ক্ষমতা পেতে লড়াই কংগ্রেস-তৃণমূলে
মাতৃসদনে নজর নেই পরিষেবায়
ছর খানেক আগেই ভিড় উপচে পড়ত হাসপাতালে। অনেক রোগীকেই রেফার করা হত অন্যত্র। কিন্তু বর্তমানে পুর পরিষেবা বেহাল হয়ে পড়েছে শিলিগুড়ি পুরসভার হাসপাতাল মাতৃ সদনে। কংগ্রেস ও তৃণমূলের ক্ষমতা দখল নিয়ে ঠেলাঠেলির জেরে অনেক ক্ষেত্রেই পুর পরিষেবা প্রায় লাটে ওঠার উপক্রম হয়েছে। শহরের স্বাস্থ্য পরিষেবা তলানিতে এসে ঠেকেছে। বিশেষত ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে ডাবগ্রাম এলাকায় পুরসভার দায়িত্বে থাকা মাতৃসদনের দৈনন্দিন ছবি যেন সে কথা বলছে। খালি পড়ে শয্যাগুলি। বহির্বিভাগে চিকিৎসা হচ্ছে। রোগী ভর্তি বন্ধ। কারণ, চিকিৎসক নেই।
পুরসভার সূত্রের খবর, মাতৃসদনের চিকিৎসকের তালিকায় রয়েছে পাঁচজন চিকিৎসকের নাম। সাপ্তাহিক রোস্টার মেনেই চিকিৎসকরা যান। ২৪ ঘন্টার জন্য দায়িত্বে রয়েছেন একজন আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার। আরও একজন আরএমও প্রয়োজন। দায়িত্বে থাকা আরএমও নিরঞ্জন মন্ডল বলেন, “আমি আমার দায়িত্ব ঠিক ভাবেই পালন করছি।” তবে মাতৃসদনের এই পরিস্থিতির জন্য বর্তমান বোর্ডকেই দায়ী করছে কংগ্রেস ও তৃণমূল। আউটডোরে ডাক্তার দেখাতে পারলেও মিলছে না সব ওষুধ। বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে অনেক ওষুধই। তাই অনেকেই আর আসেন না এখানে। শুধু চিকিৎসক নেই বা ওষুধ নেই তা নয়। দুর্নীতির অভিযোগও উঠেছে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বিরুদ্ধে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে টাকা নেওয়া হচ্ছে রোগীর পরিবার থেকে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির এই বেহাল অবস্থা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা দার্জিলিং জেলা তৃণমূলের মহাসচিব কৃষ্ণ পাল। তিনি বলেন, “আমাদের দায়িত্বে থাকার সময় অনেক রোগী আসতেন এখানে। কিন্তু এখন তো পরিষেবা লাটে উঠেছে।” তিনি আরও বলেন, “বিপিএল পরিবার মহিলাদের চিকিৎসার জন্য এই মাতৃসদন। কিন্তু এখানে এখন কোন কাজ হচ্ছে না। পাশাপাশি শহরের হেলথ সেন্টার ও সাব সেন্টার গুলিরও খুব খারাপ অবস্থা।” মাতৃসদনের এই অবস্থার জন্য কংগ্রেসের বোর্ডকেই দায়ী করেন তিনি। কৃষ্ণবাবু বলেম, “মাতৃসদনের এই পরিস্থিতির জন্য বর্তমান বোর্ডের লজ্জ্বা হওয়া উচিত।” এক দিকে খালি পড়ে রয়েছে ১৮টি শয্যা। কিন্তু আউটডোরে যারা চিকিৎসা করাতে আসছেন তাঁদের অনেকেই বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে ওষুধ। এ দিন বাগরাকোট থেকে মীনা বাঁশফোড় গিয়েছিলেন পেটে ব্যাথা নিয়ে। তিনি জানান, যে ওষুধ দেওয়া হয়েছে তা বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। এ ছাড়াও অভিযোগ উঠেছে চিকিৎসার জন্য কার্ড করাতে গেলেও ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে অনেককেই। প্রয়োজনীয় ওষুধ নেই, বিভিন্ন ভাবে টাকা নেওয়া হচ্ছে রোগীদের থেকে এই পরিস্থিতি নিয়ে বিরোধী দল নেতা নুরুল ইসলাম বলেন, “মাতৃসদন যে পরিকল্পনা নিয়ে তৈরি করা হয়েছিল তা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এখানে ‘সিজার’ করতে গেলে টাকা লাগে। পাশাপাশি, অনেক ভাবেই টাকা নেওয়া হয় বলে শুনেছি।” এই বোর্ডের তাড়াতাড়ি বিদায় নেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি। জোটের বোর্ডে স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মৈত্রেয়ী চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘আমার সময়ে রোজই পাঁচ-ছয়জন রোগী ভর্তি থাকতেন। এখন কেন রোগী নেই তা বুঝতে পারছি না।” তবে সমস্ত অভিযোগ মানতে নারাজ বর্তমানে মাতৃসদনের দায়িত্বে থাকা মেয়র পারিষদ সঞ্জয় পাঠক। তিনি বলেন, “টাকা নেওয়ার কোন অভিযোগ আমার কাছে আসে নি। আমি নিয়মিত ওখানে যাই। প্রয়োজনীয় সমস্ত ওষুধ এখানে রয়েছে। আরও একজন আর এম ও নিয়োগ করার পরিকল্পনা করা রয়েছে।” পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, “গত বছরে মাতৃসদনের চিকিৎসারত এক মহিলার মৃত্যুর ঘটনার পর থেকে রোগীর সংখ্যা কমেছে। বিষয়টি দেখছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.