এক মহিলাকে ধর্ষণের পরে খুনের চেষ্টার অভিযোগকে কেন্দ্র করে ক্ষোভে ফেটে পড়ল নদিয়ার নাকাশিপাড়ার দোগাছি ঘোষপাড়ার মানুষ। ভাঙচুর করা হয়েছে পুলিশের একটি গাড়িও।
রবিবার সকালে মধ্য চল্লিশের এক মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে হায়দার মোল্লা নামে স্থানীয় এক যুবকের বিরুদ্ধে। অচৈতন্য অবস্থায় ওই মহিলাকে বেথুয়াডহরি গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারপর থেকেই এলাকা উত্তপ্ত হয়ে উঠতে থাকে। অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতারের দাবিতে স্থানীয় বাসিন্দারা গাছা-পাটপুকুর রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। তখন পুলিশের একটি গাড়িও ভাঙচুর করে ক্ষুব্ধ জনতা। নদিয়ার পুলিশ সুপার সব্যসাচীরমণ মিশ্র বলেন, “ওই মহিলাকে ধর্ষণের পরে গলায় কাপড় দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুনের চেষ্টাও হয়েছে বলে অভিযোগ। তদন্ত শুরু হয়েছে।’’ তিনি বলেন, “এক ব্যক্তি বাঁশ দিয়ে পুলিশের গাড়ির কাচ ভেঙেছে। তাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। গ্রেফতারও করা হবে।” |
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিনের মতো এ দিনও সকাল দশটা নাগাদ নদীতে স্নান করতে যাচ্ছিলেন ওই মহিলা। তখন একটি নির্জন জায়গায় টেনে নিয়ে গিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করা হয়। গ্রামবাসীরাই পরে ওই মহিলাকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ওই মহিলার শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হায়দারের নামে এর আগেও এমন বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছিল। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছিল। মাঝে সে কিছুদিন জেলেও ছিল। তার খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।
এই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোরও। তৃণমূলের জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত বলেন, “অভিযুক্ত যুবক সিপিএমের সমর্থক। তার বিরুদ্ধে আগেও এরকম একাধিক অভিযোগ উঠেছে। এ দিন ওই যুবককে গ্রেফতারের দাবিতে জনরোষ তৈরি হয়েছিল। তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। এটাই স্বাভাবিক। ওই যুবকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুমিত দে-র কথায়, “বিষয়টি দল বা রঙের নয়। এমন কাজ যে করেছে পুলিশ তদন্ত করে তার উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করুক। এমন বিষয়ে প্রতিবাদ অবশ্যই করা দরকার।
তবে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর আমরা সমর্থন করি না।’’
এই জেলারই কালীগঞ্জের গোবিন্দপুরে শনিবার এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত সুজিত ঘোষ একরত্তি ওই মেয়েটিকে পাট খেতে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে পালিয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে সেই অবস্থায় দেখতে পেয়ে প্রথমে পানিঘাটা প্রাথমিক স্বাস্থকেন্দ্রে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি ঘটলে কৃষ্ণনগরের সদর হাসপাতালে তাকে স্থানান্তরিত করা হয়। ওই দিন বিকেলে চারটে থেকে ঘণ্টা চারেক ধরে গোবিন্দপুর মোড় এলাকায় জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ধর্ষিতার বাবা বলেন, “মেয়ে হাসপাতালে ভর্তি। অপরাধীকে গ্রেফতার করে পুলিশ দ্রুত শাস্তির ব্যবস্থা করুক।”
এ দিন পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। |