পঞ্চায়েত ভোট পিছোনোর দায় কার, তা নিয়ে রাজ্যের শাসক ও বিরোধীদের পরস্পরের সমালোচনা অব্যাহত উত্তরবঙ্গেও। শুক্রবার ভোটের প্রচারে গিয়ে উত্তরবঙ্গের দুই প্রান্তে রাজ্যের যুযুধান দুই শিবিরের প্রথম সারির নেতারা ‘অসময়’-এ ভোটের দায় একে অন্যের উপরে চাপিয়ে দিয়েছেন। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মুকুল রায় মালদহের হবিবপুর সহ একাধিক সভায় ফের আক্রমণ করেছেন রাজ্যের নির্বাচন কমিশনার মীরা পান্ডেকে। ডুয়ার্সে একাধিক সভায় রাজ্যে বিধানসভার বিরোধী দল নেতা সূর্যকান্ত মিশ্র অবশ্য ভোট পিছোনোর দায় পুরোপুরি তৃণমূলের উপরে বর্তায় বলে দাবি করেছেন। |
একদিকে মুকুলবাবুর দাবি, তুষ্ট করতে ‘অসময়ে’ পঞ্চায়েত ভোট করাচ্ছেন। তৃণমূলের সবর্ভারতীয় নেতার অভিযোগ, তিন বছরের জায়গায় ছয় বছরের মেয়াদের সুযোগ পাওয়ার লসুবাদে সিপিএমকে সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রশ্নেও কমিশনের সমালোচনা করেছেন তিনি। তাঁর প্রশ্ন , “রাজ্যে যদি সন্ত্রাসই চলছে তবে তৃণমূল কংগ্রেস ৬০ হাজার , সিপিএম ৫৫ হাজার, কংগ্রেস ৩০ হাজার ও বিজেপি ২২ হাজার মোট ১ লক্ষ ৬৭ হাজার প্রার্থী পঞ্চায়েত নিবার্চন প্রক্রিয়ার সঙ্গে কিভাবে যুক্ত হল?”
এর পরেই তিনি কমিশনকে কটাক্ষ করে জানান, প্রয়োজনে সামরিক বাহিনী দিয়ে ভোট করানো হোক। তাঁর দাবি, “যে ভাবেই ভোট হোক, ফল প্রকাশের পরে বিরোধীদের দূরবীণ দিয়ে খুঁজতে হবে।” আগামী লোকসভা নিবার্চনের প্রসঙ্গে টেনে এনে একাধিক দাবি করেছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতা। তিনি দাবি করেন, আগামী লোকসভা ভোটের পরে ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী কে হবে, রেলমন্ত্রী কে হবে, অর্থমন্ত্রী কে হবে তা ঠিক করবে তৃণমূল কংগ্রেস। কেন্দ্রীয় সরকার গঠনে নির্ণায়ক শক্তি হবে মমতা বন্দোপাধ্যায়।” পাশাপাশি, মুকুলবাবু ঘোষণা করেন, রাজ্যকে বঞ্চনার প্রতিবাদে পঞ্চায়েত নিবার্চনের পরে দিল্লিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ধর্ণা দেওয়া হবে। |
এদিন বিকালে আলিপুরদুয়ার ১ নম্বর ব্লকের পলাশবাড়ি গ্রামে বামফ্রন্টের সভায় যোগ দেন সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য সূর্যকান্তবাবু। তিনি বলেন, “এখন বর্ষাকাল। চাষের সময়। রমজানের মাস। এ সময় আগে কখনও ভোট হয়নি।” তাঁর অভিযোগ, রাজ্য সরকারের জন্যই ভোট পিছিয়েছে। সেই সঙ্গে সর্বোচ্চ আদালত ও উচ্চ আদালতের বিভিন্ন রায়ের প্রসঙ্গে সূর্যকান্তবাবুর কটাক্ষ, “নানা মামলায় একদিন হাইকোটর্র্ ও সুপ্রিম কোর্ট একদিন সরকারের ডান কান মুলছে তো, আরেক দিন বাম কান মুলছে।” সারদা-কান্ডের প্রসঙ্গে টেনে সূর্যকান্তবাবু দাবি করেন, ওই সংস্থার সম্পত্তি সহ ১১ টি টেলিভিশন চ্যানেল নিলামে বিক্রি করে সে টাকা আমানতকারীদের দেওয়া হোক।
দলের নেতা-কর্মীদেরও সতর্ক করেছেন সূর্যকান্তবাবু। তাঁর পরামর্শ, “মানুষের কাছে যাবেন। কারও কথায় রাগ করবেন না। কোনও মানুষ যদি গালি দেন, তবে বুঝবেন তাঁদের মধ্যে মান-অভিমান রয়েছে। মানুষকে কাছে টানতে হবে।”
|