উরুর পিছন দিকে মাংসপেশী, হাড়, রক্তনালীর সঙ্গে প্রায় জড়িয়ে ছিল টিউমারটি। চিকিৎসা পরিভাষায় এর নাম ‘লিয়োমায়ো সার্কোমা’। একাধিক চিকিৎসক পরীক্ষা করে জানিয়ে দিয়েছিলেন, অস্ত্রোপচার করা কোনওমতেই সম্ভব নয়। যদি অস্ত্রোপচার করাও হয়, তা হলে পা কেটে বাদ দিতে হবে। কেমোথেরাপিতেও কাজ হবে না, তাই স্রেফ যন্ত্রণা উপশমের ব্যবস্থা করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। জীবনের আশা যখন প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন হাওড়ার শিবপুরের বাসিন্দা এষা চট্টোপাধ্যায় (৫৬), তখন কলকাতারই এক বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তাঁকে নতুন জীবন দিলেন। ক্যানসার শল্য চিকিৎসক সৈকত গুপ্ত এবং কার্ডিওথোরাসিক সার্জেন মনোজ দাগার নেতৃত্বে এই অস্ত্রোপচারটি হয়েছে। সৈকত গুপ্ত বলেন, “হৃৎপিণ্ড থেকে যে অ্যায়োর্টা নামছে, কোমরের কাছে এসে সেটি দুই ভাগে বিভক্ত হয়। ক্যানসারবাহী টিউমারটি ওই মূল ধমনীকেও জড়িয়ে ছিল। সেটি বাদ দিতে গিয়ে রক্তনালীর কিছু অংশ পুনর্গঠিত করতে হয়েছে। কোথাও কৃত্রিম গ্রাফট দিয়ে, কোথাও আবার অন্যান্য রক্তনালীর অংশ নিয়ে এটা করা হয়েছে।” এষাদেবীর ছেলে বিশ্বরূপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ক্যানসারমুক্তি ঘটাতে গেলে মায়ের পা বাদ যাওয়ার ভয় ছিল। সেটা হয়নি। মা এখন হাঁটতে পারছেন। আমাদের কাছে এটা খুব বড় পাওয়া।”
|
আরামবাগের মাদ্রা গ্রামে ডায়েরিয়ার প্রকোপ বাড়ছে। গত শুক্রবার থেকে বিক্ষিপ্ত ভাবে কয়েক জন আক্রান্ত হলেও রবিবার রাত থেকে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫০ জন। মঙ্গলবার পর্যন্ত দফায় দফায় ২৬ জনকে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আরামবাগ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অমিত দাস বলেন, “গ্রামে মেডিক্যাল টিম আছে। গ্রামবাসীদের প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। আতঙ্কের কারণ নেই।” ব্লক স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, তপসিলি সম্প্রদায় অধ্যুষিত মাদ্রা গ্রামে ডায়েরিয়ার অন্যতম কারণ স্থানীয় দু’টি পুকুরের জলদূষণ। তা ছাড়া, জলের কলের গোড়া বাঁধানো না থাকায় সমস্যা আরও বেড়েছে। পুকুরের পাড়ে যত্রতত্র মলমূত্র ত্যাগ করেন এলাকার লোকজন। বৃষ্টিতে তা পুকুরের জলে মিশেছে। ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের তরফে ওই দু’টি পুকুরের জল দূষণমুক্ত করতে মঙ্গলবার ব্লিচিং ছড়ানো হয়। অন্য দিকে, এ দিনই জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতর থেকেও পানীয় জলের কলে ব্লিচিং ফেলা হয়েছে। আশা কর্মীদের অভিযোগ, বর্ষার শুরুতে ডায়েরিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রেগুলিতে প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ নেই বললেই চলে। মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক সিদ্ধার্থ বসু বলেন, “ওষুধ যা মজুত আছে তাতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। খোঁজ নেওয়া হবে।” |