ধানখেতে মিলল এক বৃদ্ধার রক্তাক্ত মৃতদেহ। কালনার এই ঘটনায় মৃতকে নিজেদের সমর্থক দাবি করে সিপিএমের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। মৃতের ছেলেও বুধবার বিকেলে কালনা থানায় অভিযোগ করেন, সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই খুন করেছে তাঁর মাকে। সিপিএম যদিও এই ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনও যোগের কথা মানেনি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কালনা ২ ব্লকের পিন্ডিরা পঞ্চায়েতের পাথরঘাটা গ্রামে মঙ্গলবার মনসা পুজো ছিল। সেই উপলক্ষে সেখানকার আদিবাসী পাড়ায় সেই সন্ধ্যায় নাচগানের অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছিল। ওই পাড়ার বাসিন্দা রঞ্জু হাঁসদা জানান, তাঁর মা সুমি হাঁসদা (৬৫) অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরোন। আর ফেরেননি। বুধবার সকালে বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ঝাঁপানতলা এলাকায় তাঁকে রক্তাক্ত ও অর্ধনগ্ন অবস্থায় জমিতে পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে দেহ উদ্ধার করে।
পুলিশ জানায়, দেহের নানা জায়গায় ক্ষত রয়েছে। প্রাথমিক অনুমান, ওই বৃদ্ধাকে মাটির উপর দিয়ে বেশ খানিকটা টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এ দিন বিকেলে কালনা মহকুমা হাসপাতালে ময়না-তদন্ত হয়। তার পরেই রঞ্জুবাবু পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, তাঁর মাকে খুন করেছে সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা।
কালনা ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি প্রণব রায়ের অভিযোগ, “দীর্ঘ দিন ধরে ওই এলাকায় সিপিএম অশান্তির বাতাবরণ তৈরি করছে। পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার পর থেকেই আমাদের ফেস্টুন-পতাকা ছিঁড়ে দেওয়া হচ্ছে। আমাদের ধারণা, পরিকল্পিত ভাবেই আদিবাসী ওই বৃদ্ধাকে ধর্ষণের পরে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। আমরা পুলিশের কাছে দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছি।”
সিপিএমের কালনা ২ ব্লক পূর্ব লোকাল কমিটির সম্পাদক মহম্মদ আলির অবশ্য দাবি, “এর সঙ্গে আমাদের কেউ জড়িত নয়। তৃণমূল আষাঢ়ে গল্প ফাঁদছে। আমাদের অনুমান, ওই বৃদ্ধাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। দোষীদের ধরে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।” পুলিশ জানায়, ধর্ষণের কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। ময়না-তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার আগে এ ব্যাপারে কিছু বলা সম্ভব নয়। জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “একটি খুনের মামলা দায়ের হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।” |