|
|
|
|
মাওবাদীদের পুরনো ডেরায় সদ্য-তৈরি মাইন
নিজস্ব প্রতিবেদন |
জঙ্গলমহলের কিছু এলাকায় যখন নতুন করে মাওবাদীদের ঘন ঘন আনাগোনা শুরু হয়েছে বলে গোয়েন্দারা দাবি করছেন, সেই সময়ে ঝাড়গ্রামে তাদের এক সময়কার শক্ত ঘাঁটিতেই শুক্রবার দুপুরে মাটি খুঁড়ে দু’টি ল্যান্ডমাইন ও একটি বন্দুক উদ্ধার করল যৌথ বাহিনী। এ দিন আঁধারিশোল গ্রামের যে-জায়গা থেকে ওই সমস্ত অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে, সেটি ঝাড়গ্রাম শহর থেকে আট কিলোমিটার দূরে। পুলিশ সূত্রের খবর, লালগড় আন্দোলন-পর্ব তো বটেই, এমনকী ২০১১-র অক্টোবর মাস পর্যন্ত আঁধারিশোল গ্রাম মাওবাদীদের মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয়েছিল।
সুপ্রিম কোর্টের এ দিনের নির্দেশ অনুযায়ী, জঙ্গলমহলের তিনটি জেলায় পঞ্চায়েত ভোট আগামী ১১ জুলাই। পঞ্চায়েত ভোটের মুখে কিংবা ভোট চলাকালীন নাশকতা ঘটাতে মাওবাদীরা ওই সমস্ত অস্ত্রশস্ত্র জোগাড় করে মাস খানেক আগে লুকিয়ে রেখেছিল বলে যৌথবাহিনী ও গোয়েন্দারা সন্দেহ করছেন। |
|
ছবি: দেবরাজ ঘোষ। |
এ দিন দুপুর আড়াইটে নাগাদ নির্দিষ্ট খবরের ভিত্তিতে আঁধারিশোল গ্রামে তল্লাশি চালান সিআরপি-র ১৮৪ নম্বর ব্যাটেলিয়নের জওয়ানেরা। মাঠের আলে মাটি খুঁড়ে একটি ডিরেকশনাল মাইন, টিফিন কৌটোর মধ্যে বিস্ফোরক ভরে তৈরি একটি মাইন, একটি একনলা বন্দুক, ফ্ল্যাশ গান, ছ’টি ব্যাটারি ও কিছু তার পায় তারা। ব্যাটেলিয়নের কমান্ড্যান্ট পারস নাথ বলেন, “মাস খানেকের মধ্যে এগুলি পোঁতা হয়েছে। আমাদের বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াড মাইনগুলিকে ফাটিয়ে নিষ্ক্রিয় করে দিয়েছে।”
উদ্ধার হওয়া ওই দু’টি মাইন প্রাথমিক ভাবে পরীক্ষা করে উদ্বেগ বেড়েছে পুলিশ ও গোয়েন্দাদের। কারণ, প্রাথমিক ভাবে তাঁদের সন্দেহ, মাইন দু’টি বড়জোর মাস দেড়েক-দুয়েক আগে তৈরি হয়েছে। জঙ্গলমহলের বিভিন্ন এলাকায় মাঝেমধ্যেই পুরনো ল্যান্ডমাইন মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করছে যৌথবাহিনী। ওই সমস্ত ল্যান্ডমাইনের কিছু লালগড় আন্দোলন-পর্বে এবং বাকি অংশ চার বছর আগে যৌথবাহিনীর অভিযানের সময়ে পোঁতা হয়। কিন্তু আঁধারিশোলে উদ্ধার হওয়া দু’টি মাইন সম্প্রতি তৈরি করা হয়েছে। কারা, কোথায় ওই মাইন তৈরি করে পুঁতে রাখল, সেই ব্যাপারে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। মাস তিনেক আগে ঝাড়গ্রামেরই মানিকপাড়ায় ল্যান্ডমাইন উদ্ধার করা হয়েছিল এবং সেগুলিও ছিল সদ্য তৈরি করা।
এক গোয়েন্দা অফিসার বলেন, “আঁধারিশোল গ্রামটি ন্যাদাবহড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত। আঁধারিশোল লাগোয়া বিড়িহাড়ি গ্রামে এক সময়ে কিষেণজি থাকতেন। এমনকী, বুড়িশোলের জঙ্গলে যৌথবাহিনীর হাতে নিহত হওয়ার কিছু দিন আগেও তিনি বিড়িহাড়ি গ্রামে ছিলেন। অর্থাৎ ওই এলাকায় মাওবাদীদের প্রতি সহানুভূতিসম্পন্ন ও সমর্থক, এমন বেশ কয়েক জন ছিল। হয়তো তারা নতুন করে সক্রিয় হয়েছে।” |
|
|
|
|
|