|
|
|
|
শেষ রবিবার জমাটি প্রচার, আজ লালগড়ে সভা মমতার |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
ভোটের আগে শেষ রবিবার শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের উপস্থিতিতে জমজমাট প্রচার চলল পশ্চিম মেদিনীপুরে। রোড শো-পদযাত্রা-জনসভা-কর্মিসভা, বাদ ছিল না কিছুই। আলাদা আলাদা জায়গায় কর্মসূচি ছিল পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্র, সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর। তবে সকলেরই বক্তব্যের মূল সুর ছিল একটাই। গত বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে পরিবর্তন এসেছে। তবে জেলার ত্রি-স্তর পঞ্চায়েত জয় এখনও বাকি। তাই আসন্ন নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থীদের জিতিয়ে পরিবর্তনের বৃত্ত সম্পূর্ণ করার ডাক দেন নেতা-মন্ত্রীরা।
গড়বেতায় সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, “ষোলো আনা পরিবর্তন হয়নি। পঞ্চায়েত নির্বাচনে আপনাদের আশীবার্দ পেলে পরিবর্তন পরিপূর্ণ হবে। রাজ্য এবং পঞ্চায়েতে একটা দল ক্ষমতায় থাকলে উন্নয়নের গতি তরান্বিত হয়।” পিংলার প্রচারে শুভেন্দুরও আবেদন, “পঞ্চায়েতে এমন দলকে জেতান, যে দল সরকারে আছে। তাহলে উন্নয়নে গতি আসবে। যদি এখান থেকে অন্তরা (বিদায়ী সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্য) জেতেন, তাহলে কী ডিএম পরিবর্তন হবে? সরকার পরিবর্তন হবে? হবে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবেন। মানুষ চাইলে আরও অনেক বছর থাকবেন।” |
|
পিংলার সভায় শুভেন্দু অধিকারী। —নিজস্ব চিত্র। |
শেষবেলার প্রচারে সামিল হচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। রবিবার রাতেই মেদিনীপুর পৌঁছেছেন তিনি। আজ, সোমবার নির্বাচনী সভা করবেন লালগড় ও ডেবরায়। মুখ্যমন্ত্রীর সভার সমর্থনে এ দিন জঙ্গলমহলে বিভিন্ন কর্মসূচি হয়েছে। ছিলেন দলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়। তাঁর কথায়, “মানুষ যা চেয়েছেন, এই দু’বছরে তার থেকেও বেশি পেয়েছেন। জঙ্গলমহলে শান্তি ফিরেছে। উন্নয়ন শুরু হয়েছে।”
পিছিয়ে নেই বিরোধীরাও। রবিবার সিপিএম-সহ সব বিরোধী দলই সভা-মিছিল করেছে। হয়েছে একগুচ্ছ কর্মিসভা। এ দিন বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ গোপীবল্লভপুর- ১ ব্লকের বাবুডুমরো এবং ঝাড়গ্রামের শিরষিতে সভা করেন তিনি। সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ শিরষির সভায় রাহুলবাবু বক্তব্য রাখতে শুরু করার পরই খবর আসে, এলাকায় দু’টি রেসিডেনশিয়াল হাতি ঢুকে পড়েছে। তড়িঘড়ি সভা শেষ করতে হয়। গোপীবল্লভপুরের মতো এলাকায় বিজেপি- সিপিএম আসন সমঝোতা নিয়ে তৃণমূলের দাবি খারিজ করে রাহুলবাবু বলেন, “এ সব তৃণমূলের অপপ্রচার।”
ভরা বর্ষায়, রমজান মাসে ভোট নিয়ে এ দিন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করেন। বিরোধীদের সঙ্গে কমিশনের আঁতাতের অভিযোগও তোলা হয়। গড়বেতার উত্তরবিল, রাধানগর, মাইতায় দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচারে আসা পঞ্চায়েতমন্ত্রী বলেন, “সিপিএম-কংগ্রেস চেয়েছিল নির্বাচন যেন না- হয়। কারণ, ওরা তৈরি হতে পারেনি।” গোঁজ প্রার্থীদের ভোট না দেওয়ার আবেদন জানান সুব্রতবাবু। দাঁতন ২ ব্লকে রোড শো করার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার মীরা পাণ্ডের নাম করে আক্রমণ করেন ক্রীড়ামন্ত্রী। পিংলা, সবং, কেশিয়াড়িতে প্রচার কর্মসূচি ছিল তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দুর। বিকেলে প্রথম সভা করেন পিংলার জামনায়। এটি বিদায়ী সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্যের নির্বাচনী এলাকা। অন্তরাদেবীর প্রধান প্রতিপক্ষ তৃণমূলের অজিত মাইতি। সভায় শুভেন্দু বলেন, “সিপিএমকে অক্সিজেন দেবেন না। ওদের কোনও পরিবর্তন হয়নি। পরিবর্তন হলে জেল থেকে বেরোনোর সময় সুশান্ত ঘোষকে ফুল দিয়ে বরণ করত না।” গত বিধানসভা নির্বাচনে অজিতবাবু বামপ্রার্থীর কাজে হেরে যান। যুব তৃণমূলের রাজ্য সভাপতির মতে, “আমাদের ঘরশত্রুরা (পড়ুয় কংগ্রেস, তখন জোট ছিল) যদি সাহায্য করতেন, তাহলে অজিতদা জিততেন। পিংলার উন্নয়ন তড়িৎ গতিতে হতে পারত।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে উন্নয়নের জন্যই জঙ্গলমহলে শান্তি ফিরেছে বলেও এ দিন দাবি করেন শুভেন্দু। |
|
|
|
|
|