ঘর এক প্রার্থী তিন, হাতে রইল আশা
কই বাড়িতে তিনটি ‘হাত’।
একটি হাতে গ্রাম পঞ্চায়েতের টিকিট, দ্বিতীয় হাতে পঞ্চায়েত সমিতির, তৃতীয়ে জেলা পরিষদের। মন্তেশ্বরের ফজলপুরে মণ্ডলবাড়ি থেকে হাত চিহ্নে লড়ছেন তিন জন। পূর্বস্থলীর ভাণ্ডারটিকুড়ি গ্রামের দে বাড়িতেও তিন এক্কে তিন তাস!
মন্তেশ্বর ব্লকের জামনা পঞ্চায়েত এলাকার ফজলপুর গ্রামের তরুণ মণ্ডল কংগ্রেস প্রার্থী হয়েছেন জেলা পরিষদে। তাঁর স্ত্রী অজন্তাদেবী পঞ্চায়েত সমিতির সংরক্ষিত আসনের প্রার্থী। জামনা গ্রাম পঞ্চায়েতে আবার প্রার্থী তাঁদের বৌদি, তরুণবাবুর দাদা তাপস মণ্ডলের স্ত্রী শ্যামলীদেবী।
এই বাড়ি থেকে ভোটযুদ্ধে হাত নিয়ে ‘হাতাহাতি’ করতে যাওয়া অবশ্য নতুন নয়। তরুণবাবুর মা মহামায়া মণ্ডল আগেই গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির আসনে এক বার লড়ে ফেলেছেন। ২০০৮ সালে পঞ্চায়েত সমিতির আসনে লড়াই দিয়েছিলেন তরুণবাবু। তবে আজ পর্যন্ত জেতেননি কেউই।
তবু কেন একেবারে তিন-তিনটে টিকিট? মন্তেশ্বর ব্লক কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তরুণবাবুর দাবি, প্রার্থী নির্বাচনের আগে দলীয় বৈঠকে ঠিক হয়েছিল, দলের প্রতি আনুগত্যের নিরিখেই টিকিট দেওয়া হবে। এর আগে দলের জয়ী প্রার্থীদের অনেকেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এই অবস্থায় তাঁদের পরিবারের আনুগত্য বিচার করেই ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব তিন জনকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তবে মন্তেশ্বর তৃণমূল ব্লক সভাপতি সজল পাঁজার কটাক্ষ, “ব্লকের বহু এলাকা রয়েছে, যেখানে কংগ্রেসের নামমাত্র লোকও নেই। জামনা পঞ্চায়েতেও ওদের অবস্থা খারাপ। আসলে প্রার্থী না পেয়েই কংগ্রেসকে এক পরিবার থেকে তিন জনকে দাঁড় করাতে হয়েছে।” এ বার মন্তেশ্বরে গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৭৬টি আসনের মধ্যে ৩৮টি, পঞ্চায়েত সমিতির ৩৭টি আসনের মধ্যে ১৪টি এবং জেলা পরিষদের ৩টি আসনেই প্রার্থী দিয়েছে কংগ্রেস। বিপক্ষের বিদ্রূপ অতএব জামা ঝেড়ে ফেলে দিতে পারছেন না কেউই।
পূর্বস্থলী ১ ব্লকের জাহান্নগর পঞ্চায়েতের ভাণ্ডারটিকুরি গ্রামে দে পরিবার থেকে আবার ‘হাত’ তুলেছেন বাবা-মা-ছেলে। জেলা পরিষদের ৩৫ নম্বর আসনে কংগ্রেস প্রার্থী বাড়ির কর্তা পরিমল দে। তাঁর স্ত্রী পার্বতীদেবী পঞ্চায়েত সমিতির ৬ নম্বর আসন থেকে এবং ছেলে প্রকাশ গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৪ নম্বর আসনে লড়াই দিতে নেমেছেন। কংগ্রেসের জেলা সাধারণ সম্পাদক সুশীল ধরের ব্যাখ্যা, “তৃণমূল এবং সিপিএমের চাপে ওই এলাকায় প্রার্থী পেতে আমাদের অসুবিধা হচ্ছিল। তাই এক পরিবার থেকে তিন জনকে মনোনীত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।”
তৃণমূল এবং সিপিএম অবশ্য অভিযোগ মানতে নারাজ। পূর্বস্থলী উত্তর কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক তপন তট্টোপাধ্যায়ের দাবি, “আসল কথা খুলে বলতে কংগ্রেসের লজ্জা হচ্ছে। ছোট হতে-হতে ওদের এখন দূরবীনেও দেখা যাচ্ছে না। প্রার্থী না পেয়ে বাধ্য হয়েই ওদের এক পরিবার থেকে তিন জনকে বাছতে হয়েছে।” সিপিএমের পূর্বস্থলী জোনাল সম্পাদক সুব্রত ভাওয়ালের বক্তব্য, “কংগ্রেসের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। বরং বহু জায়গায় আমরাই শাসকদলের হাতে আক্রান্ত।”
যে কারণেই দাঁড়িয়ে থাকুন, শেষে কী? জিতবেন?
তরুণবাবুর কথায়, “পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদের আসন নিয়ে আশাবাদী। আর গ্রাম পঞ্চায়েতে তো তৃণমূল এবং বামেদের কোন্দল রয়েছে। তার সুফলও আমরা পাব।” কাঁটাছেড়া করে নিরাশ হওয়ার কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না পরিমলবাবুরাও।
আপাতত আশা আঁকড়েই ভোট দরিয়ায় ভাসছে তিন জোড়া হাত।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.