ফের দু’দিনের ভারী বৃষ্টিতে জল বাড়তে শুরু করেছে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন নদীগুলিতে। জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া দোমহনি থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত তিস্তা নদীতে লাল সর্তকতা জারি করা হয়েছে। ক্রমাগত জল বাড়ায় জলপাইগুড়ি জেলা সদর ছুঁয়ে বয়ে যাওয়া তিস্তা নদীর সংরক্ষিত এলাকাতেও হলুদ সর্তকতা জারি করা হয়েছে। কালজানি নদীর জল বিপদসীমা ছুঁয়ে বইছে বলে জানা গিয়েছে। রায়ডাক ১ নদীতেও জারি করা হয়েছে হলুদ সর্তকতা। উত্তরবঙ্গ বন্যা নিয়ন্ত্রণ কমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে, জল বেড়েছে জলঢাকা, তোর্সা, ঘিস, নেওড়া, মহানন্দা নদীতে। কমিশন জানিয়েছে, ডুয়ার্সের ছোট-বড় সব নদীতেই জল বাড়তে শুরু করায় বেশ কিছু এলাকায় নদী ভাঙনও শুরু হয়েছে।
গত শুক্রবার সকাল থেকেই বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি শুরু হয়েছে, শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়িতে। বৃষ্টি হয়েছে কোচবিহারেও। এদিন শনিবারেও বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। বৃষ্টি হয়েছে উত্তরবঙ্গ এবং সিকিমের পাহাড়ি এলাকাতেও। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার জেলার কোথাও বিক্ষিপ্ত ভাবে কোথাও আবার নাগাড়ে বৃষ্টি চললেও দুই দিনাজপুর এবং মালদহে বৃষ্টির পরিমাণ সামান্য বলে কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে। |
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় আলিপুরদুয়ারে ২৩১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। কোচবিহারের মাথাভাঙায় ১৩১ মিলিমিটার এবং তুফানগঞ্জে ৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। জলপাইগুড়ি শহর ও লাগোয়া এলাকায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৪ এবং শিলিগুড়িতে ৪৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সমতলের সঙ্গে পাহাড়েও বৃষ্টি চলতে থাকায়, শুক্রবার দুপুরের পর থেকেই তিস্তা নদীতে জল বাড়তে থাকে। শনিবার তিস্তার সংরক্ষিত এবং অসংরক্ষিত দুই এলাকাতেই বিপদসীমার কাছাকাছি জল স্তর উঠে এসেছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার দুপুরের পরে জল কিছুটা কমতে শুরু করেছে। তবে শনিবার রাতেও বৃষ্টি চলতে থাকলে তিস্তা নদীর জল বিপদসীমা অতিক্রম করে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। |
অন্যদিকে, নেওড়া নদীর জল বাড়তে থাকায় মালবাজার মহকুমার শালবাড়ি ও ছাওয়াফুলি গ্রামে জল ঢুকে পড়ে। মালনদীর জল বেড়ে মালবাজার পুরসভা এলাকার ১১ এবং ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কিছু এলাকায় ঢুকে পড়ে। বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে আলিপুরদুয়ার ২ এবং কুমারগ্রাম ব্লকের বেশ কিছু এলাকা। ধারসি, রায়ডাক এবং সংকোশ নদীর জল বাড়ায় শুরু হয়েছে পাড় ভাঙনও। আলিপুরদুয়ার ২ ব্লকের দক্ষিণ শিবকাটা এলাকায় ৫০ টি পরিবার, শামুকতলা বস্তির ১০ টি পরিবার জলবন্দি হয়ে পড়ায় অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। কুমারগ্রাম ব্লকের সংকোশ, রায়ডাক ২ নদীর ভাঙনে ভল্কা গ্রামের নিমাই পাড়া, ধন্দ্রা পাড়া ও পূর্ব চকচকা এলাকায় কয়েকশো পরিবার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। সেচ দফতরের আলিপুরদুয়ারের নির্বাহী বাস্তুকার অরুপানন্দ রায় বলেন, “পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। আধিকারিকদের পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। |