|
|
|
|
নয়া জোটে শিবু, লালু, নীতীশকে চান রাহুল
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
হেমন্ত সোরেনকে ঝাড়খণ্ড তথা দেশের মধ্যে কনিষ্ঠতম মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ ছেড়ে দিয়েছে কংগ্রেস। কিন্তু, তার বদলে পূর্বাঞ্চলে বৃহত্তর জোট সমীকরণ গড়ার খেলায় নেমে পড়েছেন রাহুল গাঁধী। লোকসভা ভোটের আগে ওই জোটে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) নেতা শিবু সোরেনের পাশাপাশি নীতীশ কুমার ও লালুপ্রসাদ যাদবকেও সামিল করতে চাইছেন তিনি। যাতে আগামী ভোটে ঝাড়খণ্ড ও বিহারে কংগ্রেসের আসন বাড়ানোর ধস নামানো যায় বিজেপি দূর্গে। জেএমএমের সঙ্গে জোট গড়ে পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও ওড়িশায় আদিবাসী ভোট টানারও চেষ্টায়
রয়েছেন রাহুল।
আগামী দু’-তিন দিনের মধ্যেই ঝাড়খণ্ডের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শিবুপুত্র হেমন্তের শপথ নেওয়ার কথা। এর আগে কনিষ্ঠতম মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে গত বছর লখনউ-র তখতে বসেছিলেন অখিলেশ যাদব। তাঁর বয়স তখন ছিল প্রায় ৩৯। আর হেমন্তের ৩৮ পূর্ণ হবে আগামী মাসে। শিবুপুত্রের অভিষেকের পাশাপাশি আরও ১১ জন নতুন সরকারে মন্ত্রী হতে পারেন। এর মধ্যে চার জন জেএমএমের। পাঁচ জন কংগ্রেসের। এছাড়াও লালুপ্রসাদের আরজেডি এবং নির্দলদের মধ্যে থেকে এক জন করে মন্ত্রী হওয়ার কথা।
তার আগে কংগ্রেসের এক শীর্ষস্থানীয় নেতা আজ জানিয়েছেন, ঝাড়খণ্ডে জেএমএমের নেতৃত্বাধীন সরকারের ইতিহাস কিছুটা চিন্তায় রেখেছে কংগ্রেসকে। কারণ, লোকসভা ভোটের আগে কোনও কুকীর্তি হলে হিতে বিপরীত হতে পারে। তবে তুলনায় রাহুল অনেক বেশি উৎসাহী লোকসভার সম্ভাব্য সমীকরণ নিয়ে। ঝাড়খণ্ডে সরকার গঠনে সায় দেওয়ার ক্ষেত্রে সেটাই ছিল অন্যতম কারণ। এ ব্যাপারে জেএমএমের সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছে তাতে ঝাড়খণ্ডের ১৪টি লোকসভা আসনের মধ্যে ১০টিতে লড়বে কংগ্রেস। চারটিতে লড়বে জেএমএম। আবার যে দশটি আসন কংগ্রেস ভাগে পাবে, তার মধ্যে থেকে তারা কৌশলে একটি করে আসন ছেড়ে দিতে পারে লালু প্রসাদের আরজেডি এবং নীতীশ কুমারের সংযুক্ত জনতাকে।
কংগ্রেস নেতৃত্বের মতে, লালু-নীতীশকে একই সঙ্গে পাশে পাওয়া সহজ বিষয় নয়। কিন্তু সাম্প্রদায়িক শক্তিকে ঠেকানোর প্রশ্নে সেটাই করে দেখাতে চাইছেন রাহুল। নরেন্দ্র মোদীকে বিজেপি কার্যত প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করার পরে এই বিষয়ে আরও উৎসাহ পেয়েছেন তিনি। এই আঞ্চলিক দুই শক্তিকে পাশে পেলে ঝাড়খণ্ড ও বিহার দুই রাজ্যেই মজবুত জোট তৈরি হতে পারে। ইউপিএ এ ভাবে শক্তিশালী হয়ে উঠলে দুই রাজ্যে বিজেপি-র বিপর্যয়ের পূর্ণ সম্ভাবনা রয়েছে। বিহার ও ঝাড়খণ্ড মিলিয়ে লোকসভায় এখন বিজেপি-র ১৯ টি আসন রয়েছে।
কংগ্রেস সূত্রে আরও বলা হচ্ছে, শিবু সোরেনের সঙ্গে তাঁদের যে সমঝোতা হয়েছে, তা কেবল ঝাড়খণ্ডেই সীমাবদ্ধ থাকবে না।
হেমন্ত সোরেনকে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ দিয়ে প্রতিবেশী রাজ্য বিহার, পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশায় আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় জেএমএম-র সমর্থনের আশ্বাস আদায় করে নিয়েছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।
কংগ্রেস সূত্রে খবর, বিহারে বিজেপি-নীতীশ কুমার ভাঙনের পরই সক্রিয় হয়ে ওঠেন রাহুল। ঝাড়খণ্ডে জেএমএম-এর নেতৃত্বে সরকার গঠনে সায় দেওয়ার পাশাপাশি বিহারে নীতীশ কুমারকেও বার্তা দিতে গতকাল বিপুল অঙ্কের অর্থ সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। আবার কংগ্রেস-নীতীশের এই সখ্য নিয়ে লালুপ্রসাদের নীরবতাও তাৎপর্যপূর্ণ।
যদিও রাজনৈতিক একটি সূত্রে বলা হচ্ছে, বিজেপি-ও একেবারে হাত গুটিয়ে বসে নেই। ঝাড়খণ্ডে সরকার গঠনের আগে জেএমএমে ভাঙন ধরানোর চেষ্টাও চলছে।
তবে কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, “ঝাড়খণ্ডে জেএমএম বিধায়করা সরকার হওয়ার জন্য হাপিত্যেশ করে বসে রয়েছেন। তাঁরা কেউ দল ছেড়ে যাবেন বলে মনে হয় না।” বরং আশা করা হচ্ছে, রাঁচিতে জেএমএম-কংগ্রেস সরকার গঠনের মধ্যে দিয়ে নতুন জোট সমীকরণ দেখা যাবে পূর্বাঞ্চলে। |
|
|
|
|
|