অবশেষে ইস্পাতের রড কেনার নীতি বদলাতে চলেছে কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ)। কর্তৃপক্ষের দাবি, নয়া নীতি কার্যকর হলে, তাদের রড সরবরাহের সুযোগ পাবে রাজ্যের অনেক ছোট-মাঝারি সংস্থা। এত দিন যে সুযোগ সীমাবদ্ধ ছিল গুটিকয় বড় সংস্থার মধ্যে। ফলে এক দিকে ছোট-মাঝারি সংস্থার সামনে যেমন বরাত পাওয়ার সুযোগ থাকবে, তেমনই প্রতিযোগিতামূলক দরের সুবিধা নিয়ে মোটা অঙ্ক সাশ্রয় করবে কেএমডিএ।
এ প্রসঙ্গে পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তথা কেএমডিএ চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম বলেন, “নীতি সংশোধনের নির্দেশ দিয়েছি। লক্ষ্য, বরাত যেন শুধু দু’তিনটি সংস্থার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে। তাতে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দাম নির্ধারিত হবে। তাই সরবরাহকারী সংস্থাগুলির তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে কিছু শর্ত পরিবর্তনেরও নির্দেশ দিয়েছি। তবে এ জন্য রডের গুণমানের সঙ্গে আপোস করা হবে না।”
সংশ্লিষ্ট মহলের অভিযোগ, বাম জমানা থেকেই রড কিনতে কেএমডিএ যে নীতি অনুসরণ করত, গোড়ায় গলদ ছিল তাতে। কারণ, সরবরাহকারীদের তালিকায় নাম ছিল মাত্র গোটা পাঁচেক সংস্থার। তার মধ্যে যাবতীয় বরাত পেত কার্যত দু’টি সংস্থাই। দামও নিত বাজার দরের তুলনায় অনেকটা বেশি।
কেএমডিএ-র শ্রমিক সংগঠন ডেভলপমেন্ট এমপ্লয়িজ জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রাণবন্ধু নাগের অভিযোগ, “এ ভাবে রড কেনায় বছরে লোকসান হত ৫০-৬০ কোটি টাকা। এমনকী অনেক ক্ষেত্রে দেখা যেত, রাজ্যের দুই দফতর (জনস্বাস্থ্য কারিগরি ও পূর্ত) যে দামে রড কিনছে, তার থেকে টনে ৬-৭ হাজার টাকা বেশি দিচ্ছে কেএমডিএ।” ‘ত্রুটি’ শোধরাতে নতুন করে সরবরাহকারী সংস্থার তালিকা তৈরির জন্য আবেদনপত্র চেয়ে বিজ্ঞপ্তি দেয় কেএমডিএ। কিন্তু, তাতেও এমন কিছু শর্ত ছিল, যা থাকলে রড সরবরাহের যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবে বড়জোর গোটা তিনেক সংস্থা। আপত্তি তোলে ইউনিয়ন। জানানো হয় মন্ত্রীকে।
এমনিতে সরবরাহকারীর যোগ্যতা ঠিক করার কথা কেএমডিএ-র সাত সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটির। কিন্তু এক সদস্যের অভিযোগ, “অনুমোদন না-নিয়েই চিফ ইঞ্জিনিয়ার (মেটিরিয়াল সেক্টর)-এর দফতর বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশ করেছে।” তবে মন্ত্রীর নির্দেশের পর সব শর্ত খতিয়ে দেখছে কমিটি। |