কনফেড কাপের ফাইনালে ‘আসল’ লড়াইটা হবে দুই দলের দুই অভিজ্ঞ কোচের মধ্যে। স্কোলারি বনাম দেল বস্কির ট্যাকটিক্সের যুদ্ধ। এমনটাই মনে করছেন ইস্টবেঙ্গলের সদ্য প্রাক্তন কোচ ট্রেভর জেমস মর্গ্যান।
স্ত্রীকে নিয়ে এই মুহূর্তে মরিশাসে ছুটি কাটাচ্ছেন মর্গ্যান। তবে ফুটবল অন্ত প্রাণ সাহেব কোচ কিন্তু ছুটির মাঝেও গা ভাসিয়ে দিয়েছেন কনফেড কাপের উত্তেজনায়। মর্গ্যানের সঙ্গে ই-মেলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “স্কোলারি ব্রাজিলের খেলার মধ্যে জেতার অভ্যেসটা ঢুকিয়ে দিয়েছেন। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। স্কোলারি আর দেল বস্কির দক্ষতা নিয়ে কোনও প্রশ্নই উঠতে পারে না। তবে দেল বস্কির স্ট্রাইকার ছাড়া খেলার স্ট্র্যাটেজি বোধহয় আর কাজ করছে না। ইউরো কাপের সময় নিঃসন্দেহে এটা একটা বড় চমক ছিল। এখন বিপক্ষরা এই স্টাইলটা ধরে ফেলেছে। এবং সে ভাবেই নিজেদের প্রস্তুত করছে।” |
ফাইনালে ব্রাজিলকেই কিছুটা এগিয়ে রাখছেন মর্গ্যান। কেন, তার একটা ব্যাখ্যা আনন্দবাজারকে ই-মেলে দিয়েছেন তিনি, “স্কোলারির দলে অনেক নতুন মুখ রয়েছে। কখন কী চমক দেবে সেটা আঁচ করা সহজ হবে না।”
স্পেনের ৪-৩-৩ স্ট্র্যাটেজিকে ভাঙতে স্কোলারির ৪-২-৩-১ ছককেই এই মুহূর্তে এগিয়ে রাখছেন মেহতাবদের প্রাক্তন কোচ। তাঁর মতে, “নেইমারের মতো একজন স্ট্রাইকারকে সামনে রেখে দিলে, তাকে আটকানোর জন্য অন্তত দু’জন ডিফেন্ডার ব্যস্ত হয়ে পড়বে। এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে দলের অন্য ফুটবলাররা কিন্তু সহজে গোল করে বেরিয়ে যেতে পারে। স্পেনের যেহেতু পজিটিভ স্ট্রাইকার থাকছে না, সে জন্য বিপক্ষের রক্ষণে আলাদা চাপ তৈরি হচ্ছে না।”
তিকিতাকা মর্গ্যানের পছন্দের স্টাইল। তবে কনফেড কাপে স্পেনের পারফরম্যান্সে বেশ হতাশ ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন কোচ। তিনি বলেছেন, “স্পেনের খেলা দেখে আমি হতাশ। বিশ্বকাপ জয়ী দলের পুরনো সেই মেজাজটাই উধাও। নেই আগের ছন্দও। একটু যেন ছন্নছাড়া ভাব।” |
অন্য দিকে এই টুর্নামেন্টে একটি ম্যাচেও হারেনি ব্রাজিল। পরিসংখ্যানের দিক থেকেও এগিয়ে রয়েছেন নেইমাররাই (ম্যাচ-১০, ব্রাজিল-৫, স্পেন-৩, ড্র-২)। এরই সঙ্গে ব্রাজিলের ঘরের মাঠে খেলার সুবিধার কথাও উল্লেখ করেছেন মর্গ্যান। “ফাইনালে ব্রাজিল ঘরের মাঠের সুবিধা পাবে। মারাকানা স্টেডিয়াম নেইমারদের জন্যই গলা ফাটাবে। এটা কিন্তু স্পেনের কাছে বড় চাপ।”
কনফেড কাপে নেইমারের পারফরম্যান্স দেখার পর যেখানে বিশ্ব ফুটবল তাঁকে ব্রাজিলের নতুন ‘মহাতারকা’র তকমা দিচ্ছে, মেসির সঙ্গে তুলনা চলছে, তখন মর্গ্যান একটু যেন হিসেবি। ই-মেলে লিখেছেন, “নেইমার দুরন্ত ছন্দে রয়েছে। ওর ফর্মটা স্কোলারির দলের অন্যতম প্লাস পয়েন্ট। ২১ বছরের এই যুবকই হয়তো ফাইনালে পার্থক্য গড়ে দেবে। তবু এখনই ওকে মেসির আগে রাখতে পারব না। নেইমারকে আরও একটু সময় দেওয়া দরকার।” |
নাম: ভিসেন্তে দেল বস্কি গঞ্জালেস
ডাকনাম: দ্য প্রফেসর
দেশ: স্পেন
বয়স: ৬২
কোচিং করিয়েছেন: রিয়াল মাদ্রিদ কাস্তিলা (১৯৮৫-’৯০), রিয়াল মাদ্রিদ (১৯৯৪, ১৯৯৬, ১৯৯৯-২০০৩), বেসিকতাস (২০০৪-’০৫)। ২০০৮ থেকে স্পেনের দায়িত্বে।
উল্লেখযোগ্য ট্রফি: ২০১০ বিশ্বকাপ, ২০১২ ইউরো কাপ (স্পেন)
ক্লাব পর্যায়ে: রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ (২০০০, ২০০২), স্প্যানিশ লিগ (২০০১, ২০০৩)
বিশ্বরেকর্ড: জাতীয় কোচ হিসাবে জীবনের প্রথম তেরো ম্যাচে টানা জয়। একমাত্র কোচ যিনি চ্যাম্পিয়নস লিগ, ইউরো কাপ এবং বিশ্বকাপ জিতেছেন। |
নাম: লুই ফিলিপ স্কোলারি
ডাকনাম: বিগ ফিল, ফিলিপাও
দেশ: ব্রাজিল (ইতালির নাগরিকত্বও আছে)
বয়স: ৬৪
কোচিং করিয়েছেন: ব্রাজিল (২০০১-’০২), পর্তুগাল (২০০৩-২০০৮), কুয়েত (১৯৯০), গ্রেমিও, চেলসি, পামেইরাস। ২০১২ থেকে বর্তমান ব্রাজিলের দায়িত্বে।
উল্লেখযোগ্য ট্রফি:
ব্রাজিল: ২০০২ বিশ্বকাপ (পর্তুগালকে ২০০৪ ইউরো কাপ ফাইনালে তোলেন)। কুয়েত: ১৯৯০ গাল্ফ কাপ অব নেশনস।
ক্লাব পর্যায়ে: কোপা লিবার্তাদোরেস ২ বার, কোপা দো ব্রাজিল ৪ বার। |
|