পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচারের সময় উপযুক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে ৩২ হাজার (৩২০ কোম্পানি) সশস্ত্র পুলিশ চেয়েছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। শনিবার কমিশনকে রাজ্য সরকার জানিয়ে দিল, তারা দিতে পারবে ৬৯০৯ জন! এর অর্থ, প্রচারের সময় রাজ্যের ৩২৯টি ব্লকের প্রতিটিতে ২১ জনের বেশি নিরাপত্তাকর্মী দেওয়া যাবে না।
রাজ্যে প্রথম দফার পঞ্চায়েত ভোটের (১১ জুলাই) প্রচার শেষ হচ্ছে ৯ জুলাই, মঙ্গলবার। তার তিন দিন আগে শনিবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনার মীরা পাণ্ডের সঙ্গে মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি-র বৈঠকে রাজ্যের তরফে সশস্ত্র পুলিশ প্রসঙ্গে এই কথা জানানো হয়। কমিশন অবশ্য এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। তবে সরকারের এক আধিকারিক বলেন, “রাজ্যের হাতে যে বাহিনী রয়েছে, তাকেই কাজে লাগিয়ে প্রচারের দিনগুলিতে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে কমিশনকে।” ঠিক হয়েছে, কোনও জেলায় ভোটের দিন পাশের যে সমস্ত জেলায় ভোট নেই, সেখান থেকে কিছু সশস্ত্র বাহিনী এনে আইনশৃঙ্খলা সামলানোর কাজে লাগানো হবে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য আজ, রবিবার ও সোমবার দু’দিন মিলিয়ে ১৩০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী রাজ্যে পৌঁছচ্ছে। সরকারের এক মুখপাত্র জানান, জঙ্গলমহলে যে ৪২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী রয়েছে, তার মধ্যে ২০ কোম্পানিকে ভোটের কাজে লাগানো হবে। সব মিলিয়ে প্রথম ও দ্বিতীয় দফার ভোটের মোট ১৫০ কোম্পানি করে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকছে। আদালতের নির্দেশে এই ব্যবস্থা। এ দিন মহাকরণে স্বরাষ্ট্র দফতরের এক কর্তা জানান, কেন্দ্রীয় বাহিনীর মধ্যে থাকছে বিএসএফ, সিআরপি, এসএসবি এবং সিআইএসএফ। তৃতীয় এবং চতুর্থ দফার ভোটে নিরাপত্তা এবং নজরদারির জন্য থাকবে ২৫০ কোম্পানি করে কেন্দ্রীয় বাহিনী। তা ছাড়াও ওই দুই দফার জন্য পঞ্জাব, মধ্যপ্রদেশ-সহ কয়েকটি রাজ্য থেকে ৬০ কোম্পানি সশস্ত্র পুলিশ আসবে। তবে রথযাত্রার জন্য ওড়িশা থেকে সশস্ত্র পুলিশ পাওয়া যাবে না।
ঝাড়খণ্ডের পাকুড়ে সাম্প্রতিক মাওবাদী হামলার পর লাগোয়া বীরভূমে আগাম কিছু কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে ওই কর্তা জানান। সেই বাহিনীর টহল শুরু হয়ে গিয়েছে। পুলিশ প্রশাসনও সতর্ক রয়েছে। ওই কর্তার কথায়, “পাকুড়ে হামলা হওয়ায় রাজ্য এবং জেলা প্রশাসন সব দিকেই নজর রাখছে। পাকুড়ের ঘটনার সঙ্গে এ রাজ্যের মাওবাদীদের যোগাযোগ রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।”
বৈঠকে রাজ্যকে ভোটপর্ব চলাকালীন সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে বলেছে কমিশন। আন্তঃ-জেলা সীমানা-আন্তর্জাতিক সীমান্ত এলাকায় ভোটের আগের দিন থেকে নজরদারি চালাতে বলা হয়েছে, যাতে বাইরের কেউ ঢুকতে না পারে। তার জন্য প্রয়োজনে সীমান্ত সিল করে দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। বিভিন্ন জায়গায় বাইক-বাহিনীর দাপট অভিযোগ নিয়েও বৈঠকে কথা হয়েছে। কমিশনের সচিব তাপস রায় জানান, বাইক-বাহিনীর দাপট সামলাতে প্রশাসনকে লিখিত নির্দেশ দেওয়া হবে। |