নিজস্ব সংবাদদাতা • সিঙ্গুর |
দলীয় স্তরে অভিযোগ ওঠায় সিঙ্গুরের ‘মাস্টারমশাই’ তথা রাজ্যের পরিসংখ্যান ও প্রকল্প রূপায়ণ দফতরের মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের আপ্ত সহায়ক ভক্তিপ্রসাদ অধিকারীকে পদ থেকে সরিয়ে দিল তৃণমূল।
তৃণমূল সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষমতার অপব্যবহার-সহ নানা অনৈতিক কাজকর্মের সঙ্গে ভক্তিবাবুর জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ উঠছিল। জেলা নেতৃত্বের তরফে সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়। এর পরেই পঞ্চায়েত ভোটের মুখে মমতা ভক্তিবাবুকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। যদিও, এই বিষয়ে মুখে কুলুপ তৃণমূল নেতৃত্বের। দলের এক প্রদেশ নেতা বলেন, “খুব উঁচু থেকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিছু বলা যাবে না।” ভক্তিবাবুর অবশ্য মন্তব্য, “যত দূর জানি, এ বিষয়ে (পদচ্যুত করা) কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।”
এর আগে ভক্তিবাবুর ভাই, সিঙ্গুরের আনন্দনগর পঞ্চায়েতের অপসারিত প্রধান প্রেমপ্রসাদ অধিকারীর বিরুদ্ধে নিয়েও গাছ কাটায় দুর্নীতি-সহ নানা অভিযোগ উঠেছিল। দলীয় রাজনীতিতে প্রেমপ্রসাদ ছিলেন কৃষি প্রতিমন্ত্রী বেচারাম মান্নার ঘনিষ্ঠ। সিঙ্গুর কৃষিজমি রক্ষার আন্দোলনেও তিনি প্রথম সারিতে ছিলেন। মাস কয়েক আগেই রবীন্দ্রনাথবাবুর মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগকে ঘিরে বেচারাম-মাস্টারমশাই দ্বন্দ্ব তুঙ্গে উঠেছিল। তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতা বলেন, “বেচারামের মতকে অগ্রাহ্য করে সিঙ্গুরে মানিক দাসকে জেলা পরিষদের টিকিট দেয় দল। এ বার ভক্তিবাবুকে সরিয়ে মাস্টারমশাইকে বার্তা দেওয়া হল। এক অর্থে পঞ্চায়েত ভোটের আগে বেচারামের জয় তো বটেই!”
বস্তুত, সিঙ্গুর ব্লক ও হুগলি জেলা স্তর থেকে ভক্তিবাবুর বিরুদ্ধে ছবি-সহ বিভিন্ন অভিযোগ জমা পড়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। সরকারি গোপন নথি সংবাদমাধ্যমের কাছে ‘ফাঁস’ করে দেওয়ার অভিযোগও উঠছিল। দলীয় তদন্তে তা প্রমাণিত হয়। এর পরেই রবীন্দ্রনাথবাবুর আপ্ত সহায়কের পদ থেকে ভক্তিবাবুকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী। রবীন্দ্রনাথবাবু এ প্রসঙ্গে শুধু বলেছেন, “আমি মন্ত্রগুপ্তির শপথ নিয়েছি। এই ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্তের কথা জানি না। আর জানলেও সংবাদমাধ্যমকে বলব না।”
|