৪৫ গজের একটা শট। তাতেই কেঁপে গেল গোটা বিশ্ব।
লিমায় বুধবার লিওনেল মেসি ফাউন্ডেশনের চ্যারিটি ট্যুরের দ্বিতীয় ম্যাচে গোটা বিশ্বের নজর ছিল। বার্সেলোনায় সই করার পর প্রথম বার একসঙ্গে দেখা গেল যে নেইমার আর মেসিকে। তবে পাশাপাশি নয়। বিশ্ব দেখল মেসি বনাম নেইমারকে। সঙ্গে দানি আলভেজ, এরিক আবিদাল, লাভেজ্জি, মাসচেরানো, আইমাররা। তারকাদের আলোয় মাঠে চোখ রাখা দায়।
সবথেকে বেশি আগ্রহ যদিও ছিল কিন্তু বার্সোলানার আসন্ন জুটি নিয়েই। ‘মেসি অ্যান্ড ফ্রেন্ডস’ ম্যাচে ৮-৫ গোলে অবশিষ্ট বিশ্ব একাদশকে (নেইমার অ্যান্ড ফ্রেন্ডস) হারালেও সেই যুদ্ধে কে জিতলেন? দু’জনেই দুটি করে গোল করেছেন। ম্যাচে নেমেওছিলেন দুই তারকা ১০ নম্বর জার্সি পরেই। কিন্তু মেসিকে ম্লান করে ৪৫ গজ দূর থেকে নেইমারের জালে জড়ানো শট সব কিছু ছাপিয়ে উঠে আসছে আলোচনায়।
বোমাটা তৈরিই ছিল, সলতেয় আগুনটা ধরিয়ে দিলেন ‘ওয়ান্ডার কিড’। কনফেড কাপে ব্রাজিলীয় ফুটবলকে নতুন ভোরের সন্ধান দেওয়ার পর নির্বিষ চ্যারিটি ম্যাচেও নেইমার বুঝিয়ে দিলেন কেন বার্সেলোনা তাঁকে ৫০ মিলিয়ন পাউন্ড দিয়ে কিনেছে। মেসির পাশে তাঁর মানিয়ে নেওয়া নিয়ে যাঁরা সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন তাঁরাও আর মুখ লুকোনোর জায়গা পাচ্ছেন না।
মেসিই ম্যাচের প্রথম গোল করেন। নেইমারের শুরুটা অবশ্য ভাল হয়নি। প্রথমার্ধে পেনাল্টি ফস্কান ক্যাপ্টেন নেইমার। সাওপাওলোর ‘বিস্ময়’ ধীরে ধীরে আসল রূপে ফিরতে শুরু করতেই জমে যায় লড়াই। প্রথমার্ধে মেসির টিমের হয়ে নামা দানি আলভেজ পরে নেইমারের টিমের হয়েও গোল করেন। আর তাঁর পাস থেকেই গোলার মতো শটে প্রথম গোল নেইমারের। দ্বিতীয় গোলও আলভেজের পাসেই। সেন্টার লাইনের কাছে আলভেজের ছোট্ট টোকায় বাড়ানো বলে প্রায় পঁয়তাল্লিশ গজ দূর থেকে শট নেন নেইমার। কিছু বোঝার আগেই ‘ওয়ান্ডার কিড’-এর মিসাইল আছড়ে পড়ে জালে। মাঠ ভর্তি দর্শককে বিস্ময়ে হতবাক করে দেওয়াই নয়, নেইমার যেন এই একটা শটেই দেখিয়ে দিলেন, শুধু দেশেরই নয়, বার্সেলোনার জার্সিতে মাঠ ঝলসাতেও তিনি তৈরি। |
মহাতারকাদের দিন। পেরুর লিমায় ম্যাচ শুরুর আগে নেইমার-মেসি। ছবি: রয়টার্স |
চ্যারিটি ম্যাচ থেকে ওঠা পুরো অর্থই যাবে লিও মেসির ফাউন্ডেশনে। মেসির সংস্থা বিশ্ব জুড়ে শিশুদের ভবিষ্যৎ গড়ার কাজে লাগাবে এই অর্থ। মহৎ উদ্যোগে শামিল হওয়া দুই মহাতারকার জুটির ভবিষ্যৎ বোধহয় এই ম্যাচই গড়ে দিয়ে গেল। ‘মেসি আমি তোমার পাশেই আছি। তা সে চ্যারিটি ম্যাচই হোক বা ক্লাবের লড়াইয়ে,’ এই বার্তাই কি দিলেন নেইমার?
বোঝা খুব একটা কঠিন নয়। তবে একটা প্রশ্নের উত্তর পাওয়া কিন্তু কঠিন। আসন্ন মরসুমে বার্সার জোড়া ফলা ঠিক কতটা বিস্ফোরক হতে পারে সেটা জানতে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো কি সিঙ্গাপুরে বসে টিভিতে ম্যাচটা দেখেছেন?
|