ওই এলাকায় দীর্ঘদিনের সমস্যা। গত বছর পাঁচটি বাড়ি, প্রচুর কৃষিজমি তলিয়ে গিয়েছে নদীতে। গত দু’দিন ধরে নদীর জল বাড়তে শুরু করছে। যা অবস্থা তাতে বেশ কয়েকটি বাড়ি যে কোনও মুহূর্তে ভেঙে যেতে পারে। এলাকার বাসিন্দা সিদ্ধি সরকার বলেন, “গত বছর আমার বাড়ি ভেঙে যায়। যতটুকু জমি ছিল সবই তলিয়ে গিয়েছে। এখন দিন মজুরি করে সংসার চালাচ্ছি।” আরেক বাসিন্দা রাধেশ্যাম সরকার বলেন, “নদী ক্রমশ এগিয়ে আসছে। ভাঙতে ভাঙতে নদী আরও ১০টি বাড়ির কাছে এসে গিয়েছে। এই অবস্থায় বাঁধ মেরামতির কাজ না হলে সব তলিয়ে যাবে।” এ দিন ভাঙা বাঁধ পরিদর্শনে যান সেচ দফতরের কর্তারা। তাঁরা এলাকা ঘুরে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। সেচ দফতরের এক কর্তা বলেন, “পাঁচটি বাড়ি ভেঙে গিয়েছে গত বছর। এ বছর অনেকে ইতিমধ্যেই বাড়ি সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছেন। নদী খুব দ্রুত গতিতে ভাঙছে। পুরো পরিস্থিতির কথা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।” সেচ দফতরের কর্তারা চার প্রার্থীর সঙ্গেও এ দিন কথা বলেন।
বাসিন্দারা বলেন, “আমাদের গ্রামে সব দলের লোক রয়েছে। কখনও কখনও দু’পক্ষের মধ্যে রোষারেষিও হয়। কিন্তু এ বার নদী ভাঙনে সবাই একসঙ্গে আন্দোলনে নেমেছেন। সবাই চাইছেন বাঁধ সংস্কার হোক। তাঁদের চেষ্টা আমাদেরও আশা যোগাচ্ছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.