সেনা অভ্যুত্থানে গদিচ্যুত মিশরের প্রেসিডেন্ট মুরসি
সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত মিশরের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুরসি।
হোসনি মুবারক প্রেসিডেন্ট ছিলেন চার দশক। গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত হয়ে আসা মিশরের প্রথম প্রেসিডেন্ট মুরসিকে সরতে হল গদিতে বসার ঠিক এক বছর পরেই। সামরিক বাহিনীর সর্বাধিনায়ক আবদেল ফাতাহ এল-সিসি জানান, দেশের সাংবিধানিক আদালতের প্রধানই আপাতত অন্তর্বর্তী রাষ্ট্রপ্রধানের ভার সামলাবেন। দেশের সংবিধান স্থগিত রাখা হয়েছে। পরবর্তী কালে নির্বাচনের মাধ্যমে বেছে নেওয়া হবে পরবর্তী প্রেসিডেন্টকে।
গত কয়েক দিন ধরে চলতে থাকা বিক্ষোভের মুখে নতিস্বীকার করে মঙ্গলবারের মধ্যে মুরসিকে ইস্তফা দিতে বলেছিল সেনা। কিন্তু টিভি বক্তৃতায় মুরসি জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি পদ ছাড়ছেন না। তাহরির স্কোয়ারে ভিড় ছিলই। সময়সীমা পেরোতে ভিড় দ্রুত বাড়তে থাকে। হুবহু মুবারক-বিরোধী বিক্ষোভের ছবিটাই যেন ফিরে আসে। তাহরির স্কোয়ারে তখন তিলধারণের জায়গা নেই। সেনা কী পদক্ষেপ করে, সে দিকেই নজর ছিল বিক্ষোভকারীদের। সময়সীমা ফুরোতেই সেনার তৎপরতাও শুরু হয়ে গিয়েছিল। রাস্তায় নেমে পড়ে ট্যাঙ্ক আর সাঁজোয়া গাড়ি। অফিসের কাছে যে ভবনটি থেকে মুরসি প্রশাসনিক কাজকর্ম চালাচ্ছিলেন, সেটি কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে ফেলে সেনা। মুরসি-সহ তাঁর দল মুসলিম ব্রাদারহুডের শীর্ষ নেতাদের দেশ ছাড়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়।
মুরসি-পতনে বিক্ষোভকারীদের উল্লাস। বুধবার তাহরির স্কোয়ারের সামনে। ছবি: রয়টার্স।
ইতিমধ্যে শোনা যায়, টেলিভিশন কেন্দ্রও চলে গিয়েছে সেনার দখলে। সেনার হেলিকপ্টারকে চক্কর কাটতে দেখে তাহরির স্কোয়ার উল্লাসে ফেটে পড়ে। ফাটতে থাকে আতসবাজি। মুরসির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এসাম এল-হাদ্দাদ সেই সময়েই ফেসবুকে লিখেছিলেন, “বলতেই হচ্ছে, এটা সামরিক অভ্যুত্থান।” সেনা অবশ্য শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তাদের গতিবিধিকে ‘অভ্যুত্থান’ বলতে চায়নি। তবে সামরিক বাহিনীর প্রধান জানিয়েছেন, মুরসিকে উৎখাত করে তাঁরা ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছেন। “জনতা যা চেয়েছিল, সেই লক্ষ্য তিনি পূরণ করতে পারেননি।” বলেছেন তিনি। টিভি বক্তৃতার পর থেকে গোটা সময়টায় মুরসির অবশ্য দেখা মেলেনি। তবে আড়ালে থেকে তিনি সমর্থকদের আর্জি জানিয়েছিলেন, শান্তিপূর্ণ ভাবে ‘অভ্যুত্থানের’ মোকাবিলা করার জন্য। শেষ মুহূর্তেও অর্ন্তর্বর্তী জোট সরকার গড়ার প্রস্তাব দিয়ে গদি বাঁচাতে চেয়েছিলেন মুরসি। লাভ হয়নি। রক্তপাতশূন্য অভ্যুত্থানে সরতে হয়েছে তাঁকে।
আর এক সন্ধিক্ষণ: বুধবার তাহরির স্কোয়ারের সামনে। ছবি: এপি।
সংবাদসংস্থা জানিয়েছে, মুরসি-পরবর্তী মিশরের গতিপথ স্থির করতে মুসলিম ও কপটিক খ্রিস্টান ধর্মগুরুদের পাশাপাশি বিরোধী দলনেতা মহম্মদ এলবারাদেই ও অন্য নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসে সেনা। তার পরেই মুরসি জমানার অবসানের কথা ঘোষণা করা হয়। সামরিক বাহিনীর প্রধান, ধর্মগুরুরা, এলবারাদেই প্রত্যেকেই নিজেদের বক্তব্য জানান। জায়ান্ট স্ক্রিনে তাঁদের বার্তা পেয়ে আবার ফেটে পড়ে তাহরির স্কোয়ার। তবে গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত প্রথম প্রেসিডেন্ট এক বছরের মধ্যে গদিচ্যুত হওয়ায় ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্নটা রয়েই যাচ্ছে।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.