ওই ভুল আর হবে না, বার্তা বুদ্ধের
ভুল স্বীকার করেই ছেড়ে-যাওয়া মানুষকে নিজেদের দিকে ফেরানোর চেষ্টা করতে হবে। হাওড়া লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের সময় যা বলেছিলেন, জেলায় পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে এসেও একই দাওয়াই দিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।
হাওড়ার বাগনানে হিজলক ময়দানে রবিবার আত্মসমালোচনার সুরেই সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য বুদ্ধবাবু বলেছেন, “গত বিধানসভায় হেরে যাওয়ার পরে ফল বিশ্লেষণ করে আমরা বুঝেছিলাম, কিছু মানুষ ভুল বুঝে আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছেন। অনেকে দুঃখ পেয়ে সরে গিয়েছেন। তাঁদের প্রতি মাথা নিচু করে বলছি, আর ওই ভুল আমরা করব না। আপনারা ফিরে আসুন।” দলের কর্মীদের প্রতি বুদ্ধবাবুর বার্তা, “আর ভুল করবেন না। দাদাগিরি করবেন না! মানুষের কাছে গিয়ে বলুন, আমরা ভুল শুধরেছি। পঞ্চায়েত ভোটে একটা সুযোগ এসেছে। কী সরকার চলছে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষকে বোঝান।”
উলুবেড়িয়ার বাম আমলের দু’টি কারখানা তৈরির প্রকল্পের কথা উল্লেখ করেই তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকারের কড়া সমালোচনা করেছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, কৃষি বা শিল্প, কোনও দিকেই নজর নেই এই সরকারের। কৃষকেরা ধান বিক্রি করতে না-পেরে আত্মঘাতী হচ্ছেন। নতুন শিল্পও আসছে না। উলুবেড়িয়ায় তাঁরা দুটি কারখানা আনতে চাওয়ার পরে আর কিছুই হয়নি। শালবনিতে কারখানার পাঁচিল হওয়ার পরেও মালিকেরা বেঁকে বসেছেন। বুদ্ধবাবুর কথায়, “তোলাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে অনেকেই ফিরে যাচ্ছেন। পশ্চিমবঙ্গ এখন অভিশপ্ত রাজ্য! বাইরের রাজ্যের মানুষ, দিল্লির লোক এ রাজ্যের কথা শুনলে এখন হাসে! এটা পাগলদের রাজ্য বলে!”
বাগনানে বুদ্ধদেব। —নিজস্ব চিত্র
পঞ্চায়েতের প্রচারে বুদ্ধবাবুর মুখে উঠে এসেছে সারদা-কাণ্ডের কথাও। বলেছেন, “আর এক কেলেঙ্কারি সারদা! এতে যারা বিনিয়োগ করেছিলেন, তাঁরা কী ভাবে টাকা ফেরত পাবে কেউ জানে না। এমনকী, সরকারও জানে না!” আইনশৃঙ্খলার অবনতি নিয়ে রাজ্য সরকারের প্রতি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর তোপ, “আমাদের রাজ্যে মা-বোনেরা সত্যিই ভয় পাচ্ছেন। আমাদের আমলে অন্যায় হয়নি, বলব না। কিন্তু সব ক’টি ক্ষেত্রেই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, দোষীরা শাস্তি পেয়েছে। বারাসত নিয়ে যা কথাবার্তা হচ্ছে, মহাকরণে মন্ত্রীরা যা বলছেন, তাতে গুন্ডারা ভাবছে আমাদেরই তো সরকার চলছে! এটা চলতে পারে না!” সময়ে ভোট না-হওয়ায় রাজ্যের অধিকাংশ পঞ্চায়েতেরই মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। পঞ্চায়েত না-থাকলে দিল্লি টাকা পাঠাবে না আর এখন যে টাকা পঞ্চায়েতের জন্য আছে, তা ‘লুটেপুটে’ খাওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন বুদ্ধবাবু। তাঁর বক্তব্য, “তৃণমূল চায় পঞ্চায়েত উঠে যাক। এক জনই মহাকরণে বসে সরকার চালাবে। সে রাখলে রাখবে, মারলে মারবে! পঞ্চায়েত ওরা তৈরি করেনি। পঞ্চায়েত চালায়নি। পঞ্চায়েতের প্রতি ওদের দরদ
নেই।” তাঁর বক্তৃতায় এসেছিল দুর্নীতি এবং সন্ত্রাসের প্রসঙ্গও। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “২০০৮ সালে বেশ কিছু পঞ্চায়েত তৃণমূল পেয়েছিল। সেই সব পঞ্চায়েতে উন্নয়নের বদলে দুর্নীতি হয়েছে। একশো দিনের প্রকল্পের টাকা দিয়ে সুপারভাইজার নিয়োগের নাম করে দুর্নীতি হয়েছে। সেই টাকায় বাইক বাহিনী তৈরি হয়েছে। তারা সন্ত্রাস করে বেড়াচ্ছে। নির্বাচন কমিশনকে তাই বলেছি, শুধু নির্বাচন করলেই হবে না, সন্ত্রাস বন্ধ করতে হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.