দু’বছরে কত কী-ই না হয়। দু’টো বছর যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কত লম্বা সময়, তা ওদের দু’জনকে দেখলেই বোঝা যায়। বিশ্বকাপের পর, ২০১১-য় ভারত যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গেল, তখন শিখর ধবন ও বিরাট কোহলি, এই দু’জনই চলে গিয়েছিল ফ্লপদের তালিকায়। প্রথম জন ওয়ান ডে ক্রিকেটে, দ্বিতীয়জন টেস্টে। আর দু’বছর পর দেখুন, ওরাই এখন কোথায়!
এই দু’জনই এখন ধোনির দলের ব্যাটিংয়ের প্রধান ভরসা। এদের সঙ্গে আবার যোগ দিয়েছে রোহিত শর্মা। তারও এখন নতুন রূপ। সব মিলিয়ে ভারতীয় দলের এই ব্যাটিং ত্রয়ীই এখন মাঠ মাতাচ্ছে। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতে ওদের খিদে কমে যায়নি তো? আশা করি, না। এখন ভারতীয় ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ তো ওদেরই হাতে। এত অল্পে খিদে মিটে গেলে চলবে?
যদি ভেবে থাকেন রবিবার সাবাইনা পার্কের লড়াইটা ভারত অনায়াসে জিতে নেবে, তা হলে কিন্তু ভুল ভাবছেন। ক্যারিবিয়ানদের ক্রিকেটের রেখচিত্র এখন উর্দ্ধমুখী। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ওরা কেমন দুর্ভাগ্যজনকভাবে ছিটকে গেল, মনে করুন। ভাগ্য সঙ্গ দিলে ওরা আরও এগোত। মনে রাখতে হবে, ওরা কিন্তু এখন আর ঘরের মাঠে হারে না। গত এক বছরে ঘরের মাঠে ন’টা ওয়ান ডে-র মধ্যে আটটাতেই জিতেছে ওরা। পরিসংখ্যানটা কিন্তু উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয়। শুক্রবার শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ক্রিস গেইলের ম্যাচ জেতানো পারফরম্যান্স (১০০ বলে ১০৯) দেখার পর বলতেই হচ্ছে যে, ও এখন টপ গিয়ারে রয়েছে। সুতরাং, ক্রিস গেইল হইতে সাবধান। তবে গেইল ও সুনীল নারিনেই যে ওরা সীমাবদ্ধ, এমনটা ভাবারও কোনও কারণ নেই। ওদের বোলিং শক্তি যেমন ধারাবাহিক, তেমনই ওদের ব্যাটিংও শৃঙ্খলাবদ্ধ ও বিস্ফোরক। তাই পুরো দলটাকে নিয়েই আগে থেকে ভেবে রাখা দরকার। |
শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সেঞ্চুরির পরে গেইল। ছবি: এএফপি |
সাবাইনা পার্কে যা উইকেট, তাতে স্বাভাবিকের চেয়ে একটু আগে বল পিচ করানোই ভাল হবে বলে মনে হচ্ছে। ভারতীয় বোলারদের এই অভ্যাসটা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রপ্ত করে নিতে হবে। ব্যাটসম্যানদের থেকে বোলারদের পরীক্ষাই কিন্তু বেশি কঠিন হবে। ইশান্ত শর্মা যদি ভুবনেশ্বর কুমার ও উমেশ যাদবের সঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করে নেয়, তা হলে তার চেয়ে ভাল আর কিছুই হতে পারে না। ২০১১-র সফর তো ওর ভালই গিয়েছিল (সব মিলিয়ে ২৩ উইকেট)। সেই অভিজ্ঞতা এখানেও কাজে লাগবে ওর। তবে আমার ধারণা, রবি অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাডেজা এই সিরিজে চমক দিতে পারে। ক্যারিবিয়ান দ্বীপের পরিবেশটাই এ রকম। বোলারদের খুব সাহায্য করে।
২০১৫-র বিশ্বকাপের কথা ভেবে নিজেদের পরখ করে নিতে তিন দলই পূর্ণ শক্তি নিয়ে নেমেছে। তাই সিরিজটাও বেশ জমে গিয়েছে। এখন বৃষ্টি না সব ভন্ডুল করে দেয়। সাবাইনা পার্কের জল নিকাশি ব্যবস্থা ভাল হলেও এর আশঙ্কা সবসময়ই থাকে। |
ভারত বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
(সাবাইনা পার্ক, রাত ৮-০০) |