লেন্ডলের বরফশীতল মাথা এখন মারের কাঁধে
জোর তর্ক উঠতে পারে। বিশেষ করে হুজুগে ব্রিটিশ ট্যাবলয়েডে। কোনটা বেশি ঐতিহাসিক? কোনটা বেশি দুর্মূল্য মুহুর্ত? জকোভিচের ব্যাকহ্যান্ড রিটার্ন নেটে জড়িয়ে গিয়ে অ্যান্ডি মারেকে প্রথম ব্রিটিশ পুরুষ হিসেবে উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন করা! নাকি, সেন্টার কোর্টের অনন্ত চাপ সামলে মহাপ্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে মারে দু’সেট এগিয়ে যেতে ইভান লেন্ডলের প্লেয়ার্স বক্সে চেয়ার ছেড়ে লাফিয়ে ওঠা!
লেন্ডলের মতো অনাবেগী টেনিসের ইতিহাসে আর দ্বিতীয় আসেনি। আসবে বলেও মনে হয় না। বিশ্বের প্রাক্তন এক নম্বর বেশি গোমড়ামুখো? না, বেশি ফিটনেস ম্যানিয়াক এই নিয়ে লেন্ডল অবসর নেওয়ার দু’দশক পরেও টেনিসমহলে চর্চা অব্যাহত। সেই লেন্ডল গত বছর মারের কোচ হওয়া ইস্তক ছাত্রের মধ্যে যেমন নিজের শশার মতো ঠান্ডা মানসিকতা তৈরি করে দিয়েছেন। তেমনই উইম্বলডনের ঐতিহাসিক ‘সেকেন্ড সানডে’-তে স্পষ্ট, লেন্ডলের মধ্যেও তাঁর ইতিহাস তৈরি করা ছাত্র একটু হলেও আবেগ এনেছেন!

আশির দশকের মাঝামাঝি দু’বার উইম্বলডন ফাইনালে উঠে দু’বারই রানার আপের ট্রফি নেওয়ার জ্বালায় লেন্ডলের সেই ঐতিহাসিক উক্তি, “ঘাস গরুর খাদ্য!’ অথচ, অনাবেগী চেক টেনিস সুপারস্টারকে কোর্ট ছাড়ার সময় তাঁর ম্যাচের স্কোরলাইন না জানা কারও বোঝার সাধ্য ছিল না, লেন্ডল ৬-০, ৬-০ জিতলেন, না হেরেছেন! এমনই বরফশীতল তাঁর মুখ। শরীরীভাষা। মারের মধ্যেও সেই মানসিকতা এনেছেন কোচ লেন্ডল। আর নিজের বিখ্যাত ‘ফিটনেস রেজিম’ ছাত্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকিয়ে দিয়েছেন। মারের সার্পোট স্টাফ সম্পূর্ণ ভাবে লেন্ডলের নির্বাচিত। মারের এখনকার ‘ওয়ার্ক এথিক্স’ আদ্যন্ত লেন্ডল-পরিকল্পিত। নিজে বাকি সব গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতলেও উইম্বলডনে দু’বার ট্রফির কাছে এসে না পাওয়ার জন্য ভাল জানেন, হতাশার জ্বালা কতটা!
জয়দীপ মুখোপাধ্যায় থেকে শুরু করে আখতার আলি। জিশান আলি থেকে রিকো পিপার্নো। শহরের টেনিসমহল প্রায় একমত অ্যান্ডি মারের ইতিহাস রচনার পিছনে লেন্ডল বিরাট ফ্যাক্টর। মিলিত মন্তব্য, “মারের ‘টেনিস মাদার’ও ওর মা জুডি-ই। কিন্তু ওর ‘টেনিস ফাদার’ যদি কাউকে বলতে হয়, তা হলে লেন্ডল। মারে আগে কোর্টে অগোছাল মানসিকতার প্লেয়ার ছিল। যখন-তখন সেন্টিমেন্টাল হয়ে পড়ত। বহু ক্লোজ ম্যাচ তাতে হেরেছে। লেন্ডল এসে ওর ফিটনেস সর্বোচ্চ পর্যায়ে তুলে দিয়েছে। ঈশ্বরপ্রদত্ত ব্যাকহ্যান্ডের পাশাপাশি ওর ফোরহ্যান্ডকে বিশ্বমানের করে তুলেছে, এ সব ঠিক। কিন্তু আসল পরিবর্তন এনেছে মারের মানসিকতায়। শান্ত তো কম বলা হবে, একটা নির্লিপ্ত মনোভাব তৈরি করে দিয়েছে। যে জন্য এ দিন এমন কীর্তির পরেও মারেকে কোর্টে সে রকম প্রত্যাশিত সেলিব্রেশন করতে দেখা যায়নি।”
মারে কাহিনি
লেন্ডল আসার আগে
• ২০০৫ সিনিয়রে পা। শুরু করেছিলেন র‌্যাঙ্কিংয়ে ৪০৭ নম্বরে।
• তাইল্যান্ড ওপেনে প্রথম এটিপি ফাইনালে উঠলেও হার ফেডেরারের কাছে।
• ২০০৬ রজার্স কাপের সেমিফাইনালে হার গাস্কের কাছে।
• সিনসিনাটিতে রজার ফেডেরারকে হারিয়ে তাঁর ৫৫ ম্যাচের জয়ের ধারা শেষ করেন মারে।
• ২০০৯ সালে ফাইনালে জন ব্লেক- কে হারিয়ে কুইন্স টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন মারে।
• ২০১০ অস্ট্রেলিয়ান ওপেন ফাইনালে হার ফেডেরারের কাছে।
গ্র্যান্ড স্ল্যাম: ৭৩ ম্যাচে ৪৯ জয়
লেন্ডল আসার পরে
(৩১ ডিসেম্বর, ২০১১ থেকে দায়িত্বে)
• অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের সেমিফাইনালে পৌছলেও জকোভিচের কাছে হার।
• উইম্বলডন ফাইনালে রজার ফেডেরারের কাছে হার।
• অলিম্পিকে ফাইনালে ফেডেরারকে হারিয়ে সোনা।
• যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে জকোভিচকে হারিয়ে প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়।
• ২০১৩ অস্ট্রেলিয়ান ওপেন ফাইনালে ফের হার জকোভিচের কাছে।
• ২০১৩ উইম্বলডনে জকোভিচকে হারিয়েই দ্বিতীয় গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়।
গ্র্যান্ড স্ল্যাম: ৩৫ ম্যাচে ৩১ জয়




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.