কারখানার টাকা লুঠে ধৃত দুর্গাপুরের এক গাড়িচালকের অস্বাভাবিক মৃত্যু হল পুলিশ হেফাজতে। রবিবার সকালে ঝাড়খণ্ডে ধানবাদ টাউন থানার শৌচাগারে বাদলচন্দ্র দে (৫০) নামে ওই ধৃতের ঝুলন্ত দেহে মেলে।
পুলিশের দাবি, মানসিক অবসাদে গলায় জামার হাতার ফাঁস লাগিয়ে ওই প্রৌঢ় আত্মঘাতী হয়েছেন বলে অনুমান।
|
বাদলচন্দ্র দে।
ছবি: বিশ্বনাথ মশান |
ধানবাদের পুলিশ সুপার অনুপ পি ম্যাথিউ বলেন, “ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্ত হচ্ছে। মানবাধিকার কমিশনকেও
জানানো হয়েছে।”
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বাদলবাবু একটি বেসরকারি ইস্পাত কারখানার গাড়ি চালাতেন। গত বুধবার ঝাড়খণ্ডে কারখানার ঝুমড়ি-তালাইয়া ইউনিট থেকে দুর্গাপুরের ইউনিটে সাড়ে ২৬ লক্ষ টাকা নিয়ে যাচ্ছিলেন সংস্থার ক্যাশিয়ার অসীম বরাট। গাড়ি চালাচ্ছিলেন বাদলবাবু। অসীমবাবু পুলিশে অভিযোগ করেন, বিকেল ৩টে নাগাদ ঝাড়খণ্ডের মোকমার কাছে একটি লালবাতি লাগানো গাড়ি তাঁদের গাড়ির সামনে এসে দাঁড়ায়। অস্ত্র দেখিয়ে বাদলবাবুকে সরিয়ে চালকের আসনে বসে এক দুষ্কৃতী। গাড়িতে উঠে পড়ে আরও কয়েক জন। কয়েক কিলোমিটার দূরে নিয়ে গিয়ে অসীমবাবুর কাছ থেকে টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে পালায় ওই দুষ্কৃতীরা। |
অসীমবাবু মাইথন ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ অসীমবাবু ও বাদলবাবুর মোবাইল ফোন পরীক্ষা করে। পুলিশের দাবি, বাদলবাবুর ফোন ঘেঁটে দেখা যায়, তাঁর সঙ্গে দুষ্কৃতীদের একাধিক বার যোগাযোগ হয়েছিল। শুক্রবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
দুর্গাপুরের অশোক অ্যাভনিউয়ে বাড়ি বাদলবাবুর। তাঁর স্ত্রী পূর্ণিমাদেবী বলেন, “বৃহস্পতিবার রাতে কারখানা থেকে উনি বাড়ি ফিরেছিলেন। কারখানার একটি ডাকাতির ঘটনায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে হা-হুতাশ করছিলেন। শুক্রবার সকালে কারখানা থেকে ফোন করে ডাকলে বেরিয়ে যান। রাতে আর ফেরেননি। শনিবার ফোনে জানান, ধানবাদ থানায় রয়েছেন। রাতে বাড়ি ফেরার কথা বললেও ফেরেননি।” বাদলবাবুর জামাই সন্দীপ রম জানান, এ দিন সকালে কারখানার এক আধিকারিক ফোন করে বাড়ির লোককে ধানবাদ থানায় যেতে বলেন। তখন আর কিছু জানাননি। দুপুরে সেই আধিকারিকই জানান, বাদলবাবু আত্মঘাতী হয়েছেন। ধানবাদের পুলিশ সুপারের দাবি, “জেরার মুখে ভেঙে পড়েছিলেন বাদলবাবু। দুষ্কৃতীদের সঙ্গে যোগসাজস ধরা পড়ে যাওয়ায় মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। সে কারণেই আত্মঘাতী হয়েছেন বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে।” ময়না-তদন্তের পরে এ দিন সন্ধ্যায় দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। |