তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ ওঠায় সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসারকে আদালতে তলব করেছিলেন বিচারক। অফিসার নিজে না এসে পাঠিয়ে দেন স্ত্রীকে। তিনি এজলাসে দাঁড়িয়ে জানান, স্বামী অসুস্থ। তাই আসতে পারেননি। কথাটা বিশ্বাসযোগ্য ঠেকেনি আদালতের কাছে। অসন্তুষ্ট বিচারক ওই সাব ইন্সপেক্টরকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। জামিন নিতে শুক্রবার চুঁচুড়া আদালতে এসেছিলেন অভিযুক্ত অফিসার গৌতম চক্রবর্তী। জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেননি চুঁচুড়া আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (সেকেন্ড কোর্ট) শ্যামলকুমার বিশ্বাস। তাঁর নির্দেশে আদালত চত্বর থেকেই গ্রেফতার করে ৫ দিনের জন্য জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে গৌতমবাবুকে।
পুলিশ জানায়, ২০১১ সালে ধনেখালির চক সুলতানপুরে বছর উনিশের এক মূক-বধির তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে শেখ মইদুল ইসলাম নামে স্থানীয় এক যুবকের বিরুদ্ধে। মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বাও হয়ে পড়ে। গ্রামের লোক মইদুলকে চাপ দিলে সে বিয়ে করতে রাজি হয় তরুণীকে। পরে গ্রাম ছেড়ে পালায়। অভিযোগ দায়ের হয় থানায়। ধনেখালির তৎকালীন ওসি অমিতাভ সান্যাল গৌতমবাবুকে মামলার তদন্তভার দেন। গ্রেফতার হয় মইদুল।
২০১১ সালেরই ২২ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী অফিসার। চলতি বছরের ১০ মে আদালতে চার্জগঠন হয়। শ্যামলকুমার বিশ্বাসের এজলাসে শুরু সাক্ষ্যগ্রহণ। মামলা চলাকালীন সরকারি আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আদালতকে জানান, গুরুত্বপূর্ণ ৭ জন সাক্ষীর নামই চার্জশিটে নেই। যেহেতু মেয়েটি মূক-বধির, সে জন্য কোনও বিশেষজ্ঞকে দিয়ে তাঁর বয়ান নেওয়ার দরকার ছিল। তা-ও করা হয়নি। এর পরেই তদন্তকারী অফিসারের আচরণে অসন্তোষ প্রকাশ করে আদালত। তাঁকে সমন পাঠানো হয়।
গৌতমবাবুকে ২৮ জুন আদালতে হাজিরার নির্দেশ দেন বিচারক। গৌতমবাবু আসেননি। তাঁর স্ত্রী আদালতে এসে জানান, স্বামী অসুস্থ। আসতে পারছেন না। এরপরেই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন বিচারক।
কিছু দিন আগে পর্যন্ত গুড়াপ থানায় কর্মরত ছিলেন গৌতমবাবু। অন্য একটি মামলায় তদন্তে গাফিলতির অভিযোগে দিন কুড়ি আগে তাঁকে হুগলি পুলিশ লাইনে ক্লোজ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন জেলা পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী। চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার বেশি দিন বাকি নেই ওই পুলিশ অফিসারের। এই পরিস্থিতিতে আদালতের এ হেন নির্দেশে হুগলি জেলা পুলিশ মহলে আলোড়ন তৈরি হয়েছে। |