নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
বহুতল আবাসন চত্বরে জল নিয়ে গোলমালের জেরে শূন্যে গুলি চালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক আবাসিকের বিরুদ্ধে। ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। শুক্রবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ির ভক্তিনগর থানার সেবক রোডের একটি নির্মীয়মাণ উপনগরীতে। পুলিশ গুলি চালানোর অভিযোগে দিলে মঙ্গল নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ দিলেবাবুর পিস্তলটি বাজেয়াপ্ত করেছে।
ওই ঘটনার পর এলাকাবাসীদের একাংশ অভিযোগ করেন, ওই উপনগরীতে মাঝেমধ্যেই গভীর রাতে গাড়ি আনাগোনা করে। একাধিকবার মাঝরাতে হইচই-এর অভিযোগও করেছেন ওই বাসিন্দারা। বিষয়টি বাসিন্দাদের তরফে পুলিশ-প্রশাসনের কাছেও জানানো হয়েছে। এলাকাটি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের নির্বাচনী ক্ষেত্র ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি এলাকার মধ্যে রয়েছে। মন্ত্রী বলেন, “পুলিশকে আবাসিকদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে বলেছি। কেউ যদি ফ্ল্যাট কিনে ভাড়া দেন, তা হলে তিনিও যেন ভাড়াটের পরিচয়পত্র থানায় জমা দেন। কে কোথা এসে কী উদ্দেশ্যে বসবাস করছেন তা সামগ্রিক নিরাপত্তার স্বার্থেই জানা জরুরি।”
পুলিশ জানতে পেরেছে, সিকিমের বাসিন্দা দিলেবাবু শিলিগুড়িতে ওই উপনগরীতে কয়েকমাস হল ফ্ল্যাট কিনেছেন। তিনি সেখানে সপরিবারে থাকেন। পুলিশ সূত্রের খবর, ফ্ল্যাটের জল, রক্ষণাবেক্ষণের সমস্যা নিয়ে উপনগরী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাঁর মতবিরোধ চলছিল। তার জেরেই ঘটনাটি ঘটেছে। শিলিগুড়ি পুলিশের কমিশনার কারলিয়াপ্পন জয়রমন বলেন, “উপনগরী কর্তৃপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে দিলে মঙ্গলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর পিস্তলের লাইসেন্সও বাতিল করা হবে।”
উপনগরীর এক নিরাপত্তারক্ষী জানান, এদিন সকালে একটি গাড়ি নিয়ে সোজা উপনগরীর দফতরে সামনে এসে দাঁড়ান দিলেবাবু। সেখানে কয়েকজন কর্মীর সঙ্গে তাঁর কথা কাটাকাটি হয়। তারমধ্যেই তিনি পিস্তল বার করে শূন্যে এক রাউন্ড গুলি চালিয়ে দেন বলে অভিযোগ। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন উপনগরীতে কর্মরত প্রায় শ’খানেক কর্মী-সহ এলাকার বাসিন্দারা। ছোটাছুটি শুরু হয়ে যায়। উপনগরীর নির্মাতা সংস্থার অন্যতম কর্ণধার দিলীপ অগ্রবাল বলেন,“পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছি।” ঘটনার জেরে শহর জুড়ে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায়। স্থানীয় সিপিএম কাউন্সিলর দিলীপ সিংহের অভিযোগ, “শিলিগুড়িতে কয়েক মাস ধরে আইন শৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে। সপ্তাহ খানেক আগে সেবক রোডের একটি শপিং মলের পানশালায় রক্তারক্তির ঘটনা ঘটে। পুলিশ কমিশনারেট হওয়ার পরেও শহরে কী হচ্ছে বুঝতে পারছি না।” এলাকার তৃণমূল কংগ্রেসের দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলার তৃণমূল সাধারণ সম্পাদক সৌমিত্র কুণ্ড বলেন, “ঘটনাটি শুনেছি। পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে। ওই এলাকায় জমি মাফিয়ারা সক্রিয় হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে জমির কারবারীদের কোনও যোগাযোগ রয়েছে কি না তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে।” |