|
|
|
|
জীবন সহজ স্মার্টফোনে |
সময় বাঁচানো হোক, কী পয়সা। স্মার্টফোনই জেন ওয়াই-য়ের ভরসা। খোঁজ নিলেন অরিজিৎ চক্রবর্তী |
শ্রী কাক্কেশ্বর কুচ্কুচে-কে মনে আছে? সেই ‘হযবরল’-এর চরিত্র, যে বলেছিল, “আমাদের বাজারে সময় এখন ভয়ানক মাগ্গি, এতটুকু বাজে খরচ করবার যো নেই।”
জেন ওয়াই-এর বাজারেও তো তা-ই! লেকচার, কেএফসি, ফেসবুক, আইনক্স— সামলানোই তো মুশকিল!
তাই বলে তো আর পেনসিল হাতে বসে থাকলেও হবে না।
তবে রিপোর্ট কিন্তু বলছে হাতে একটা স্মার্টফোন থাকলে, এই বাজারেও খানিকটা সময় বাঁচানো যায়।
খানিকটা বললাম বটে, হ্যারিস ইন্টারঅ্যাক্টিভের সার্ভে রিপোর্ট কিন্তু বলছে বছরে ২২ দিন বাঁচিয়ে দিতে পারে স্মার্টফোন।
“অবশ্যই সময় বাঁচায়,” বলছিলেন ঐশী গঙ্গোপাধ্যায়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্রীই জানালেন, “কোন পেপারের কোন লেকচার কখন হবে এটা তো আগে থেকে ঠিক থাকে না। অনেক সময় খামোখা ইউনিভার্সিটিতে এসে বসে থাকতে হয়। একজন প্রোফেসরই খালি ফেসবুকে লেকচারের টাইম পোস্ট করে দেন। দশ বার করে ফোন করে শুনে নিতে হয় না লেকচার আজ আছে কি না। সবাই যদি এটা করতেন তবে কত সময়ই না বেঁচে যেত!”
সময় বাঁচানোর এই কেরামতি আসলে স্মার্ট ফোনের অ্যাপসের। রিপোর্টে বলছে আজকাল লোকে কমপক্ষে তিনটে অ্যাপস নিয়মিত ব্যবহার করেন— মেল, টেক্সট আর জিপিএস।
স্মার্টফোন না থাকলে স্বাভাবিক ভাবেই মেলের জন্য ভরসা ডেস্কটপ কম্পিউটার। তা-ও আবার তাতে ব্রাউজার খোলো, ইউজার আইডি-পাসওয়ার্ড দাও, লগ ইন করো, প্রতিবার কম্পিউটার ছেড়ে ওঠার সময় লগ আউট করো... সময়ের একদম বাজে খরচ! |
রাখতেই হবে |
|
|
|
|
তার বদলে একটা মেল অ্যাপস আর পুশ টু মেল অ্যাকাউন্ট থাকলে কথাই নেই। সময় বাঁচে, পরিশ্রমও। টেক্সট অ্যাপসের জন্য তো হোয়াটসঅ্যাপ আছেই।
আর জিপিএস? “বরাবরই আমার রোড সেন্স কম। শিলিগুড়িতে স্কুলিং হওয়ায় এখনও কলকাতার সব রাস্তা চিনি না। কিন্তু ম্যাপ অ্যাপস থাকায় কোনও ঠিকানাই আর আমার কাছে অচেনা থাকে না। ট্যাক্সিওয়ালাও আর ঠকাতে পারে না,” বলছিলেন সেন্ট জেভিয়ার্সের দ্বিতীয় বর্ষের মনীষা চট্টোপাধ্যায়।
তবে স্মার্ট ফোন যে শুধু সময়ই বাঁচায় তা কিন্তু নয়! পয়সাও বাঁচিয়ে দিতে পারে, যদি বুদ্ধি করে ফোনটাকে ব্যবহার করা যায়।
হোয়াটসঅ্যাপ-এর কথা তো আগেই বলেছি। এখন আবার তার সঙ্গে যোগ হয়েছে উই চ্যাটের মতো নানা অ্যাপস। এখন তো এই রকম ২৫টারও বেশি অ্যাপস আছে, যারা বিনা পয়সায় টেক্সট মেসেজ আদান-প্রদান করতে
দেয়। দরকার মোবাইলে শুধু ইন্টারনেট সংযোগ।
এই সব মোবাইল মেসেজিং অ্যাপসের বেশির ভাগই আবার বিনা খরচেই ইন্সটল করা যায়। আর সমস্ত মোবাইল মেসেজিং অ্যাপস মিলিয়ে মোট সদস্য সংখ্যা ২৫০ কোটি। ডেটা প্ল্যানের সঙ্গেই এমএসের খরচ চলে আসছে, ফলে পয়সাটা বেঁচেই গেল।
কেনাকাটাও অনেক সহজ করে দিচ্ছে শপ স্যাভি, রেড লেজার বা গ্রুপ অনের মতো অ্যাপসগুলো। গ্রুপ অনে যেমন কেনাকাটার বিভিন্ন সুযোগসুবিধা, এমনকী ছাড়গুলোও দেখতে পাবেন, তেমনই অন্য অ্যাপসগুলোতে একই জিনিসের সব থেকে কম দাম দেখাবে।
ব্যস, এ বার শুধু দোকানটা বেছে নেওয়াটাই থাকল আপনার দায়িত্বে। “আমার তো সব সময় গ্রুপ অন অন করা থাকে। ১০০ টাকায় ব্যুফে লাঞ্চের হদিশ আর কোথায় পাব?” হাসতে হাসতে জানালেন আশুতোষ কলেজের সুলগ্না দেব।
“নোটস দেওয়া নেওয়ার ক্ষেত্রেও কিন্তু এখন অনেক সুবিধা হয়ে গেছে। এখন আর কেউ ক্লাস কেটে সিনেমা দেখতে বা প্রেম করতে গেলে আর নোটস্ পাওয়ার জন্য মাথা খুঁড়তে হয় না। গুগল ড্রাইভ বা ড্রপ বক্স-এ নোটস্টা আপলোড করে দিলেই হল। অ্যাড্রেসটা দিয়ে দিলে লেকচার বাঙ্ক করা জনগণ সেখান থেকে নিয়ে নিতে পারবে নোটস,” টিপস দিলেন প্রেসিডেন্সির অরুণোদয় ভট্টাচার্য।
এ বার যদি বাবা-মা প্রশ্ন করেন, “কী যে করিস সারাদিন মোবাইলে মুখ গুঁজে?” কাক্কেশ্বর কুচ্কুচের মতো আবার বলে বসবেন না, “তোমাদের দেশে সময়ের দাম নেই বুঝি?” |
|
|
|
|
|