চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি চ্যাম্পিয়ন ভারতীয় টিমকে নিয়ে ধন্য ধন্য পড়ে গেলেও তরুণ ও অনভিজ্ঞ বোলিং বিভাগ নিয়ে কোনও কোনও প্রাক্তন ক্রিকেটারের চিন্তাও থাকছে। বিশেষ করে সামনে পরপর বিদেশ সফর থাকায়। প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার মনোজ প্রভাকর তো ধোনির বোলিং ব্রিগেডের সবথেকে অভিজ্ঞ যোদ্ধা ইশান্ত শর্মাকে নিয়েই ভীষণ চিন্তিত। “ক্যাপ্টেন ধোনিকে চোখ বন্ধ করে হোক বা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে প্রশ্ন করতে হবে চলতি বছরের শেষের দিকে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে কি ইশান্ত শর্মা বোলিং বিভাগের নেতৃত্ব দিতে পারবে? দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের পর আরও বিদেশ সফর রয়েছে। ইশান্ত সবথেকে সিনিয়র বোলার হলেও ধারাবাহিকতা দেখাচ্ছে কোথায়?”
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ইশান্ত পাঁচ ম্যাচে দশ উইকেট দিয়েছেন। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে ম্যাচের সেরা (৩-৩৩) হওয়ার পরেই ফাইনালে দলকে প্রায় ডুবিয়ে ছেড়েছিলেন প্রথম তিন ওভারে ২৯ রান দিয়ে। শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ডের ১৮তম ওভারে দুটো উইকেট নিয়ে ফাইনালের মোড় ঘুরিয়ে দেন। কিন্তু প্রভাকরের প্রশ্ন, “সত্যিই কি বলা যায় ইশান্তই ওই দুটো উইকেট নিয়েছে? এমনকী ইশান্ত নিজেও তো স্বীকার করেছে ফাইনালে ভাল বল করতে পারেনি। সত্যি বলতে কী, ওই দুটো উইকেটের কৃতিত্ব ইশান্তকে দেওয়া যায় না। ইংরেজ ব্যাটসম্যানরাই উইকেট ছুড়ে দিয়ে ম্যাচটা হেরেছিল। আমাদের তাই ওদেরই ধন্যবাদ দেওয়া উচিত। ধোনি পুরো চার ওভারের কোটা ইশান্তকে দেওয়ায় বরং অবাক হয়েছিলাম।”
দিল্লি রঞ্জি দলে ইশান্ত যখন নিয়মিত ছিলেন কোচ হিসেবে প্রভাকর কাছ থেকে দেখেছেন তাঁকে। এবং তাঁর দেখা ইশান্ত আর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইশান্তের মধ্যে প্রাক্তন ভারতীয় অলরাউন্ডার কোনও পার্থক্য দেখছেন না। “পাঁচ বছর আগের ইশান্তের সঙ্গে এই ইশান্তের কোনও পার্থক্য নেই। মনে হয়, পরের পাঁচ বছরেও কোনও পার্থক্য হবে না। কেউ ইশান্তের বোলিংয়ের উন্নতি করাতে পারবে না, যদি ও নিজে উন্নতি করতে না চায়। কলকাতা নাইট রাইডার্সে ওয়াসিম আক্রমের সঙ্গে সময় কাটিয়েছে। সানরাইজার্স হায়দরাবাদে ওয়াকার ইউনিসকে কোচ পেয়েছে। কিন্তু তাতেও লাভ কী হল? তার পরেও ওর বোলিংয়ে উন্নতি নেই কেন?” প্রশ্ন প্রভাকরের।
তাঁর মতে গোড়াতেই গলদ। প্রভাকর বলেন, “ইশান্ত খুব পরিশ্রমী, ভীষণ এনার্জি, ভাল অ্যাথলিটও। দেশের এখনকার মিডিয়াম পেসারদের মধ্যে ইশান্তের রান আপ সেরা। ভাল ফাস্ট বোলার হওয়ার শারীরিক বৈশিষ্ট্যও রয়েছে ওর। কিন্তু গোড়াতেই আবার সমস্যাও রয়েছে। বল করার সময় ওর শরীরের সামনের দিকে থাকা হাত ভুল জায়গায় থাকে, রিস্ট পজিশনও ভুল, বলটা সিমে পড়ে না। পেস বোলিংয়ের এই প্রাথমিক বিষয়গুলো মাথায় না রাখলে এ রকম ভুল ইশান্ত করতেই থাকবে।” |