ঝাড়ফুঁক করতে এসে এক গ্রামবাসীর দায়ের কোপে গুরুতর জখম হলেন এক ওঝা। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে দেগঙ্গা থানার বেঁড়াচাপার পাড়ুইপাড়ায়। গুরুতর আহত স্বপন সিংহ নামে ওই ওঝাকে প্রথমে স্থানীয় বিশ্বনাথপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এবং পরে বারাসত হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। ঘটনার পর পালিয়ে যাওয়া অভিযুক্ত শ্যামল পাড়ুইয়ের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন রাতে বাথরুমে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই পাড়ার বাসিন্দা লক্ষ্মণ পাড়ুই। তাঁর মেয়ে রূপা ‘বাবাকে ভূতে ধরেছে’ ভেবে পাশের সর্দার পাড়ায় গিয়ে স্বপন সিংহ নামে ওই ওঝাকে ডেকে আনে। তিনি এসে জানান, লক্ষ্মণবাবুকে ভূতে ধরেছে, অবিলম্বে ভূত তাড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে। সেই মতো ঝাড়ফুঁকের আয়োজন করা হয়। রাত ৯টা নাগাদ জল ও নিমপাতা দিয়ে স্বপনবাবু ঝাড়ফুঁক শুরু করতেই জড়ো হওয়া প্রতিবেশীদের মধ্যে থেকে শ্যামল পাড়ুই নামে এক গ্রামবাসী লোহার রড ও দা নিয়ে স্বপনবাবুর উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। দায়ের কোপে গুরুতর আহত হন স্বপনবাবু। স্থানীয় বাসিন্দারা কিছু বোঝার আগেই পালিয়ে যায় শ্যামল। খবর পেয়ে পুলিশ আহতকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানতে পারে, স্থানীয় বাসিন্দা অমর পাড়ুই সন্তানের আশায় স্বপন সিংহের কাছে গেলে তিনি তাঁকে কয়েকটা গাছের শিকড় দিয়ে তার রস খেতে বলেন। কিন্তু তার পরে সন্তান হওয়া তো দূরস্ৎ, মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন তিনি।
পাঁচ মাস আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বানতলায় নিজের বোনের বাড়িতে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হন অমর। সেই অমর পাড়ুইয়েরই ভাই এ দিনের ঘটনায় অভিযুক্ত শ্যামল পাড়ুই। দাদার এই অস্বাভাবিক মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলেন না তিনি। এ দিন হাতের কাছে ওই ওঝাকে পেয়ে সেই ঘটনারই প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। |