বাসকর্মীদের পুলিশি হেনস্থা করা, অকারণে মাঝরাত পর্যন্ত থানায় বসিয়ে রাখা, পুলিশের দুর্ব্যবহারের অভিযোগে তুলে শনিবার থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে নদিয়া থেকে বর্ধমান জেলাগামী প্রায় সব রুটের বেসরকারি বাস চলাচল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ। নাদনঘাট মোড়ের নির্দিষ্ট স্টপেজে দাঁড়িয়েই যাত্রী তুলছিল নবদ্বীপ-আসানসোল রুটের একটি এক্সপ্রেস বাস। সে সময়ে কালনার দিক থেকে আসা কাটোয়াগামী একটি ছোট গাড়ি বাসটিকে পিছন থেকে ধাক্কা মারে। তার পরেই তৎপর হয়ে ওঠে পূর্বস্থলী পুলিশ। বাসের চালক হাবিবুর সাকেরের অভিযোগ, “আমরা দু’টো গাড়ির লোকেরা যখন নিজেরা কথা বলে সব মিটমাট করে নিচ্ছি, তখন পুলিশ এসে থানায় বাস নিয়ে যেতে চায়। কেস হবে বলে। আমি নবদ্বীপ স্ট্যান্ডে খবর দিই। বাসটিকে পুলিশ পাহারায় হেমায়েতপুর মোড়ে নিয়ে আসা হয়। সেখানে সব যাত্রীকে নামিয়ে দেয় পুলিশ। অথচ বাসের মাথায় রাখা মালপত্র নামাতে দেয় না। ঘটনাস্থলে আসেন নদিয়া জেলা বাস পরিবহণ কর্মী ইউনিয়নের সদস্যেরা। সংগঠনের নবদ্বীপ শাখা সম্পাদক বিশ্বজিৎ সরকার বলেন, “পুলিশ প্রথমে আমাদের বলে একবার থানায় যেতে। সেখানে গিয়ে একটা জেনারেল ডায়েরি করে ছেড়ে দেওয়া হবে। কিন্তু পরে পুলিশ আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। ওই ছোট গাড়িটির বিরুদ্ধে মামলা করতে বলে চাপ দেওয়া হয়। রাত দেড়টার সময়ে বলা হয়, বাসটি থানায় থাকবে। মালিক এসে ছাড়িয়ে নিয়ে যাবেন। মাঝরাতে আমাদের ফেরারও কোনও বন্দোবস্ত করেনি ওরা। ” এরই প্রতিবাদে শনিবার সকাল থেকে নদিয়া থেকে বর্ধমান যাওয়ার বিভিন্ন রুটের একশোরও বেশি বাস চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ইউনিয়নের দাবি, নিঃশর্তে বাস ছাড়া না হলে আপাতত বাস ওই রুটে যাবে না। কালনা, কাটোয়া, আসানসোল, দুর্গাপুর, রানিগঞ্জ-সহ বাঁকুড়া, বীরভূম ও পুরুলিয়াগামী কোনও বাস চলাচল করছে না।”
পূর্বস্থলী থানার আইসি অবশ্য এ প্রসঙ্গে কোনও কথা বলতে চায়নি। কালনার এসডিপিও ইন্দ্রজিৎ সরকার বলেন, “এখানে একটি দুর্ঘটনা ঘটেছিল। বাসের ড্রাইভার একটি অভিযোগ করেছেন পুলিশ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছে। হয়তো সেই কারণেই বাসমালিক বা কর্মীরা বাস চালানো বন্ধ করে দিয়েছেন। বাসমালিককে এসে আইনানুগ ভাবে বাস নিয়ে যেতে হবে।” |