ভোট ময়দানে কোলে-বাড়ির তিন জা |
অভিজিৎ চক্রবর্তী • দাসপুর |
তিন জা। হাঁড়ি আলাদা হলেও দু’জনে থাকেন একই বাড়িতে। আর এক জন থাকেন পাশেই। দাসপুরের কামালপুরের বুথটি মহিলা সংরক্ষিত হওয়ায় প্রধান তিনটি রাজনৈতিক দল প্রার্থী হিসাবে বেছে নিয়েছে কোলে পরিবারের এই তিন বধূকে। তাতে অবশ্য পারিবারিক সম্পর্কে চিড় ধরেনি। রাজনীতির ময়দানে প্রচারে নামলেও বাড়ি ফিরে এসে গপ্পো-গুজব চলছে আগের মতোই।
|
|
তিন জা তপতী কোলে, কৃষ্ণা কোলে ও মিতা কোলে।—নিজস্ব চিত্র। |
পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর-২ ব্লকের কামালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কামালপুরের বুথে বিদ্যুৎ কোলের স্ত্রী তপতীদেবী কংগ্রেসের প্রার্থী। বিদ্যুৎবাবুর নিজের ভাই প্রশান্তবাবু সিপিএম সমর্থক। তাঁর স্ত্রী কৃষ্ণাদেবী এ বার সিপিএম প্রার্থী। বিদ্যুৎবাবুর জেঠুর ছেলে অসিতবাবু আবার তৃণমূল সমর্থক। তাই তাঁর স্ত্রী মিতাদেবী তৃণমূলের হয়ে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু গ্রামে তো আরও অনেক পরিবার রয়েছে। কোলে পরিবারেরই তিন বধূকে তিন দল বাছল কেন? এলাকার কংগ্রেস নেতা অমল মুখোপাধ্যায় বলেন, “আগে থেকেই আমরা তপতীদেবীর নাম ঠিক করে রেখেছিলাম। পরে দেখি কংগ্রেস ও সিপিএমও ওই পরিবার থেকেই প্রার্থী বেছেছে।” সিপিএমের লোকাল কমিটির সম্পাদক দিলীপ মুখোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের স্থানীয় নেতা স্বপন আলুও দাবি করেছেন, তাঁরাই আগে প্রার্থী পছন্দ করেছেন। পরে অন্যরা। পুরোটাই নাকি সমাপতন।
তপতীদেবী ও কৃষ্ণাদেবী একই বাড়িতে থাকেন। মিতাদেবীর বাড়ি পাশেই। এই তিন কৃষক পরিবার তিনটি ভিন্ন দলের সমর্থক হলেও সক্রিয় ভাবে রাজনীতি করত না। এমনকী, তিন ভাইও কোনও দলের হয়ে মিটিং-মিছিল করেনি আগে। মহিলা সংরক্ষিত আসনে তিন বৌ তিনটি যুযুধান দলের প্রার্থী হওয়ার পরে অবশ্য জোরকদমে প্রচার চলছে। ভোটের ময়দানে নেমে কেউই মাটি ছাড়তে রাজি নন। সকালেই রান্নার কাজ সেরে দলের নেতাদের সঙ্গে যে যার মতো প্রচারে বেড়িয়ে পড়ছেন। এমনকী পাড়া বৈঠক থেকে দলের গোপন আলোচনাতেও স্বামীদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছেন। প্রত্যেকেই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। তবে পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে, বুথটিও তৃণমূলের। জায়েদের ভাবমূর্তিতে সেই সমীকরণে বদল হয় কি না, সেটাই দেখার। |
|