কার্শিয়াঙের খারেখোলা এলাকায় দলীয় কর্মীদের উপর হামলায় ঘটনায় জড়িত সমস্ত অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবিতে একযোগে পাহাড়ের ৮টি থানা-ফাঁড়িতে বিক্ষোভ দেখাল জিএনএলএফ। বুধবার সকালে কার্শিয়াং মহকুমা ওই আটটি থানা-ফাঁড়ি এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। প্রতিটি এলাকায় মিছিল করার পাশাপাশি থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসারদের দলের তরফে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়। তবে কর্মসূচির জেরে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। প্রতিটি এলাকায় বাড়তি পুলিশ কর্মীদের মোতায়েন করা হয়।
জিএনএলএফের কার্শিয়াং মহকুমার আহ্বায়ক নিমা লামা বলেন, “কার্শিয়াঙের জিটিএ সদস্য অনোজ থাপা-সহ আরও ১২ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেছিলাম। শুধুমাত্র ৫ জনকে ধরা হয়েছে। আমরা চাই অভিযুক্তদের সকলকে ধরতে হবে। নইলে ফের আন্দোলন করা হবে।” একইভাবে দলের মহিলা শাখা, গোর্খা ন্যাশনাল ওমেন অর্গানাইজেশনের নেত্রী ছিরিং দাহাল বলেন, “পাহাড়ে আমরা চাই গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় থাকুক। কিন্তু বিভিন্ন এলাকায় যা হচ্ছে তা সাধারণ পাহাড়বাসী আর চান না। পুলিশ-প্রশাসনকে সেটাই দেখতে বলা হয়েছে।” পাশাপাশি, পাহাড়কে ষষ্ঠ তফশিলের অর্ন্তভুক্ত দাবি নিয়েও আন্দোলন করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। |
উল্লেখ্য, গত রবিবার দুপুরে কার্শিয়াং থানার খারেখোলা এলাকায় দলীয় সভাকে ঘিরে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা এবং জিনএলএফ কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের ঘটনায় তিনজন জিএনএলএফ কর্মী জখম হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে দুই জন কার্শিয়াং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনার পর এক জিটিএ সদস্য-সহ ১২ জনের নামে জিএনএলএফ অভিযোগ দায়ের করে। পাল্টা মোর্চার তরফেও অভিযোগ দায়ের করা হয়। এলাকায় উত্তেজনা বাড়তে থাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন, “আমরা জিএনএলএফের অভিযোগের ভিত্তিতে ৫ জন এবং মোর্চার অভিযোগের ভিত্তিতে ১ জনকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করেছি। ঘটনার তদন্ত চলছে। কয়েকজনকে খোঁজাও হচ্ছে। চুপচাপ বসে থাকার কোনও প্রশ্ন নেই। কোনও ধরণের গোলমাল, সংঘর্ষ বরদাস্ত করা হবে না।” পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনার দিন জিএনএলএফ কর্মীরা কার্শিয়াঙের তিনধারিয়া এবং গোরাবাড়িতে বৈঠক করেন। তিনধারিয়ায় কোনও গোলমাল না হলেও গোরাবাড়ি থেকে কর্মীরা গাড়িতে করে রওনা হওয়ার পর খারেখোলায় সংঘর্ষ হয়।
এদিন জিএনএলএফ কর্মীরা সেবক, তিনধারিয়া, সুকনা, মিরিক, সৌরিণী, পানিঘাটা, গাড়িধূরা এবং কার্শিয়াং থানায় গিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়ে স্মারকলিপি দেন। সকাল সকাল এলাকাগুলিতে জিএনএলএফের সবুজ পতাকা এবং সুবাস ঘিসিং-র নামের স্লোগান শুনে স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই হকচকিয়ে যান। এমনকি, সংঘর্ষ বন্ধ করার জন্য সবাইকে একজোট হওয়ায় স্লোগানও চলতে থাকে। এলাকার মোর্চা কর্মীরা দোকান, বাড়ি থেকে বিষয়টি লক্ষ্য করলেও কোথাও কোনও জমায়েত করেননি। তবে প্রতিটি এলাকায় পুলিশ ছিল। মোর্চা তরফে দলের শীর্ষ নেতারা বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতেন চাননি। কার্শিয়াঙের কয়েকজন মোর্চা নেতা বলেন, “ওই কয়েকটা মিছিল বা বিক্ষোভ দেখিয়ে জিএনএলএফ আর কিছু করতে পারবে না। পাহাড়বাসী আমাদের সঙ্গেই আছেন।”
|