এ বার মাধ্যমিক পাশ করেছে। আরও পড়াশোনা করতে চায় সে। কিন্তু ইচ্ছে থাকলেও বাবা-মা তার বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে। এই চিঠি পেয়ে ওই কিশোরীর বিয়ে রোখার ব্যবস্থা করেন মহকুমাশাসক। শুধু তাই নয়, একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ব্যবস্থাও করে দেন তিনি। ঘটনাটি বীরভূমের মহম্মদবাজার থানার কাপাসডাঙা গ্রামের।
দিন তিনেক আগে সিউড়ি সদর মহকুমাশাসক চন্দ্রনাথ চৌধুরীকে লেখা চিঠিতে ওই নাবালিকা জানিয়েছে, ‘আমার বয়স ১৬। আমি পড়াশোনা করতে চাই। কিন্তু বাবা জোর করে বিয়ে দিচ্ছেন। এই বিয়ে আটকে আমাকে উদ্ধার করুন। না হলে আমি আত্মহত্যা করব।’ চন্দ্রনাথবাবু বলেন, “মহম্মদবাজার-সহ কয়েকটি জায়গায় এখনও অনেক অভিভাবক সচেতন নন। সমাজের শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষজনদের এ ব্যাপারে আরও এগিয়ে আসা উচিত। তবে শুক্রবার ডাকে ওই চিঠি পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে মহম্মদবাজারের বিডিও এবং ওসিকে ব্যবস্থা নিতে বলি।”
বিডিও সুমন বিশ্বাস শনিবার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার স্থানীয় কো-অর্ডিনেটর অনিতা পালের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সুমনবাবু বলেন, “ওই দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ যুগ্ম বিডিও দীপক ঘোষ, ওসি দেবব্রত সিংহ ও অনিতাদেবী ওই কিশোরীর বাড়ি যান।
সেখানেই পাত্রপক্ষকে ডেকে নেওয়া হয়েছিল। বোঝানোর পরে সকলেই মেনে নেন। ওই কিশোরীর ইচ্ছার কথা কাপাসডাঙা খাদেম হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককেও জানানো হয়।” ওই স্কুল থেকে এ বার সে মাধ্যমিক পাশ করেছে। ফোন পেয়েই প্রধান শিক্ষক সাজ্জাদ হোসেন ফর্ম হাতে নিয়ে ওই কিশোরীর বাড়িতে চলে আসেন।
মেয়েটির বয়সের কথা তাঁরা জানতেন না বলে দাবি পাত্রপক্ষের। মেয়ের বাড়ি থেকে আগাম যা কিছু পেয়েছিলেন, তা তাঁরা ফিরিয়ে দেবেন বলেও জানিয়েছেন। কিশোরীর বাবার কথায়, “রবিবার বিয়ে ছিল। তবে অল্প বয়সে বিয়ে দেওয়া যায় না বা আইনি সমস্যা হতে পারে জানতাম না।” আর কিশোরীর প্রতিক্রিয়া, “আমি পড়তে চাই। সোমবার থেকে স্কুলে যাব।” সিউড়ির বিধায়ক তথা মহম্মদবাজার এলাকার বাসিন্দা স্বপন ঘোষ বলেন, “আমরা ওর পাশে আছি। এই প্রতিবাদ বহু নাবালিকার বিয়ে আটকাতে সহযোগিতা করবে।” অনিতাদেবী জানান, শনিবার ওই গ্রামেই আরও এক নাবালিকার বিয়ে আটকেছেন তাঁরা। আগামী বুধবার তার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। |