এক সপ্তাহ ধরে বিকল গ্রামের দু’টি ট্রান্সফর্মারই। বারবার তাগাদা দিয়েও বিদ্যুত্ দফতর তা মেরামতি করার ব্যাপারে তত্পর নয়। ফলে এই গরমে নাজেহাল অবস্থা সালারের খাঁড়েরা গ্রামের হাজার তিনেক বাসিন্দার।
গ্রামে একটি ১০০ কেভি ও বিপিএল পরিবারগুলিকে আলো দেওয়ার জন্য আরেকটি ১০ কেভি ট্রান্সফর্মার রয়েছে। এক সপ্তাহ ধরে দু’টি ট্রান্সফর্মারই খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বিদ্যুত্ দফতরের কর্তাদের কাছে বারবার হত্যে দিয়েও সমস্যার সুরাহা হয়নি।
স্থানীয় সালু গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য সিপিএমের ইসমাইল শেখ বলেন, “ট্রান্সফর্মার দু’টি মেরামতির আর্জি নিয়ে অনেক বার বিদ্যুত্ দফতরের কর্তাদের কাছে গিয়েছি।” পঞ্চায়েত ভোটের এই মরসুমে সব রাজনৈতিক নেতারাই এলাকার বিদ্যুত্ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে মরিয়া। তবুও দিন সাতেক ধরে অন্ধকারে থাকতে হওয়ায় ক্ষিপ্ত এলাকার লোকজন। নেতারাও জনগনের কাছে কী জবাবদিহি করবেন খুঁজে পাচ্ছেন না। শাসক দলের এক নেতা বলেন, “ভোটের আগে এত দিন লোকজন অন্ধকারে রয়েছেন। কোন মুখে মানুষের কাছে ভোট চাইব, বুঝতে পারছি না।”
গ্রামেরই বাসিন্দা রেখা মণ্ডল কংগ্রেসের টিকিটে জেলা পরিষদের প্রার্থী হয়েছেন। ভোটের প্রচারে বিভিন্ন গ্রামে ঘুরতে হচ্ছে তাঁকে। রেখাদেবী বলেন, “রোদ, গরমে দিনভর বিভিন্ন জায়গায় ভোটের প্রচার সেরে এসে বাড়িতে দেখছি বিদ্যুত্ নেই। শান্তিতে দু’দণ্ড বিশ্রাম নেওয়ার জো নেই।” তিনি জানান, নতুন ট্রান্সফর্মার দেওয়ার জন্য কথা বলতে দু’দিন সালারের বিদ্যুত্ দফতরের অফিসে গিয়েছি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। পরে স্টেশন ম্যানেজারকে সমস্যার কথা জানানোর জন্য বার কয়েক ফোনও করি। কিন্তু তিনি ফোন ধরেন না।
শুধু ভোটপ্রার্থীরাই নন, সমস্যায় পড়েছে পড়ুয়ারা। সন্ধ্যায় ঘরে বিদ্যুতের বাতি জ্বলছে না। ফলে প্রদীপের নিভু নিভু আলোতেই গরমে ঘেমে-নেয়ে একসা হয়ে পড়াশুনা করতে হচ্ছে তাদের। খাঁড়েরা এএনএইচএম হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র শুভেন্দু মণ্ডল, সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র আসাদুল শেখ বা ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী রোশেনারা খাতুনেরা বলেন, “বিদ্যুত্ না থাকায় স্কুলেও পাখা ঘোরে না। এই গরমের মধ্যে এক বেঞ্চে গাদাগাদি করে পাঁচ জনকে বসতে হয়। আবার বাড়ি ফিরেও শান্তি নেই।” এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য বিদ্যুত্ বন্টন দফতরের সালারের স্টেশন ম্যানেজার অলখমান প্রধানকে ফোন করা হলেও, তিনি ফোন ধরেননি। দফতরের কান্দি বিভাগের সহকারী ইঞ্জিনিয়ার নাসির শেখ বলেন, “ভোটের কথা মাথায় রেখে অতিরিক্ত ট্রান্সফর্মার মজুত করা হয়েছে। আশা করি দিন কয়েকের মধ্যে ওই এলাকায় নতুন ট্রান্সফর্মার বসানো হবে।” দফতরের আরেক কর্তা জানান, দু’টি ট্রান্সফর্মার এক সাথে বসাতে হবে। সেই জন্য একটু সময় লাগছে। তবে আশা করি দিন কয়েকের মধ্যে কিছু একটা সুরাহা হবে। |