নদীর জল ঢুকেছে উত্তরের ৩ জেলায়
ত্তরবঙ্গের ৩ জেলায় বৃষ্টি চলছেই। গত ২৪ ঘণ্টায় জলপাইগুড়ি শহর ও লাগোয়া এলাকা, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহারের মাথাভাঙায় ১০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে। রবিবার জলপাইগুড়ি দোমহনী থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত তিস্তা নদীতে লাল সর্তকতা জারি রয়েছে। উত্তরবঙ্গ বন্যা নিয়ন্ত্রণ কমিশন সূত্রে জানা যায়, কালজানি এবং রায়ডাক নদীর জল বিপদসীমা ছুঁয়ে বইছে। টানা বৃষ্টি এবং নদীর জল বাড়ায় জলমগ্ন ডুয়ার্সের বহু এলাকা। কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ারের পুর এলাকার একাংশ জলবন্দি হয়ে পড়ে। ত্রাণ না মেলায় অবরোধ হয়েছে ডুয়ার্সে। জেলাশাসক স্মারকী মহাপাত্র বলেন, “বিডিওদের ও সেচ দফতরকে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দুর্গত এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী পাঠানো শুরু হয়েছে।” শনিবার শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়িতে দুপুরের পর অবশ্য বৃষ্টি থেমে গিয়ে রোদের দেখা মিলেছে। বৃষ্টির জন্য এ দিন সকালে শিলিগুড়ি শহর লাগোয়া ফুলবাড়ি এলাকায় কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী দীপা দাশমুন্সির ভোট প্রচারের পদযাত্রা বাতিলকরে দিতে হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় আলিপুরদুয়ারে ২৪৪ মিলিমিটার, জলপাইগুড়িতে ১৩৩ মিলিমিটার ও কোচবিহারের মাথাভাঙা এলাকায় ১১৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
জলমগ্ন...
তিস্তার অসংরক্ষিত এলাকায় জলপাইগুড়ির
সুকান্তপল্লিতে ছবিটি তুলেছেন সন্দীপ পাল।
বিরকিটি নদীর জলে প্লাবিত ফালাকাটা
জয়চাঁদপুর। ছবি: রাজকুমার মোদক।
বৃষ্টির জমা জলের পাশাপাশি নদীর জল ঢুকে আলিপুরদুয়ার ২ এবং কুমারগ্রাম ব্লকের বেশ কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ত্রাণ না পেয়ে শামুকতলার পুখুরিয়া, মজিদখানা, উত্তর মহাকালগুড়ি, পারোকাটা, ধওলাবস্তি, মাঝেরডাবরি এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। শনিবার রাত থেকে পুখুরিয়া এবং তালেশ্বরগুড়ি এলাকায় ৫০টি পরিবার জলবন্দি থাকলেও প্রশাসন ত্রাণ বিলির কোনও উদ্যোগ নেয়নি বলে অভিযোগ। রবিবার খাটাজানি এলাকায় পথ অবরোধ করেন বাসিন্দারা। টানা তিন ঘণ্টা অবরূদ্ধ থাকে শামুকতলা-আলিপুরদুয়ার সড়ক। মজিদখানা এলাকার বাসিন্দারাও এদিন আলিপুরদুয়ার ২ বিডিও অফিসে গিয়ে ত্রাণের দাবিতে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।
তুফানগঞ্জ পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে নদী সংলগ্ন এলাকায় হিমাংশুরঞ্জন দেবের তোলা ছবি।
যথাযথ ভাবে ত্রাণ বিলি না করার অভিযোগ তুলে আলিপুরদুয়ার শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে পথ অবরোধ করেন বাসিন্দারা। আলিপুরদুয়ার শহরের জলমগ্ন এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিতে স্পিড বোট নামানো হয়েছে। কালজানি নদীর পাড়ে প্রায় আড়াই কিলোমিটার বাঁধের বেশ কিছু জায়গায় ধসে গিয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে। আলিপুরদুয়ার ১ ব্লকের পশ্চিমটারি, বঞ্চুকামারি, বিবেকানন্দ-২ গ্রামের বহু পরিবার আপাতত জলবন্দি হয়ে রয়েছেন। আলিপুরদুয়ার শহরের জলমগ্ন এলাকাগুলিতে ত্রাণ বিলি করা নিয়ে রাজনৈতিক অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে।
তৃণমূল যুব কংগ্রেসের রাজ্যের কার্যকরী সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “কংগ্রেস পরিচালিত পুরসভার ব্যর্থতায় শহর জলমগ্ন হয়েছে। মহকুমা শাসকের সঙ্গে কথা বলে ত্রাণ এবং স্পিড বোট ব্যবস্থা করেছি।” আলিপুরদুয়ার পুরসভার চেয়ারম্যান দীপ্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কালজানি নদীর জল বেশি থাকায় শহরের জমা জল বার করা সম্ভব নয়। লগ গেট খুললে উল্টে শহরে জল ঢুকবে।”
বৃষ্টিতে মাটিগাড়ার বালাসন সেতুর উপরে জল জমে যায়। নিজস্ব চিত্র।
ডুয়ার্সের নাগরাকাটা ব্লকের জলঢাকা, ডায়না ও কুচি ডায়না নদীতেও জল বাড়তে শুরু করেছে। জলমগ্ন হয়ে পড়েছে কোচবিহারের তুফানগঞ্জ ১ ব্লক এবং তুফানগঞ্জ পুরসভার কিছু এলাকাও। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রায়ডাকের জল ঢুকে তুফানগঞ্জ পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নিউ মদনমোহন পাড়া ও চর এলাকা জলমগ্ন হয়েছে। ওই এলাকায় নৌকায় যাতায়াত চলছে। তুফানগঞ্জ শহরে একটি ত্রাণ শিবিরে শতাধিক মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান রমেশ সরকার বলেন, “একটি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। আরও কয়েকটি শিবির তৈরি রাখা হয়েছে।”
রায়ডাক নদীর জলে প্লাবিত হয়ে পড়েছে তুফানগঞ্জ ১ নম্বর ব্লকের নাককাটিগছ, ধলপল-১ পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা। গদাধর এবং কালজিনি নদীর জল ঢুকতে শুরু করেছে লাগোয়া গ্রামগুলিতে। এ দিন সকালে ঝাউকুঠি এলাকায় পাকা সড়ক কালজানি নদীর জলের তোড়ে ভেঙে উড়ে গিয়েছে। কোচবিহার ২ ব্লকের মধুপুরের কিছু এলাকাতেও তোর্সা নদীর জল ঢুকতে শুরু করেছে। জেলাশাসক মোহন গাঁধী এই দিন বলেন, “মধুপুরে ত্রাণ বিলির কাজ শুরু হয়েছে।”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.