|
|
|
|
|
|
|
মুখোমুখি... |
|
পঞ্চমকে নিয়ে ওর কাছের লোকেরাও আজকাল ভণ্ডামি করে |
পঁচিশ বছরের বন্ধুত্ব। তবু একদিন তাঁকেও সরে যেতে হয়েছিল রাহুলদেব বর্মনের কাছ থেকে।
কিন্তু কেন? প্রথমবার এ নিয়ে মুখ খুললেন ভূপিন্দর সিংহ। শুনলেন প্রিয়াঙ্কা দাশগুপ্ত |
পত্রিকা: এই সাতাশে জুন আর ডি বর্মনের পঁচাত্তরতম জন্মদিন ছিল...
ভূপিন্দর: প্রত্যেক বছর দু’টো দিনের আগে গোটা দেশের সাংবাদিক মহল থেকে আমার কাছে প্রচুর ফোন আসে। একটা হল সাতাশে জুন, অন্যটা জানুয়ারির চার। আমি ক্লান্ত ওই একই প্রশ্নের জবাব দিতে দিতে। পঞ্চম কী ভাবে গান তৈরি করতেন তা জানতে চেয়ে সব একঘেয়ে প্রশ্ন। আর কত বার এই এক জিনিস নিয়ে লেখা হবে? কেউ তো এক বারও জানতে চান না যে মানুষ পঞ্চম কেমন ছিলেন? ফকির কথার অর্থ বোঝেন? ফকির ছিল পঞ্চম। কই, সে কথা তো কেউ লেখে না? কেউ তো বলে না ওঁর শেষ দিনগুলোর কথা! শুধু কিছু মানুষ ভুলভাল তথ্য দিয়ে ওঁকে নিয়ে মিথ্যে সব গল্প ফাঁদছে। এমনকী ওঁর কিছু মিউজিশিয়ানরাও সেটা করতে ছাড়ছে না। ওই দিয়ে মাইলেজ নিতে চায় ওরা। আমি এ সবের একদম বিরোধী।
পত্রিকা: মিথ্যে তথ্য মানে?
ভূপিন্দর: এ সব তো প্রতিনিয়ত দেখছি। মানুষটা তো আর নেই। সে তো আর উঠে দাঁড়িয়ে বলতে পারছে না যে, যা বলা হয়, তার অনেকটাই মিথ্যে। আমি এ সব শুনতে পারি না। ইন্টারনেট খুললেই কত গল্প! দেখে আমার আশ্চর্য লাগে। আমি যে পঞ্চমের সঙ্গে পঁচিশ বছর কাজ করেছি, ওঁর বন্ধু ছিলাম আমি তো জানি, সত্যি কোনটা। আর এরা যা তা বলে বেড়াচ্ছে শুধুমাত্র একটু প্রচারের আশায়! ভুলে যাচ্ছে যে, আমি এখনও বেঁচে আছি। তাই আমার চোখে এই ভণ্ডামি ধরা পড়বেই। এক বার পঞ্চমের এক অ্যানিভার্সারিতে আমাকে নিমন্ত্রণ করা হয়েছিল। অনুষ্ঠানে গিয়ে দেখি যে অ্যাঙ্কর, সে যা তা বলছে। আমি তো একেবারে সামনের সারিতে বসে। স্টেজে পঞ্চমের মিউজিশিয়ানরাও উপস্থিত। কিন্তু তাঁরা কেউ প্রতিবাদ করেননি। অ্যাঙ্কর ছেলেটি শুনলাম বলল, ‘আঁধি’ ছবির প্রত্যেকটি গান নাকি পঞ্চম দু’বার করে রেকর্ড করেছিল! এ তো ডাহা মিথ্যে কথা!
|
|
পত্রিকা: তার মানে?
ভূপিন্দর: আমি স্টেজে গিয়ে অ্যাঙ্করকে বলেই ফেলি যে দেখো ভাই, তুমি মনে হয় একটু বেশি লিবার্টি নিচ্ছ। ‘আঁধি’ থেকে মাত্র একটা গানই দু’বার রেকর্ড করা হয়েছিল। তা’ও আবার এই কারণে যে, আমি আর পঞ্চম গানটিকে এমন ভাবে তৈরি করেছিলাম যেটা গুলজার সাবের ব্রিফের থেকেও বেশ আলাদা হয়ে গিয়েছিল। গানটির নাম হল ‘সালাম কিজিয়ে’। তাই গানটি দু’বার রেকর্ড করা হয়। তবে অন্য কোনও গান তো আর দু’বার রেকর্ড করা হয়নি! আশ্চর্য লাগে, কী করে মানুষ এ ভাবে বানিয়ে গল্প বলে ফেলে। আর এক বার শুনেছিলাম যে পঞ্চমের বাড়ির পেছনের বাগানে নাকি একটা আম গাছ ছিল। আর সেই আম গাছ থেকে নাকি পাড়ার দু’টো মেয়ে রোজ আম পাড়তে আসত। একদিন নাকি পঞ্চম ওদের ধরে ফেলে। আর তার পর বাড়ি নিয়ে গিয়ে চকোলেট দেয়। আমি এ সব পড়ে তো আশ্চর্য হয়ে যাই! ওই বাগানে আমি আর পঞ্চম অনেক সময় কাটিয়েছি। তবে কোনও দিন আম গাছ দেখিনি সেখানে। ভাবুন তো, গাছই যেখানে ছিল না, সেখানে পাড়ার মেয়ে এসে আম পাড়বে কোথা থেকে?
পত্রিকা: তা হলে কি আপনি বলছেন যে লেজেন্ডদের শুধু কাজের ওপরে নয়, তাঁদের জীবনের ওপরও কপিরাইট থাকা দরকার?
ভূপিন্দর: আইডিয়াটা মন্দ নয়। আমার তো মনে হয় একটা কমিটি করা উচিত যারা পরিষ্কার করে বলবে কোনটা সত্যি, আর কোনটা মিথ্যে। অনলাইনে যা পাওয়া যায় পঞ্চমকে নিয়ে, তার পঞ্চাশ শতাংশই ভুল। এটা শুধু পঞ্চমের ক্ষেত্রেই সত্যি তা নয়। ইন্টারনেটে তো আমার তিনটে আলাদা জন্মদিন আছে। আমার কথা বাদ দিন। তবে পঞ্চমের মতো একজনকে নিয়ে এই ছিনিমিনি খেলাটা আমার একদম ভাল লাগে না। |
|
ভূপিন্দর ও রাহুলদেব। ছবি সৌজন্যে: ভূপিন্দর সিংহ |
পত্রিকা: শোনা যায়, ‘চুরা লিয়া’ গানটির প্রিল্যুডে গিটারের সুরটা নাকি উনি আপনাকে বলেছিলেন, উনি চুরি করেছেন ... সত্যি?
ভূপিন্দর: আরে সে এক কাণ্ড বটে! আমরা এক দিন একটা রেকর্ডিং করছিলাম। হঠাৎ সেটা ক্যান্সেল হয়ে যায়। আমি, স্বপন চক্রবর্তী (ওঁর সহযোগী) আর পঞ্চমকে একটা সিনেমা দেখাতে নিয়ে যাই। তার কিছু পরে আমরা ‘চুরা লিয়া’ গানটা রেকর্ড করি। ওই যে প্রথমের সুরটা ... ওটা আমি ১২ টা স্ট্রিংয়ের গিটারে রেকর্ড করেছিলাম। রেকর্ডিংয়ের পর পঞ্চম আমাকে ডেকে বলে, “বাতা, গানা হামনে কঁহাসে মারা হ্যায়?” আমাকে এক সপ্তাহ সময় দিয়েছিল এটা বলার জন্য। তার সঙ্গে আবার একটা একশো টাকার বাজিও রেখেছিল। এক সপ্তাহ বাদেও আমি তো বের করতে পারিনি। তার পর আমাকে ও বলে যে, ওই যে সিনেমাটা দেখতে নিয়ে গিয়েছিলাম, সেটার টাইটেল ট্র্যাক থেকে ও ওই সুরটা নিয়েছিল। আমি বাজিটা হেরে যাই। তার পর আবার এটাও বলে, ‘তুই সিনেমাটা দেখাতে নিয়ে গেলি, আর নোটগুলো চিনতে পারলি না?’ সত্যি বলতে কী, পঞ্চমের একটা অদ্ভুত স্বভাব ছিল। এত গান শুনত। অনুপ্রেরণা পেত। কিন্তু তার পর এমন ভাবে সেগুলোকে ‘রি-ডেকরেট’ করত যে, তাবড় তাবড় মিউজিশিয়ানরাও তা চিনতে পারত না। আমি নিজে রেকর্ড কালেক্টর ছিলাম। কত রকম রেকর্ড সংগ্রহ করতাম। আমার সঙ্গে ও নিজেও রেকর্ড সংগ্রহ করত। দু’জনে মিলে গদিতে বসে গান শুনতাম। লাতিন আমেরিকান মিউজিক থেকে জ্যাজ। কী না শুনত! আমার কাছে তো চিনা আর রাশিয়ান মিউজিকও ছিল। তবে কি, চিনা মিউজিক বেশি না শুনলে, সেটাকে ভাল লাগাটা কঠিন।
পত্রিকা: পঞ্চমের তো অনেকগুলো হিট গান প্রথমে বাতিল হয়েছিল বলে শোনা যায়। এমনও গুজব আছে যে, ‘দম মারো দম’ও প্রথমে দেবানন্দের তেমন ভাল লাগেনি?
ভূপিন্দর: এটা ঠিক যে, ওর অনেক হিট গানই প্রথম দিকে বাতিল হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ‘দম মারো দম’য়ের ক্ষেত্রে এমনটা সেভাবে শুনিনি। ‘দম মারো দম’ হিন্দি সিনেমার জগতে প্রথম একটি গান যেটা সিলভার জুবিলি হয়েছিল। ২৫ হাজার ইউনিট রেকর্ড বিক্রি হয়েছিল। মনে আছে, গানটা রেকর্ড করার আগে, গানের সিচুয়েশনটা বুঝিয়ে দিতেন। আমরা সবাই বসতাম গানটা শুনতে। আমি তো গিটারে টুংটাং করছি। দেব কথায় কথায় দৃশ্যটির বর্ণনা দিচ্ছেন। সাইকোডেলিক আলো, ধোঁয়া, ক্লাউড ফল বলছেন কী রকম একটা পরিবেশ তৈরি হয় গাঁজা খেলে। একটা ড্রোনিং সাউন্ডের কথা ওঠে। আমার কী মনে হল, হঠাৎ গিটারে নিজের মনেই কিছু বাজাতে শুরু করলাম। অনেকটা প্র্যাকটিসের মতো। সুরটা কিন্তু বেশ ‘মিস্টিক’ লেগেছিল শুনতে। প্লাকিং স্টাইলটাই পালটে দিয়েছিলাম। মাঝখানে যেই থেমেছি, অমনি পঞ্চম আমার দিকে তাকিয়ে বলল, “শালে, ইয়েহি তো চাহিয়ে থা। বজা, বজা...।” তার পর তো ওই গিটারের বাজনাটা প্রায় ইতিহাস হয়ে গিয়েছে। পরে শুনেছিলাম আমেরিকার এক বড় আর্টিস্ট, মেথডম্যান, আমার গিটারের ওই অংশটা একটা গানেও ব্যবহার করেছিলেন। ট্র্যাকটির নাম ছিল, ‘হোয়াটস হ্যাপনিং’।
|
কিশোরকুমারের রেকর্ডিংয়ে
|
রাজেশ-রাহুল একসঙ্গে |
|
পত্রিকা: এমনও শোনা যায় যে উনি নাকি স্বপ্নে অনেক সুর ভেবে ফেলতেন? “কাঞ্চি রে, কাঞ্চি রে’ (হরে রাম হরে কৃষ্ণ), ‘দুনিয়া মেঁ লোগো কো’ (অপনা দেশ), ‘তুম বিন যাউ কহাঁ (প্যার কা মৌসম)-এর ক্ষেত্রে নাকি তাই হয়েছিল?
ভূপিন্দর: আমি আলাদা ভাবে এই গানগুলোর কথা বলতে পারব না। তবে অনেক সময় দেখেছি যে একসঙ্গে গাড়িতে যাচ্ছি। ও আমার সঙ্গে কথা বলছে। কিন্তু মনটা অন্য দিকে। ওর রক্তে সব সময় সুর বইত। এমন হয়েছে যে ও এক লাইন গেয়েছে, আর তার পরের লাইনটা আমি গেয়েছি। এ ভাবেই তো কত কম্পোজিশন হয়েছে। তবে তার মানে এই নয় যে আমি এখন সেই সব সুরগুলোর জন্য ক্রেডিট নেব। আমাদের তো একটা সিনার্জি ছিল। পঁচিশ বছরের সম্পর্ক। বন্ধুত্ব। আমি একটা সুর গুনগুন করলে ও কতবার বলেছে, ‘শালে, ইয়ে তো ম্যয় সোচ রাহা থা।’ তবে এই নিয়ে কি আমি পাবলিসিটি করব নাকি? যদি আমি পঞ্চমের কিছু সুরে সাহায্যও করে থাকি, সে কথা আমি কোনও দিন বলব না। ঠিক যে ভাবে পঞ্চম নিজেও বলতে চায়নি, এস ডি বর্মনের কোন ছবিগুলোর গান, ও সুর করেছিল, কিন্তু যেখানে ওর নিজের নাম যায়নি।
পত্রিকা: আজকাল কিন্তু বেশ কিছু ছবিতে সেই সব গানে পঞ্চমের ক্রেডিটই দেওয়া হচ্ছে। যেমন ‘রোড, মুভি’ সিনেমাতে ‘পয়সা’ ছবি থেকে ‘সর যো তেরা টকরায়ে’ গানটি ব্যবহার হয়েছে। তার ক্রেডিট এখন পঞ্চমকে দেওয়া হয়েছে...
ভূপিন্দর: তাই নাকি? এটা তো বেশ ভাল ব্যাপার। |
রফি এবং আর ডি |
মান্না দে-র সঙ্গে |
|
পত্রিকা: এবার অন্য প্রসঙ্গ। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে বসন্তের কোকিলের কোনও অভাব নেই। তা নিয়ে সমস্যা হয়নি?
ভূপিন্দর: দেখুন এ নিয়ে কেউ কথা বলে না। যখন কোনও আর্টিস্টই খুব দুর্বল হয়ে পড়েন, তখন তাঁর চারপাশে সুবিধাবাদীদের ভিড় জমে। আমি পঞ্চমকে অনেক বার বলতাম ও যেন এ বিষয়ে সতর্ক থাকে। ও সেটার বিষয়ে সতর্কও ছিল। কিন্তু ৮৪/৮৫ সাল নাগাদ পালটে গেল সব কিছু। সুবিধাবাদীরাও ওকে ঘিরে রাখত। মানসিক ভাবে ওরা ওঁকে দুর্বল করে দিয়েছিল। প্রযোজককে নিজে ফেস করতে পারত না ও। ড্রিফ্ট করে যাচ্ছিল। একবার মনে আছে শাম্মি কপূরের সঙ্গে আমার দেখা। উনি আমাকে ডেকে বলেন, ‘অ্যায় ভুপ্পি, তেরে দোস্তকো বতানা...’ আমি বলি, ‘কউন দোস্ত?’ উনি বলেন, ‘পঞ্চম’। তার পর বলেন, ‘ওকে বলো যে আমি যদি ওর বাড়ির দরজাতে যাই, তখন ও যেন নিজে এসে বলে যায় যে ও বাড়ি নেই। কাউকে দিয়ে যেন এই কথাটা বলে না পাঠায়। আমি নিজে এ সব অনেক করেছি। তাই আমার সঙ্গে যেন এ সব না করে’। এই সব করার দরুন ওকে অনেকেই ছবি দিত না।
পত্রিকা: এ সব কারণেই কি আপনাদের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়?
ভূপিন্দর: আমি নিজে পঞ্চমের থেকে সরে আসি। আমাদের এত বছরের বন্ধুত্ব। তবু চোখের সামনে আমি ওকে এ ভাবে পালটে যেতে দেখতে পারিনি। ১৯৮২ সাল নাগাদ এ সব হয়। আমি বেশ বুঝতে পারছিলাম ও একেবারেই হারিয়ে যাচ্ছিল। যে পঞ্চম সব সময় হাসত (ও তো প্রায় কমেডিয়ান ছিল), হঠাৎ দেখি সে ভীষণ তাড়াতাড়ি রেগে যাচ্ছে। আমি কত বার ওকে বলতাম, কেন এ রকম হচ্ছে। এটা তো খুব ডেঞ্জারাস চেঞ্জ। যখন ওকে ছেড়ে চলে আসি, তার আগে আমাদের প্রায় দু’মাস ঝগড়া হয়েছিল। দু’মাস ধরে ওকে বলতাম, ‘আমি কিন্তু আর নেই’। ‘গালিগালাজ’ হত। এটাও বলেছিলাম, দু’জন গিটার প্লেয়ার তো তোকে দিয়েছি। আর আমাকে আটকানো কীসের? ‘সত্তে পে সত্তা’র ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর যখন ও করছিল, তখন আমি সিদ্ধান্ত নিই যে ওর সঙ্গে আর কাজ করব না। স্টুডিয়ো যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলাম। গিটার আমার প্রাণ। কিন্তু সেই গিটার আর ছুঁইনি আমি। প্রায় দশ বছর আমি গিটার বাজাইনি। এমনকী আমার সাধের গিটারটাও নষ্ট হয়ে গিয়েছিল না বাজিয়ে বাজিয়ে। আমার মতো আরও অনেক বন্ধুকেই ও শেষের দিকে হারিয়েছিল। তবে এটা ঠিক যে কাজ ছাড়ার পরেও ও মাঝে মাঝে আমার পালি হিলের বাড়িতে আসত। দু’গ্লাস হুইস্কি খেয়ে আমাকে বলত শোন, এই সুরটা করেছি। গানটা বাজাতাম। আমার মনে হয় ও চাইত যে আমি শুনি ও কী কাজ করছে। কিন্তু কোনও দিন ওকে মুখ ফুটে আমাকে জিজ্ঞেস করতে শুনিনি কেন আমি চলে এলাম। আমার মনে হয় ওর ওই সাহসটা ছিল না। |
আঁধি |
|
পত্রিকা: শোনা যায় উনি খুব একাকীত্বে ভুগতেন...
ভূপিন্দর: শেষের দিকে ও খুব একাকীত্বে ভুগত। কোনও ভাল বন্ধু ছিল না। যখন মারা যায়, তখন তো ওর পাশে কেউ ছিল না। পঞ্চম আর আমি দু’জনেই ছিলাম সেন্টিমেন্টাল ফুল। যে কেউ সেটার অ্যাডভান্টেজ নিতে পারত। একটা কথা কী জানেন? জেনুইন শিল্পীরা সর্বদাই একাকী। আমাদের যে একসঙ্গে কী অসাধারণ সব সময় কেটেছে! মারপিট করেছি। টেম্পারামেন্টে মিল ছিল। কত বার হয়েছে যে রাত দু’টোর সময় আমার কাছে এসে ও নিজের কথা শেয়ার করেছে। একাকীত্বে ভুগলেও এটা কিন্তু জানবেন যে পঞ্চম কোনও দিন ডিপ্রেশনে ভোগেনি। খুব উচ্চমার্গের শিল্পী হলে তারা কিন্তু বাইরের আর্টিফিশিয়ালিটিটা বুঝতে পারে। পঞ্চমও হয়তো শেষে ওটা বুঝতে পারত।
পত্রিকা: শেষের দিনগুলো ওর পাশে থাকতে না পেরে আফশোস হয় না?
ভূপিন্দর: অবশ্যই। খুব আফশোস হয়। যত দিন বেঁচে থাকব, এই আফশোসটা নিয়েই বেঁচে থাকব। এখন মনে হয়, ইস যদি সব ভুলে গেয়ে ওর কাছে ফিরে যেতাম! ওর শরীর ভাল আছে কিনা তা নিয়ে খোঁজ নিতাম... তবে ... ছেড়ে দিন... একদিন তো দেখা হবেই।
|
ভূপিন্দরের গাওয়া পছন্দের আরডি’র গান |
• এক হি খোয়াব
• হুজুর ইস কদর
• নাম গুম জায়েগা
• বিতি না বিতায়ে রয়না
• থোড়ি সি জমিন |
|
পুরনো সব ছবি সৌজন্যে: অভিজিৎ দাশগুপ্ত ও বাদল ভট্টাচার্য |
|
|
|
|
|