বুদবুদের চাকতেঁতুল
রাস্তার পিচ উধাও, ধুয়েছে মোরামও
রাস্তা জুড়ে প্যাচপেচে কাদা, খানাখন্দ, জমা জল- চেনাই দায় যে এককালে এটা পিচ রাস্তা ছিল। শুধু তাই নয়, পিচ উঠে যাওয়ার পরে পঞ্চায়েতের তরফে মোরাম দেওয়া হয়। কিন্তু বর্ষা নামতেই মোরাম ধুয়ে রাস্তার অবস্থা বেহাল। বুদবুদের চাকতেতুঁল গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, মোরামের মান ভাল না হওয়াতেই এই অবস্থা। এ ছাড়া নিকাশি ব্যবস্থাও ভাল না হওয়ায় নদর্মার জল উপচে রাস্তায় আসে বলে তাঁদের দাবি।
পানাগড় থেকে চাকতেঁতুল আসা-যাওয়ার মূল রাস্তাটি সেচ দফতর, প্রতিরক্ষা দফতর ও রেলের আওতাধীন। এর সঙ্গেই চাকতেঁতুল গ্রামের পশ্চিমপাড়ার কাছের ওই রাস্তাটি দিয়েও পানাগড় যাওয়া যায়। সারাদিন ধরেই অজস্র বাস, লরি, ছোট গাড়ি চলাচল করে এই রাস্তায়। এলাকাবাসীরা জানান, সাত বছর আগে রাস্তাটি তৈরি হয়। প্রথম কয়েকবছর ভাল থাকলেও গত দু’এক বছর ধরে রাস্তাটি ভাঙতে শুরু করে। ধীরে ধীরে চলাফেরা করাই দায় হয়ে পড়ে। পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের কাছেও রাস্তাটি সারানোর জন্য বারবার আবেদন জানান গ্রামবাসীরা। গ্রামের পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা নিরুপদ বাগ্দি, মানিক বাগ্দি, পরিমল বাগ্দিরা জানান, বারবার আবেদন করার পরে কয়েকদিন আগে পঞ্চায়েতের তরফে রাস্তায় মোরাম দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাতে উল্টে আরও সমস্যায় পড়ে গিয়েছেন গ্রামের মানুষ। তাঁরা জানান, এমনই মোরাম দেওয়া হয়েছে যা একটু বৃষ্টিতেই ধুয়ে যাচ্ছে।
বোঝা দায়, এক সময়ে পিচ ছিল এই রাস্তায়। —নিজস্ব চিত্র।
এছাড়া পুরো রাস্তা জুড়ে মোরাম দেওয়াও হয়নি। ফলে লরি বা গাড়ির চাকার সঙ্গে মোরাম উঠে রাস্তাটি আবার পুরনো হালেই ফিরে যাচ্ছে বলে গ্রামবাসীদের দাবি। রণডিহার বাসিন্দা তথা বনগ্রাম প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক সুব্রত ঘোষ বলেন, “আমি রোজ এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করি। গোটা রাস্তার অবস্থাই করুণ। তবে চাকতেঁতুলের পশ্চিমপাড়ায় মোরাম দেওয়ার ফলে কাদার হয়ে গিয়ে রাস্তার উপর দিয়ে গাড়ি নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না।” রণডিহার আর এক বাসিন্দা অরূপ জানা জানান, রণডিহার রুইদাস পাড়া ও চাকতেঁতুলের পশ্চিমপাড়ায় নতুন মোরাম দেওয়ার ফলে মোটরসাইকেল ফেঁসে যাচ্ছে। গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, মোরামের মান যদি একটু ভালো হত তাহলে হয়ত এমন অবস্থা হত না। তাঁদের দাবি, রাস্তাটি যদি ফের পিচের করা হয় তাহলে খুবই সুবিধা হয়। গাড়িগুলিও ঠিকভাবে চলতে পারে। তাঁরা আরও জানান, ঠিকভাবে সাফাই না হওয়ায় নর্দমার জল রাস্তায় উপচে পড়ছে। ফলে রাস্তায় দেওয়া মোরাম ওই জলে বয়ে যাচ্ছে।
চাকতেঁতুল পশ্চিমপাড়ার ময়না বাগ্দি, সিদ্ধেশ্বরী বাগ্দিদের অভিযোগ, কাদা শুধু রাস্তায়তেই জমে থাকে না। চলন্ত গাড়ির চাকায় সেই কাদা ছিটকে তাঁদের বাড়ির মধ্যেও ঢুকে যায়। তাঁরা বলেন, “রাস্তা দিয়ে গাড়ি যাওয়ার সময় যদি দরজা খুলে খেতে বসি তাহলে রাস্তার কাদা খাবারের থালায় ছিটকে আসে।” রাস্তার এই অবস্থার জন্য স্থানীয় ঠিকাদারদেরও দোষ দেন গ্রামের বাসিন্দারা । তাঁদের অভিযোগ, স্থানীয় ঠিকাদারদের বরাত দেওয়ার ফলে তাঁরা গ্রামের মানুষের কথা শোনেন না। ইচ্ছামতো কাজ করেন। কেউ কিছু বলতে গেলেও পাত্তা দেন না। তাঁদের দাবি, বাইরে থেকে ঠিকাদার এনে রাস্তার কাজ করতে হবে। তবে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা অবশ্য এই অব্যবস্থার জন্য তৃণমূল পরিচালিত চাকতেঁতুল পঞ্চায়েতকেই দায়ী করেছেন। বিজেপি নেতা সুরজিৎ দত্ত বলেন, “পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ কোনও কিছু না ভেবেই রাস্তার এই অংশে মোরাম দিয়েছে। খারাপ মোরামের জন্য রাস্তাতে এটি বসেওনি। তাই অল্প বৃষ্টিতে কাদা হয়ে যাচ্ছে।” তিনি আরও জানান, পাশের নর্দমাগুলিও ঠিকমতো পরিস্কার না হওয়ায় জল নিকাশি হচ্ছে না। নর্দমার ওই জল রাস্তার উপর বইছে।
চাকতেঁতুল পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান আভা ভট্টাচার্য জানান, বর্ষাকালে মোরামের মান খুব একটা ভাল হয় না। রাস্তার বেহাল অবস্থা এই মূহুর্তে ঠিক করতে এর থেকে ভাল মোরাম পাওয়া যাবে না। নর্দমা সংস্কারের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যখন টাকা এসেছিল তখন নর্দমা সংস্কার হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে নর্দমা সংস্কারের কোনও টাকা নেই।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.