উত্তরপ্রদেশের নিম্নচাপে টানা বৃষ্টি হচ্ছে উত্তরবঙ্গে। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত প্রায় একশো মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে জলপাইগুড়ি, মালবাজার ও মালদহ শহর ও লাগোয়া এলাকায়। যা চলতি মরসুমের নিরিখে ‘রেকর্ড’। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায় জলপাইগুড়িতে ৯৮ মালদহে ৯৪ মিমি বৃষ্টি হয়েছে। ডুয়ার্সের মালবাজারে ৯৯ মিমি বৃষ্টি হয়েছে বলে সেচ দফতর জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে উত্তরবঙ্গে পাহাড়ি এলাকা ও সিকিমে। টানা বৃষ্টিতে জল বাড়তে শুরু করেছে পাহাড় থেকে সমতলে বয়ে যাওয়া তিস্তা সহ অন্য নদীগুলির। এই পরিস্থিতিতে বাড়তি সর্তকতা গ্রহণ করতে প্রতি ঘণ্টায় নদী পরিস্থিতি নিয়ে উত্তরবঙ্গের বন্যা নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে রাজ্য সেচ দফতরে রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার জলপাইগুড়ি লাগোয়া দোমহনি থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত তিস্তার অসংরক্ষিত এলাকায় লাল সর্তকতা জারি করা হয়েছে। তিস্তার সংরক্ষিত এলাকা জলপাইগুড়ি এবং মেখলিগঞ্জ শহর ছুঁয়ে বয়ে যাওয়া এলাকাতেও নদীতে ক্রমাগত জল বাড়তে থাকায় হলুদ সঙ্কেত জারি করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গ বন্যা নিয়ন্ত্রণ কমিশনের জারি করা সর্তকবার্তায় তিস্তা ছাড়া অন্য কোনও নদীতে ‘সংকেত’ না থাকলেও, জলঢাকা, তোর্সা, ঘিস, বালাসন, মূর্তি, চেল নদীতে জল বাড়তে শুরু করেছে। শুক্রবার দিনরাত বৃষ্টি হলে ডুয়ার্স এবং কোচবিহারের বেশ কিছু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে কমিশন থেকে জেলা প্রশাসনকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দোপাধ্যায় এদিন বলেন, “তিস্তায় লাল সর্তকতা চলছে, কুচলিবাড়িতে তিস্তায় জল বেড়েই চলেছে। উত্তরবঙ্গে টানা বৃষ্টি চলতে থাকলে পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক আকার নিতে পারে। প্রতি নদীর প্রতি ঘণ্টার রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে। এখনও বড় ভাঙন বা ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই।”
শুক্রবার কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর থেকে পূর্বাভাসে উত্তরবঙ্গ ও সিকিমে ৭২ ঘণ্টায় অতি ভারূ বৃষ্টির পুর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। উত্তরবঙ্গের সব নদীর পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে শুক্রবার জরুরি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। প্রতি ঘণ্টায় এসএমএস করে জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং এবং কোচবিহারের নদীগুলির পরিস্থিতি জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয় সেচ দফতরের আধিকারিকদের।
জলপাইগুড়ি-মালদহ ছাড়াও টানা বৃষ্টি হয়েছে উত্তরের অন্যত্রও। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মাথাভাঙায় ৮৪ মিমি, বানারহাটে ৬৮ মিমি, কোচবিহারে ৬৫, আলিপুরদুয়ারে ৫৪ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের তরফে সিকিমের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেছেন, “পূর্বাভাস অনুযায়ী আরও দু-দিন টানা বৃষ্টি চলতে পারে। সিকিম পাহাড়েও এখন বৃষ্টি চলছে। তবে সিকিমে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। কিন্তু উত্তরবঙ্গে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হবে।” |