|
|
|
|
শাসনের জের |
খুনের চক্রান্ত সিপিএমের, এ বার নালিশ খাদ্যমন্ত্রীর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
হামলা ও খুনের চক্রান্তের অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগে সিপিএম-তৃণমূল ম্যাচে ফল ২-১! শাসকদলের পক্ষেই।
গত ২৭ জুন (বৃহস্পতিবার) মজিদ মাস্টারের স্ত্রী আসফ নুর বেগমের হয়ে প্রচারের সময় শাসনে বাম মহিলা সংগঠনের নেত্রীদের উপরে হামলা হয়। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। খাদ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলের উত্তর ২৪ জেলার পর্যবেক্ষক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে শনিবার বারাসত থানায় লিখিত অভিযোগ করেন প্রাক্তন মন্ত্রী রেখা গোস্বামী, আসফ নুর বেগমেরা। ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই রেখা গোস্বামী, প্রাক্তন ক্রীড়ামন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তীর স্ত্রী রমলা চক্রবর্তী, ইলা নন্দী, সিপিএম নেতা রবীন দেব, অমিতাভ নন্দীর বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ আনলেন খাদ্যমন্ত্রী।
রবিবার বারাসত থানায় লিখিত অভিযোগে খাদ্যমন্ত্রীর দাবি, ওই সিপিএম নেতা-নেত্রীরা তাঁকে খুনের চক্রান্ত করছেন। সেই উদ্দেশ্যে শাসন এলাকার সিপিএম নেতা তথা দুষ্কৃতী কুতুবুদ্দিন আহমেদ ও ইজরায়েল-সহ সাত জনকে নিয়োগ করা হয়েছে। সিপিএমের অবশ্য বক্তব্য, শাসনে সিপিএম ঢুকলে মহিলারা আঁশবঁটি আর লাঠি নিয়ে তৈরি থাকবেন বলে এর আগে খাদ্যমন্ত্রী একাধিকবার হুমকি দিয়েছেন। সেই সূত্রেই শাসনে দলীয় নেত্রীদের আক্রান্ত হওয়ায় জ্যোতিপ্রিয়বাবুর বিরুদ্ধে প্ররোচনার অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এ বার সে জন্যই তিনি পাল্টা অভিযোগ করেছেন বলে দাবি সিপিএমের। এর আগে বারুইপুরে পঞ্চায়েত সমিতির এক তৃণমূল প্রার্থীর খুনের ঘটনায় সিপিএমের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক সুজন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে তৃণমূলের আনা চক্রান্তের অভিযোগ সেই ‘প্রতিহিংসার রাজনীতি’র ফসল বলেই সিপিএম অভিযোগ করছে।
এফআইআরে জ্যোতিপ্রিয়বাবুর দাবি, ২৭ জুন শাসনের সর্দারহাটিতে রেখা গোস্বামী, ইলা নন্দী ও রমলা চক্রবর্তীর নেতৃত্বে সিপিএম মিছিল করেছিল। মিছিলের পুলিশি অনুমতি ছিল না। কারণ, ওই দিন বিডিও সভা করার অনুমতি দিয়েছিলেন তৃণমূলকে। তবু, সেখানে সিপিএম প্রচুর অস্ত্র নিয়ে ঢুকেছিল। সিপিএমের তিন নেত্রীর নেতৃত্বে শ’দেড়েক দলীয় লোক ওখানে হামলার উদ্দেশ্যেই গিয়েছিল বলে তাঁর দাবি। তাঁর আরও অভিযোগ, “জনতা ঘেরাও করলে মিছিলে থাকা একটি গাড়ির চালক গুলি চালায়। এর পর সিপিএমের লোক হামলা চালায়। কয়েক জন তৃণমূল কর্মী জখম হন।”
তবে, ঘটনার তিন দিন পরে কেন এফআইআর, তার জবাবে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “সন্দেশখালি, হাসনাবাদে ভোটের প্রচারে ব্যস্ত ছিলাম। রবিবার সকালে ফিরেই অভিযোগ করেছি।”
সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রেখাদেবীর প্রতিক্রিয়া, “কোনও মন্তব্য না করাই এমন অভিযোগের উপযুক্ত জবাব।” সিপিএমের যে নেত্রীরা ওই দিন শাসনে গিয়েছিলেন, তাঁদের সকলেরই বক্তব্য, তাঁদের প্রচার-গাড়ি ছিল হুড খোলা। ওই হুড খোলা গাড়ির চাবি কেড়ে নিয়েছিল তৃণমূল। পুলিশ এসে চাবিহীন অবস্থাতেই গাড়িটি দেখে। গাড়িতে অস্ত্র থাকলে তখনই ধরা পড়ত। তা হলে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে শাসনে খুন করতে যাওয়ার অভিযোগ কী ভাবে উঠছে, প্রশ্ন সিপিএমের। দলের অমিতাভ নন্দী বলেন, “ওঁর (খাদ্যমন্ত্রী) ও সব কথা মানুষ বিশ্বাস করেন না। ওঁর দলের কর্মীরাও বিশ্বাস করেন না। ওঁর উপরে কারও আস্থা নেই।” তাঁর হুঁশিয়ারি, “পুলিশ-প্রশাসনকে বলব, এই ধরনের ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকলে ফল ভাল হবে না। এই সরকার তো চিরদিন থাকবে না!” এই এই এফআইআরের মোকাবিলায় সিপিএম কী পদক্ষেপ করবে? অমিতাভবাবুর জবাব, “সাজানো মামলায় কী পদক্ষেপ করব? ধরুক না পুলিশ! তার পর দেখা যাবে। আমরা ওই অভিযোগকে গুরুত্বই দিচ্ছি না।”
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রবীন দেব বলেন, “সিপিএমের সঙ্গে কেমন ব্যবহার করতে হবে, তা নিয়ে ওই মন্ত্রী দিনের পর দিন ফতোয়া দিয়েছেন। বিষধর সাপ আখ্যা দিয়ে কী ভাবে সিপিএমের লোকজনকে পিটিয়ে মারতে হবে, সেই দাওয়াইও প্রকাশ্য সভায় বলেছেন। পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে কানমলা খাওয়ার হতাশা থেকে সেই মন্ত্রীই এমন আষাঢ়ে অভিযোগ করছেন!”
|
পুরনো খবর: শাসনেই আক্রান্ত হলেন মজিদ মাস্টারের স্ত্রী, অভিযুক্ত শাসক দল |
|
|
|
|
|