সবে তখন ব্যাঙ্ক খুলেছে। নিজ নিজ ডেস্কে বসে কাজ শুরু করেছেন কর্মীরা। গ্রাহকদেরও আনাগোনা শুরু হয়েছে। এমন সময়ে হাজার টাকার নোট জাল কি না পরীক্ষা করানোর জন্য ক্যাশ কাউন্টারের সামনে হাজির হল এক ব্যক্তি। অল্পক্ষণ দাঁড়িয়েই সে পা বাড়াল ক্যাশঘরের দিকে। সেখানে তখন ক্যাশিয়ারের পিছনে পড়ে রয়েছে বান্ডিল করা টাকা। ওই বান্ডিল সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব যে কর্মীর, তিনি তখন শৌচাগারে। সুযোগ বুঝে তার সদ্ব্যবহার করতে দেরি করেনি ওই ব্যক্তি। সটান চারটি বান্ডিল তুলে এক বার এ দিক-ও দিক তাকিয়ে সাধারণ গ্রাহকের মতো হেলেদুলে বেরিয়ে গেলেন ব্যাঙ্ক থেকে।
শুক্রবার সকালে কাটোয়ার সার্কাস ময়দানে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কৃষি উন্নয়ন শাখায় সবার চোখের সামনে ঘটে গেল এমনই চুরি। গ্রাহকেরা মনে করেছিলেন, ওই ব্যক্তি আদতে ব্যাঙ্কেরই কর্মী। তাই তাঁরা টাকার বান্ডিল নিয়ে বেরোতে দেখেও ওই দুষ্কৃতীকে বাধা দেননি। |
ব্যাঙ্কে তদন্তে পুলিশ।—নিজস্ব চিত্র। |
ঘটনার কয়েক জন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ঘড়িতে তখন সাড়ে ১০টা। ক্যাশ কাউন্টারের সামনে জাল নোট নিয়ে কথা বলছিলেন কয়েক জন। তাদের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা এক জন হঠাৎই গটগট করে হেঁটে ভিতরে ঢুকে পড়েন। তার পরে একটি টেবিলে রাখা টাকার বান্ডিল নেন এবং বেরিয়ে যান। বেশ কিছুক্ষণ পরে ব্যাঙ্ককর্মীদের টনক নড়ে। তাঁরা বুঝতে পারেন, পাঁচশো টাকার দু’টি, একশো টাকার একটি ও পঞ্চাশ টাকার একটি নোটের বান্ডিল খোয়া গিয়েছে। পুলিশে খবর দেওয়া হয়। দুপুরে পুলিশ ব্যাঙ্কে পৌঁছয়।
পুলিশ জানায়, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে বোঝা গিয়েছে, ঘটনার পিছনে ব্যাঙ্ককর্মীদের গাফিলতি রয়েছে। পুলিশের আরও ধারণা, ব্যাঙ্কের ভিতরে দু’তিন জন ঢুকেছিল। দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ককর্মী শৌচাগারে যেতেই ওই দুষ্কৃতী মওকা বুঝে টাকা নিয়ে পালায়। বাইরে আরও দু’তিন জনের থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও মনে করছে পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তদন্ত শুরু হয়েছে। ব্যাঙ্কের কোনও কর্মী এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানায় পুলিশ। |