পাট খেতে দু’টি হাতি, ভিড় দিনভর
কাল ৭টা। ঘুম থেকে উঠে গরুর জন্য ঘাস কাটতে পাট খেতে ঢুকছিলেন পরিমল দাস। দেখলেন ঠায় দাঁড়িয়ে আছে দু’টি হাতি! ছুটে বাড়ি ফিরলেন পরিমলবাবু। গ্রামে প্রচার হয়ে গেল হাতির কথা। আর তা নিয়ে দিনভর মজে কোচবিহারের পুন্ডিবাড়ির সিপাহিটারি দাসপাড়া। হাতি দুটোকে জঙ্গলে পাঠাতে দিনভর কসরত চলল। সন্ধ্যায় দুটি কুনকি হাতি সেখানে নিয়ে হাতি দুটোকে বনে ফেরানোর চেষ্টা শুরু করে বন দফতর। কোচবিহার ডিভিশন ডিএফও কৌশিক সরকার বলেন, “পথ ভুল করে হাতি দুটি লোকালয়ে ঢুকেছে বলে মনে হচ্ছে। রাতের মধ্যেই হাতি দুটিকে জঙ্গলে ফেরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।” কোচবিহার ডিভিশনের এ ডি এফ ও অরূপ মুখোপাধ্যায় জানান হাতি দুটি পাতলাখাওয়ার খাগরাবাড়ি এলাকায় ৩ বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। সেখান থেকে সিপাহিটারি যায়। বন কর্তাদের ধারণা, হাতি দুটি জলদাপাড়া অভয়ারণ্যের। সেখান থেকে বেরিয়ে খাবারের খোঁজে তারা পাতলাখাওয়ার জঙ্গলে যায়। রাস্তা ভুলে তারা জাতীয় সড়ক পার হয়ে সিপাহিটারি যায়।

হাতি দেখতে ভিড়।—নিজস্ব চিত্র।
বন দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “গ্রামে এখন পাট খেতে ভরে গিয়েছে। যে দিকে তাকানো যায় জঙ্গল মনে হয়। হাতি দুটি তাতেই ভুল করেছে। ওই এলাকায় পাট ক্ষেত ছাড়াও বড় বড় বাঁশ বাগান রয়েছে। জঙ্গল ভেবে সেখানে চলে যায় তারা। ভোর হয়ে যাওয়ায় তারা ফিরতে পারেনি। বন দফতর সূত্রের খবর, শীতের শেষে, গ্রীষ্মের শুরুতে হাতির দল জঙ্গল ছেড়ে বের হয়। যে সময় জঙ্গলে জলের সংকট দেখা দেয়। জলের খোঁজে হাতি এক জঙ্গল থেকে আরেক জঙ্গলে হাতির খাবার পুন্ডি ঘাস রয়েছে প্রচুর। তা খাওয়ার জন্য হাতি দুটি পাতলাখাওয়ার জঙ্গলে যায়। বৃহস্পতিবার রাতে সেখানে পৌঁছয়। রাতেই তারা জলদাপাড়ার ফেরার চেষ্টা করে পথ ভুলে গ্রামে ঢুকে যায়। খাগড়াবাড়িতে তিনটি বাড়ি ভাঙার পর সিপাহিটারি পৌঁছয়।
বাসিন্দারা জানান, সকাল ৭টায় হাতি দু’টি দেখার পরেই পুন্ডিবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ি ও বন দফতরে খবর দেওয়া হয়। পরিমলবাবুর ভাইপো অভিজিৎ বলেন, “জ্যাঠা দৌড়ে এসে হাতি রয়েছে বলে জানায়। আমরা সবাই যাই। সে সময় হাতি দুটি চুপচাপ দাঁড়িয়েছিল।” ওই ঘটনা জানাজানির হওয়ার পরই সিপাহিটারি পুন্ডিবাড়ি, পাতলাখাওয়া বড়রাংরসের বিভিন্ন এলাকা থেকে সাধারণ মানুষ ভিড় উপচে পড়ে। গ্রামের বাসিন্দারা ঢোল বাজিয়ে পটাকা ফাঁটিয়ে হাতি দুটিকে তাড়ানোর চেষ্টা করেন। তাতে কোনও কাজ হয়নি, উল্টে প্রায় পাঁচ-ছয় বিঘার পাটকে তছনছ করে বাঁশ বাগানে আশ্রয় নেয় হাতি দুটি। এক স্থানীয় বাসিন্দা, সদিয়ার রহমান এ দিন বলেন, “আমরা হাতি দুটিকে দেখেছি। অনেকে অতি উৎসাহী হয়ে হাতি দুটির সামনে এলে ভয় পেয়ে তারা ছোটাছুটি করে।” কোচবিহার ডিভিশনের বন কর্মীরা ছাড়াও এ দিন চিলাপাতা থেকে বন কর্মীদের একটি দল এবং জলদাপাড়ার মাদারিহাট থেকে এলিফ্যান্ট স্কোয়াড সেখানে যায়। পুলিশও সেখানে যায়।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.