রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী, বাড়তি নজরদারি প্রচারে
প্রথম দফার পঞ্চায়েত ভোটের জন্য রবিবার ভোর থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনী আসা শুরু হয়েছে। প্রায় ১৩৫ কোম্পানি বাহিনী এ দিন এসেছে। আজ, সোমবার সকালে বাকি ১৫ কোম্পানিরও চলে আসার কথা। মাওবাদী উপদ্রুত এলাকায় শেষ মুহূর্তের প্রচারের নিরাপত্তার কাজেও এই বাহিনী কাজে লাগানো হবে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে আগামী বৃহস্পতিবার ১১ জুলাই জঙ্গলমহলের তিন জেলা, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ায় ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ভোটের প্রথম দফার ভোটগ্রহণ। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্রথম দফার ভোটে মোট ৫০০ কোম্পানি বা ৫০ হাজার সশস্ত্র বাহিনী প্রয়োজন। এর মধ্যে ১৫০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। বাকি ৩৫০ কোম্পানির মধ্যে ৬০ কোম্পানি দেবে কলকাতা পুলিশ। বাকিটা রাজ্য পুলিশ।
পঞ্চায়েত ভোটের জন্য বাহিনী আসা শুরু হল রাজ্যে। পশ্চিম মেদিনীপুরে ৫০ কোম্পানি বাহিনী
আসার কথা। রবিবার বিকেলে তারই একাংশ পৌঁছল খড়্গপুর স্টেশনে। — নিজস্ব চিত্র
রাজ্য পুলিশের এডিজি বাণীব্রত বসু বলেন, “রবিবার ভোর থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনী এ রাজ্যে ঢুকতে শুরু করেছে। ৯০% বাহিনী এ দিনই এসে গিয়েছে। যে সব বাহিনী সড়ক পথে আসছে, তারা সোমবার সকালের মধ্যেই এসে পড়বে। সোমবার বিকেলের মধ্যেই ওই সব বাহিনী মোতায়েনের কাজ শুরু হয়ে যাবে।” বাণীব্রতবাবু জানিয়েছেন, জঙ্গলমহলের যৌথ অভিযানের জন্য যে সব কেন্দ্রীয় বাহিনী রয়েছে, কোনও অবস্থাতেই তাদের ভোটের কাজে ব্যবহার করা হবে না। ভোটের জন্য আসা কেন্দ্রীয় বাহিনীকে শেষ বেলায় রাজনৈতিক দলগুলির প্রচারে নিরাপত্তার কাজে ব্যবহার করা হবে।
বেশ কিছু বাহিনী এ দিন সকালে হাওড়া, কলকাতা ও শিয়ালদহ স্টেশনে এসে পৌঁছয়। এর পরে সড়কপথে তারা জঙ্গলমহলের দিকে রওনা দিয়েছে। তবে বাণীব্রতবাবু জানিয়েছেন, বেশ কিছু কেন্দ্রীয় বাহিনীকে জঙ্গলমহলের কাছাকাছি রেলস্টেশনে নামিয়ে সেখান থেকে সরাসরি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, রাজ্য ও কলকাতা পুলিশের বাহিনীকেও ৯ তারিখের মধ্যে জঙ্গলমহলের তিন জেলায় পাঠিয়ে দেওয়া হবে। ১০ তারিখের মধ্যে বাহিনীকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে সংশ্লিষ্ট বুথে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। রাজ্য পুলিশ সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত অন্য রাজ্যের বাহিনী এসে পৌঁছয়নি। শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছে। এর মধ্যে সিআইএসএফ, সিআরপি, আরপিএসএফ এবং বিএসএফের জওয়ানরা রয়েছেন।
গত সপ্তাহেই পশ্চিমবঙ্গ-লাগোয়া ঝাড়খণ্ডে মাওবাদী হামলায় পাকুড় জেলার এসপি-সহ ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। ওই ঘটনার পরে জঙ্গলমহলের জেলাগুলিতেও পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে বাড়তি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এক পুলিশ-কর্তার কথায়, “মাওবাদী-অধ্যুষিত এলাকা হওয়ার কারণে প্রথম পর্যায়ের ভোটে সতর্কতা বেশি। শেষ বেলার প্রচারে কোনও অঘটন যাতে না ঘটে, সে জন্য বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় বাহিনীকেও প্রচারে নিরাপত্তায় ব্যবহার করা হবে।” ওই পুলিশ-কর্তা জানান, পশ্চিম মেদিনীপুরের লালগড়, গোয়ালতোড়, বিনপুর, শালবনি, ঝাড়গ্রাম, নয়াগ্রাম, গোপীবল্লভপুর, পুরুলিয়ার বলরামপুর, বাঘমুণ্ডি ও ঝালদা, বাঁকুড়ার সারেঙ্গা, বারিকুল, রানিবাঁধ, রাইপুরের মতো মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকগুলিতে বাড়তি সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
এ দিনই নির্বাচন কমিশন সূত্রে অভিযোগ করা হয়েছে, প্রচারের সময় নিরাপত্তা রক্ষায় কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশিত সংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনী পাওয়া যাচ্ছে না। প্রচারের সময় কমিশন ৩২ হাজার বাহিনী চেয়েছিল। কিন্তু রাজ্য দিচ্ছে মাত্র সাড়ে ছ’হাজারের মতো। প্রচারে নিরাপত্তায় বাহিনী কম পাওয়ার বিষয়টি কমিশনের তরফে কী আদালতে জানানো হবে? এই প্রশ্নে মন্তব্য করেনি কমিশনের সচিব।
কমিশন সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় বাহিনীর ব্যাপারটি দেখার দায়িত্বে আইজি বিএসএফ (পূর্বাঞ্চল) এ কে শর্মাকে। কমিশন জানায় ভোটের দিনগুলিতে আন্তর্জাতিক সীমান্ত সিল হবে। বন্ধ হবে আন্তঃরাজ্য, আন্তঃজেলা ও গ্রাম-শহরের সীমানাও। বর্ষার প্রস্তুতিতে আলিপুর আবহাওয়া দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। পাঁচ বছরের জুলাইয়ে আবহাওয়া রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।
এ দিন কমিশনের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন সিপিএম নেতা রবীন দেব। মূলত পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার সন্ত্রাস নিয়েই তিনি কথা বলেন কমিশনের সঙ্গে। এই তিনটি জেলায় নিরাপত্তা বাড়ানোর অনুরোধ করেন রবীনবাবু।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.