ইংল্যান্ড থেকে আনা কোহিনুরের কথা ভেবে
ওয়েস্ট ইন্ডিজে হার মাথায় রাখছি না
ই ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টটা কেন, কীসের জন্য, জানি না। তবে এটুকু বুঝতে পারছি যে, ছেলেগুলো বেশ কষ্ট করে খেলছে ক্যারিবিয়ানসে।
জামাইকা অসাধারণ জায়গা। দারুণ আবহাওয়া। কোথায় এ সব উপভোগ করবে, তা নয় ভারতীয় ক্রিকেটারদের কাছে এটাই যেন কেমন দমবন্ধ করা পরিবেশ হয়ে উঠেছে। পর পর ম্যাচ হারলে সেটা হবে না-ই বা কেন, বলুন।
কোন পরিস্থিতিতে এজবাস্টনে পা রেখেছিল ভারতীয় দল, সেটা একবার মনে করে দেখুন। সারা দেশ তখন তোলপাড় ক্রিকেট-কেলেঙ্কারি নিয়ে। মহেন্দ্র সিংহ ধোনি মুখ বুজে থাকায় তাকে ছিঁড়ে খাচ্ছে সংবাদমাধ্যম। সাত সমুদ্র পেরিয়ে গিয়েও ছাড় পায়নি ধোনি। সেখানেও অপ্রিয় প্রশ্ন তাড়া করে বেড়িয়েছে ওকে। তা-ও সব বিতর্ক থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে রেখে এতগুলো হার্ডল পার হয়ে শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়নের উল্লাসে মেতে ওঠা যে কী কঠিন কাজ, তা একজন ক্রিকেটার হয়ে খুব ভাল করেই উপলব্ধি করতে পারি। ভারতের এই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জেতার গুরুত্বটা সে জন্যই আমার কাছে অপরিসীম। মরণপণ যুদ্ধে জয় বললেও বিন্দুমাত্র ভুল হবে বলে মনে হয় না। আর এমন একটা লড়াইয়ের পর ত্রিদেশীয়!
ভারত যখন ক্যারিবিয়ানে হারছে, তিনি তখন ইংল্যান্ডে।
সাবাইনা পার্কে আউট হয়ে ফিরছেন কোহলি। ছবি: এএফপি
গুরুত্বের দিক থেকে বিশ্বকাপের পরেই যে টুর্নামেন্ট, সেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে এক মাস ধরে তুমুল লড়াই করে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর যদি ওদের বলা হয়, চার দিন পরেই একটা ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলতে নামো, তা হলে যা হওয়ার ছিল, তা-ই হল। যাবতীয় উৎসাহ, উদ্দীপনা ইংল্যান্ডের মাঠে ঢেলে দেওয়ার পর জামাইকায় নিয়ে যাওয়ার মতো আর কিছু ওদের ভাঁড়ারে বাকি ছিল না বোধহয়। সে জন্যই ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচের হারের পর মঙ্গলবারও শ্রীলঙ্কার এক উইকেটে ৩৪৮ রানের জবাবে ১৮৭ রানে গুটিয়ে গেল বিরাটরা।
সোজা কথা হল, ওরা এখন কোনও রকমে টুর্নামেন্টটা শেষ করে দেশে ফিরতে পারলে বাঁচে! পারফরম্যান্সে মোটিভেশনের অভাব একেবারে স্পষ্ট এবং এটাই স্বাভাবিক। যে ভাবে মঙ্গলবার দু-দু’টো ক্যাচ ফস্কাল ভারতীয় ফিল্ডাররা, তার পর এ কথা না বলে পারছি না। সব দেখে মনে হচ্ছে, ওখানে ওদের না গেলেই ভাল হত। শরীর যতটা না ওদের পিছন থেকে টেনে ধরছে, তার চেয়ে বেশি বিশ্বাসঘাতকতা করছে ওদের মন, ইচ্ছাশক্তি। ওদের না পাঠিয়ে অন্য একটা দল পাঠালে এমনটা হত না বোধহয়। যেমন জিম্বাবোয়েতে দ্বিতীয় সারির দল পাঠানো হবে বলে ঠিক করেছে বোর্ড।
লর্ডসে ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে সচিন তেন্ডুলকর। ছবি সৌজন্যে: টুইটার
ধোনি থেকে কোহলি। নেতৃত্বের ব্যাটন এত দ্রুত হাত বদলাল যে, যারা সেই হাত বদলে শামিল, তারাও ঠিকমতো বুঝতে পারল না। না এমএসডি, না বিরাট। ধোনির সঙ্গে দলের বাকিদের এত দিন যে সমীকরণ ছিল, তা কয়েক ঘণ্টায় আমূল বদলে যাবে, এটা মনে করলে ওদের কাছে থেকে একটু বেশিই চাওয়া হয়। একটা দলের নেতা বদলে যাওয়া মানে দলের মধ্যে চলতে থাকা অনেকগুলো সিস্টেমও বদলে যাওয়া। রাতারাতি সেই পরিবর্তনটা আসা অসম্ভব। তা ছাড়া বিরাট খুব ভাল করেই জানে যে, ক’দিন পরেই ব্যাটনটা আবার ধোনির হাতেই ফিরিয়ে দিতে হবে। তাই দলের মধ্যে নিজস্ব সিস্টেম চালু করতে মোটেই চাইবে না। তাই এই টুর্নামেন্টে আমরা ক্যাপ্টেন কোহলিকে পাব, এমন আশা করবেন না। এই ক্যাপ্টেনকে দেখে ভবিষ্যতের ক্যাপ্টেন কোহলিকে খোঁজার চেষ্টা করা ঘোর অন্যায়। আর ধোনি-ফ্যাক্টরের অভাবের কথা বলছেন অনেকে। আমি তো বলব ক্যাপ্টেন ধোনির চেয়ে ব্যাটসম্যান ধোনিকে অনেক বেশি মিস করছে ভারতীয় দল। ওর মতো ফিনিশার আর এই দলে কে আছে? বিপদে পড়লে দলকে বাঁচানোর লোক ওর মতো আর কে আছে?
তাই বলছি, ওরা হারুক-জিতুক, নেভার মাইন্ড!

ফাইনালে ওঠার অঙ্ক
• লিগ টেবিলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের এখন ৯ পয়েন্ট, শ্রীলঙ্কা ৫, ভারত ০।
• ফাইনালে উঠতে গেলে ভারতকে বাকি দুই ম্যাচে জিততেই হবে। দু’টির একটিতে হারলেই বিদায়।
• রবিবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ শ্রীলঙ্কাকে হারালে এবং ভারত পরের দুটি ম্যাচে জিতলে ফাইনালে উঠবেন কোহলিরা।
• শ্রীলঙ্কা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে দিলে ভারতকে দুটি ম্যাচেই বোনাস পয়েন্ট নিয়ে জিততে হবে।
• শ্রীলঙ্কা যদি ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বোনাস পয়েন্ট নিয়ে হারায় এবং ভারত যদি বোনাস পয়েন্ট নিয়ে দু’টি ম্যাচ জেতে, তা হলেও তাদের ফাইনালে ওঠা নিশ্চিত নয়। সেক্ষেত্রে নেট রান রেটই দেখা হবে।

সাবাইনা পার্কের স্কোর
শ্রীলঙ্কা
থরঙ্গা ন.আ. ১৭৪
জয়বর্ধনে ক উমেশ বো অশ্বিন ১০৭
ম্যাথেউজ ন.আ ৪৪
অতিরিক্ত ২৩
মোট ৩৪৮-১(৫০ ওভারে)।
পতন: ২১৩।
বোলিং: সামি ১০-০-৬৮-০, উমেশ ৮-০-৬৪-০, ইশান্ত ৯-০-৬৮-০,
জাডেজা ৯-০-৫৫-০, অশ্বিন ১০-০-৬৭-১, কোহলি ২-০-৯-০, রায়না ২-০-১০-০।

ভারত
রোহিত ক ম্যাথেউজ বো কুলশেখরা ৫
ধবন ক থরঙ্গা বো হেরাথ ২৪
বিজয় বো মালিঙ্গা ৩০
বিরাট ক মালিঙ্গা বো ম্যাথেউজ ২
কার্তিক স্টাম্প সঙ্গকারা বো হেরাথ ২২
রায়না রান আউট ৩৩
জাডেজা ন.আ. ৪৯
অশ্বিন ক মালিঙ্গা বো সেনানায়কে ৪
সামি বো সেনানায়কে ০
ইশান্ত ক সঙ্গকারা বো হোরাথ ২
উমেশ বো মালিঙ্গা ০
অতিরিক্ত ১৬
মোট ১৮৭ (৪৪.৫ ওভারে)।
পতন: ১২, ৫২, ৫৭, ৬৫, ১১৮, ১৪২, ১৫৩, ১৫৩, ১৬৬, ১৮৭।
বোলিং: কুলশেখরা ৯-০-৩৭-১, ম্যাথেউজ ৮-২-২৩-১,
সেনানায়কে ১০-০-৪৬-২, হেরাথ ১০-০-৩৭-৩, মালিঙ্গা ৭.৫-০-৪০-২।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.