পরিকল্পনায় ফাঁক, আধুনিক হয়েও ভুগছে নিকাশি
টা করে আধুনিকীকরণ হয়েছে নিকাশি নালার। যাতে বাড়ির বর্জ্য এবং নোংরা জল বয়ে যেতে পারে। কিন্তু সেই জল যে পথে বেরোবে, তারও যে সংস্কার জরুরি তা নিয়ে মাথাব্যথা নেই কারও। ফলে যা হওয়ার, তা-ই হয়েছে। জল বেরোনো দূরে থাক, উল্টে একটু বৃষ্টিতেই ভেসে যাচ্ছে এলাকার পথঘাট। স্রেফ ঠিকঠাক পরিকল্পনার (ডিপিআর) অভাবে ২৩৯ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্প সত্ত্বেও উত্তর ও মধ্য কলকাতার নিকাশির হাল সেই তিমিরেই। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করেছে ‘কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল’ (সিএজি)-ও। কেন্দ্রীয় সহায়তায় পুরসভার ওই কাজের সমালোচনা করে তারা রিপোর্ট দিয়েছে রাজ্য সরকারকে।
পুরসভা সূত্রের খবর, ওই এলাকার বাসিন্দাদের ব্যবহৃত জল ও অন্যান্য বর্জ্য রাস্তার নীচে ইটের কাঠামোর (ব্রিক স্যুয়ার) মধ্যে দিয়ে টাউন আউটফলে পড়ে। সেখান থেকে পামার ব্রিজ পাম্পিং স্টেশনের মাধ্যমে কুলটি নদীতে মেশে। পুরসভার এক ইঞ্জিনিয়ার জানান, উনবিংশ শতকের শেষ দিকে ওই ইটের কাঠামোর নিকাশি নালা তৈরি হয়েছে। ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তাতে নোংরা জল বয়ে চলায় নালায় প্রচুর পলি জমে যায়। ইটের কাঠামোও বহু জায়গায় ভেঙে যায়। নালা পরিষ্কারের (ডি-সিল্ট) জন্য কাঠামোটির আধুনিকীকরণে গ্লাস রিইনফোর্সড প্লাস্টিক (জিআরপি) লাইনার বসানোর সিদ্ধান্ত নেয় পুরসভা।
শহরের নিকাশি পরিকাঠামো উন্নয়নে ‘জওহরলাল নেহরু ন্যাশনাল আর্বান রিনিউয়াল মিশন’ (জেএনএনইউআরএম) প্রকল্পের টাকায় ২০০৮ সালে ওই কাজ শুরু করে পুরসভার পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগ। ২০১১ সালের মধ্যেই উত্তর ও মধ্য কলকাতার তিনটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা এপিসি রোড, এজেসি বসু রোড ও লেনিন সরণির নীচে প্রায় ১২ কিলোমিটার নালায় জিআরপি লাইনার বসানো শেষ হয়েছে। ওই তিন রাস্তার নীচের নালা এসে মিশেছে মৌলালির কাছে টাউন আউটফলে। পুরসভার এক ইঞ্জিনিয়ার জানান, সেখানে কিন্তু এখনও ৬-৭ ফুটেরও বেশি উচ্চতার পলি জমে রয়েছে তার পুরনো ইটের কাঠামোর মধ্যে। ফলে নোংরা জল সেখানে এসে আটকে যাচ্ছে।
পুরসভার পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দফতরের এক ইঞ্জিনিয়ারের কথায়, “পরিকল্পনার মধ্যে টাউন আউটফলের বিষয়টি ধরে নিলে ভাল হত। কিন্তু তা করা হয়নি।” কেন করা হয়নি, তার কোনও জবাব অবশ্য দিতে পারেননি তিনি। তবে টাউন আউটফলের কাজ না হওয়ায় আধুনিকীকরণের সুফল যে মিলবে না, তা জানাতে দ্বিধা করেননি ওই ইঞ্জিনিয়ার। তাঁর কথায়, “জল বেরোনোর পথ পরিষ্কার না হলে জল এনে তো কোনও লাভ হবে না।” যার অর্থ, কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলা আধুনিকীকরণের কোনও সুফলই পাচ্ছেন না শহরবাসী। ঠিক এই জায়গাটাই তাদের অডিটে তুলে ধরেছে সিএজি। সিএজি-র রেসিডেন্ট অডিট অফিসার লিখেছেন, ডিপিআরে টাউন আউটফল ডি-সিল্ট করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়নি। এতে ওই তিন রাস্তার নীচে লাগানো জিআরপি লাইনার দিয়ে জল দ্রুত এলেও টাউন আউটফলে এসে আটকে কমে যাচ্ছে তার গতি। ফলে জল জমে যাচ্ছে, বাড়ছে পলি। সিএজি-র বয়ানে, এ সবের কারণেই ২৩৯ কোটি টাকা ব্যয়ের ওই প্রকল্প পূর্ণতা পায়নি।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.