এত দিন দু’হাত ভরে নিয়েছেন। এ বার সাধ্য মতো ঋণস্বীকারের পালা। শুক্রবার সন্ধ্যায় ট্র্যাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম ফেয়ার-এর আসরে ব্যানার দেখে গল্ফগ্রিনের অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়— তাই থমকে দাঁড়ালেন। বাংলার ভ্রমণসংস্থাগুলির সংগঠন ট্যাব-এর তরফে একটি আবেদন, ‘উত্তরাখণ্ডের দুর্গতদের সাহায্যে যে যা পারেন, দান করুন।’ দেখে সপরিবার পর্যটন মেলা দেখতে আসা ওই সরকারি কর্মী পকেট থেকে মানিব্যাগ বার করলেন।
“২৩ বছর ধরে গঢ়বালে যাচ্ছি। প্রকৃতির মহিমাতেই কেদার আমার ভীষণ প্রিয়।”— বলছিলেন অশোকবাবু। মধ্য চল্লিশের ওই পাহাড়-পাগলের কেদার-বদ্রী-গঙ্গোত্রী সবই চষা। তিনি একা নন। এ দেশের বহুল পরিচিত পর্যটন-মেলার কলকাতা-সংস্করণের উদ্বোধনী দিনেই ট্যাব-এর ডাকে সাহায্যের ভাঁড়ার ভরতে শুরু করেছে। |
উত্তরাখণ্ডের দুর্গতদের সাহায্যে ত্রাণ সংগ্রহ। নেতাজি
ইন্ডোর স্টেডিয়ামে পর্যটন মেলায়।—নিজস্ব চিত্র |
প্রথম দিনে সাধারণ ভ্রমণ-পিপাসুদের ততটা দেখা যায়নি। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পরে বিভিন্ন ভ্রমণ সংস্থার কর্তা, সরকারি আমলাদেরই বেশি ভিড়। তাতেই চেক-নগদ মিলিয়ে ট্যাব-এর ডোনেশন-বাক্সে কম-বেশি ১২ হাজার টাকা পড়েছে বলে জানান সংগঠনের এক কর্তা। ট্যাব-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট কৌশিক করের কথায়, “এত বছর ধরে আমরাও তো বাংলা থেকে হাজার হাজার লোককে উত্তরাখণ্ডে পাঠিয়েছে। এই সময়ে মুখ ফিরিয়ে থাকলে নিজেদের ক্ষমা করতে পারতাম না।”
কৌশিকবাবুরা তাই প্রথম দিন থেকেই তহবিল গড়ছেন। মেলা-চত্বরে একটি অংশ ওই তহবিল গড়তেই ট্যাব-কে নিখরচায় ছেড়ে দিয়েছেন পর্যটন মেলার মূল সংগঠকেরা। কৌশিকবাবুর আশা, “বাংলার মানুষ অবশ্যই উত্তরাখণ্ডের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে আসবেন।” তহবিলের টাকা কী ভাবে দুর্গতদের সাহায্যে কাজে লাগানো হবে, তা-ও আলোচনা করেছেন ভ্রমণ সংস্থার কর্তারা। |
নৃত্য পরিবেশন করছেন গুজরাতের শিল্পীরা। শুক্রবার, নেতাজি
ইন্ডোর স্টেডিয়ামের পর্যটন মেলায়। ছবি: রণজিৎ নন্দী |
তবে গঢ়বাল ধুঁকতে থাকলেও উত্তরাখণ্ডে যে জীবন থমকে নেই, সেটা বলে দিচ্ছে পর্যটন মেলাই। মুসৌরি থেকে কলকাতায় হাজির হোটেল-কর্তা কমলজিৎ সিংহ। তিনি বললেন, “গঢ়বালে দেহরাদূন-হরিদ্বার-মুসৌরি বা কুমায়ুনে নৈনিতাল-আলমোড়া এখন পুরো স্বাভাবিক। ভয়ের কিছু নেই।” এ দেশের ২৪টা রাজ্য, প্রতিবেশী বাংলাদেশ ছাড়াও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, ইউরোপের ৮টি দেশে বেড়ানোর খবারখবর মিলবে পর্যটন-মেলায়। |