|
|
|
|
আনসাররা ছাড়া পেলে কী হবে, ত্রস্ত কামদুনি
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
ধরা পড়ার সময় কামদুনি ধর্ষণ মামলায় অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত আনসার আলি শাসিয়ে গিয়েছিল, ‘‘ফিরে এসে দেখে নেব।’’
চার্জশিটে সিআইডি সেই আনসারকেই মূল অভিযোগ থেকে বাদ দিয়ে তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে। কামদুনির অধিকাংশ মানুষ তাই আর স্বস্তিতে নেই। ক’দিন পরে আনসাররা জামিন পেলে তাঁদের জন্য কী অপেক্ষা করছে, বুধবার থেকেই সেই আতঙ্কে ত্রস্ত কামদুনি। বারাসত আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে কামদুনির এক মহিলা এ দিন বলেন, “আনসাররা শাসিয়ে গিয়েছিল ছাড়া পেয়ে ফিরে আমাদের দেখে নেবে। আমরা এখন সেই ভয়টাই পাচ্ছি।” |
|
বারাসত আদালতে সইফুল। |
কামদুনির বাসিন্দারা এ দিন সন্ধ্যায় আদালত থেকে গ্রামে ফিরে সভা করেছেন। তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ন্যায়বিচার চেয়ে তাঁরা রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন জানাবেন। বিচার চাইবেন প্রধানমন্ত্রীর কাছেও। কামদুনির এক বাসিন্দা বলেন, “সিআইডি-কে দিয়ে এই ঘটনার যে তদন্ত হবে না, সেটা আগেই জানতাম। এ বার আমরা সিবিআই তদন্ত চেয়ে সরব হব। প্রয়োজনে সিবিআই তদন্তের দাবিতে টানা আন্দোলনও করব।” ঘটনার পর থেকে এক বারের জন্যও মুখ খোলেনি মৃতার ছোট ভাই। এ দিন শুনানির পরে আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে দশম শ্রেণির ওই ছাত্র বলে, “চাকরি, টাকা কিছুই চাইনি আমরা। শুধু চেয়েছিলাম দোষীদের ফাঁসি হোক। ঘটনার তদন্তে মন না দিয়ে শুধু মাওবাদী আর সিপিএম খুঁজে বেড়ালে যা হয়, তা-ই হয়েছে।” |
|
আদালত চত্বরে বিক্ষোভের পুরোভাগে মহিলারা। সামিল মৌসুমী কয়ালও। |
ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে বিচার দেখতে ছ’টি গাড়িতে চেপে বৃহস্পতিবার আদালতে পৌঁছেছিলেন কামদুনির অন্তত পাঁচশো গ্রামবাসী। দিনের শুরুতে দোষীদের শাস্তি হওয়া নিয়ে তাঁদের অনেকের মধ্যে যে আশা ছিল, তা তলানিতে ঠেকে বিকেলে। আদালত থেকে বেরিয়ে চার্জশিট অসম্পূর্ণ বলে মন্তব্য করেন বিচারক।
আইনজীবীরাই গ্রামবাসীদের জানান, যে চার্জশিট পেশ হয়েছে, তাতে আনসার-সহ মূল অভিযুক্তদের অনেকেই ছাড়া পেয়ে যেতে পারে। এর পরেই হতাশার আবহাওয়া তৈরি হয় আদালতের বাইরে। অনেকেই অন্য আইনজীবীদের কাছে গিয়ে বারবার এই মামলার ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন করতে থাকেন। সিআইডি-র তদন্তে যে তাঁদের ভরসা নেই, বারবারই তা বলেন কামদুনির মানুষ।
নিহত কলেজছাত্রীর দাদাও বলেন, “সিআইডি চার্জশিটে সইফুলকেই মূল অভিযুক্ত বলে দেখিয়েছে। এতে আনসার-সহ বাকিরা ছাড়া পেয়ে যেতে পারে।” তিনি এ কথাও জানান যে, আদালতের উপরে তাঁদের আস্থা আছে। “বোনকে যারা নৃশংস ভাবে অত্যাচার করে মারল, নিশ্চয়ই তাদের বিচার হবে। তার জন্য যত দিন আদালতে আসতে হয় আসব।”
|
ছবি: সুদীপ ঘোষ।
|
|
|
|
|
|