বেশি দূর নয়, ঘর থেকে ঠিক দুই পা বাড়িয়েই দুর্লভের ছড়াছড়ি। বাঙালির ঘরের কাছে আরশিনগরের ছবিটাও মেলে ধরছে ট্র্যাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম ফেয়ার (টিটিএফ)।
দেশের অন্যতম প্রধান পর্যটন উৎসবের কলকাতা-সংস্করণে বছর দুয়েক ধরেই প্রধান ভূমিকায় প্রতিবেশী বাংলাদেশ। রবিবার সন্ধ্যায় নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের মেলা-চত্বর যেন পর্যটনের প্রসারে দুই বাংলার মধ্যে জোট গড়ার মঞ্চই হয়ে উঠল। আয়োজকদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে বাংলাদেশের ট্যুরিজম বোর্ডের কমার্শিয়াল অফিসার মহম্মদ ফারুখ একসঙ্গে দুই বাংলায় পর্যটক বাড়ানোই তাঁদের লক্ষ্য বলে ঘোষণা করলেন। যেমন ধরা যাক, কেউ কলকাতা-দার্জিলিং বেড়াতে এসে ঢাকা-চট্টগ্রামও ঘুরতে চাইলেন! দুই বাংলার পর্যটন-সংস্থাগুলোর মধ্যে ভাল বোঝাপড়া থাকলে এমন বেশ কিছু সফরের পরিকল্পনা করা যেতেই পারে।
বাঙালির বেড়ানোর চেনা ঠিকানাগুলো তো হাতের কাছেই। কিন্তু কলকাতাকে কেন্দ্র করেই দেশে-বিদেশে আরও অনেক অচিন ভুবন এখন পর্যটকের অপেক্ষায়। টিটিএফ-প্রাঙ্গণ এ দিন ভ্রমণ-রসিকদের তা-ও মনে করিয়ে দিল। যেমন, কলকাতা থেকে সরাসরিই বিমানে চিনের কুনমিং যাওয়া যায়। চিনের পর্যটন অফিসের প্রতিনিধিরা হাজির কলকাতাকে কুনমিংয়ের কাছে বিখ্যাত পর্যটন-স্থল লিজিয়াংয়ের মহিমা তুলে ধরতে। ইউনেস্কো স্বীকৃত ঐতিহ্যনগরী লিজিয়াং চিনের ৮০০ বছর আগের নগর-সভ্যতার স্মারকে ভরপুর। কাছেই লায়ন হিল বা কাঠের ড্রাগন প্রাসাদ ওয়াঙ্গু প্যাভিলিয়ন।
কলকাতার সঙ্গে নৈকট্যের ফায়দা তুলতে তৎপর হয়েছে ম্যাকাও প্রশাসনও। দমদম থেকে সরাসরি উড়ানে হংকং পৌঁছে ঘণ্টাখানেকের ফেরি-বিহারেই ম্যাকাও পৌঁছানো সম্ভব। স্বল্প পরিসরে পরিকাঠামোর উন্নতি ঘটিয়ে তারা এ দেশের পর্যটককে কর্পোরেট বৈঠক বা সাংগঠনিক অনুষ্ঠান আয়োজনের সুযোগ দিতেও ডাক দিচ্ছে। ইউরোপে বাঙালির চেনা গন্তব্যগুলোর বাইরে তুরস্কের জন্যও টিটিএফ-এর কলকাতা-সংস্করণ এ বার গুরুত্বপূর্ণ। আলাদা করে এ দেশের বাজার ধরতে ‘চলো তুর্কি’ ডাক দিয়ে নিজেদের ওয়েবসাইট (www.turkeychalo.in) ঢেলে সেজেছে লেখক ওরহান পামুকের দেশ। ওয়েবসাইট সাজানোর পরে এ দেশ কলকাতাতেই সবার আগে পর্যটন-মেলায় অংশ নিল।
মধ্যবিত্তের জন্যও কিছু নতুন জায়গার হাল-হদিসও দিল টিটিএফ। অনেক বছর বাদে বাঙালির সাধের ‘পশ্চিম’, ঝাড়খণ্ড নিজেদের কথা তুলে ধরছে। সিংভূমের ঘাটশিলা বা রাঁচির কাছে নেতারহাট, হুড্রু, জোনহা প্রপাতের বাইরে কিছু নতুন পর্যটনস্থলকে প্রথম বাঙালির কাছে তুলে ধরেছে আপাতত রাষ্ট্রপতি শাসনে থাকা প্রতিবেশী রাজ্যটি।
আজ মেলার শেষ দিন। |