গ্রাহক স্বার্থের যুক্তি তুলে রবিবার ২৪ ঘণ্টা কলকাতা মেট্রো এলাকায় টিভিতে সম্প্রচার বন্ধ রাখার হুমকি দিল কেবল অপারেটরদের একটি সংগঠন। এ ছাড়া, শনিবার মধ্য কলকাতায় মিছিলও করবে তারা।
একে ছুটির দিন, তার উপরে রবিবার কনফেডারেশন কাপ-এর ফাইনালে ব্রাজিল-স্পেনের ম্যাচের উত্তেজনা। এই অবস্থায় সম্প্রচার বন্ধের হুমকিতে এমনকী রাজ্য তথ্য দফতরেও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতির উপর নজর রাখার জন্য পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
‘কেবল অপারেটর সংগ্রাম কমিটি’ নামে একটি নতুন সংগঠন আজ, শনিবার হেদুয়া থেকে ‘প্রতিবাদ’ মিছিল করবে বলে জানান সংগঠনের নেতা অপূর্ব ভট্টাচার্য। রবিবার কলকাতা মেট্রো এলাকার সব অপারেটরকে চব্বিশ ঘণ্টার জন্য সম্প্রচার বন্ধ রেখে ধর্মঘট পালনের ডাকও দিয়েছে এই সংগঠন।
কীসের এই প্রতিবাদ? অপূর্ববাবু ব্যাখ্যা করে বলেন, “এমএসও-রা যে ভাবে চ্যানেল-প্যাকেজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন, তাতে সাধারণ মানুষ আর টিভি দেখতে পাবেন না। প্রতিদিন এ নিয়ে পাড়ায় পাড়ায় গ্রাহকদের অসন্তোষের মুখে পড়ছেন অপারেটররা। এ ভাবে ব্যবসা চালানো অসম্ভব হয়ে উঠছে। তাই প্রতিবাদের পথে নামতে হচ্ছে আমাদের।”
মিছিল নিয়ে প্রশাসনের মাথাব্যথা নেই। তবে রবিবার রাতে ব্রাজিল-স্পেনের ফাইনাল খেলা নিয়ে ফুটবল-পাগল শহরে দারুণ উত্তেজনা রয়েছে। অপারেটরদের দাবি আদায়ে খেলার সম্প্রচার বন্ধ করা হলে সাধারণ মানুষ তা ভাল ভাবে নেবেন না— এমনটাই মনে করছে প্রশাসন।
ধর্মঘট ‘সফল’ করতে ধর্মঘটের বিরোধী অপারেটরদের সংযোগের কেবল কাটার আশঙ্কাও করছে অন্য কয়েকটি অপারেটর সংগঠন। আইডিয়াল কেবল অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অলোক শর্মা বলেন, “আমাদের কোনও সদস্য ধর্মঘটে যাবেন না। তাই গোপনে আমাদের তার কেটে দিয়ে ধর্মঘট সফল বলে দাবি করা হতে পারে।” পাশাপাশি, আশঙ্কায় রয়েছে এমএসও সংস্থাগুলিও। সিটি কেব্লের ডিরেক্টর সুরেশ শেঠিয়া বলেন, “মাত্র কয়েক জন অপারেটর এবং তাদের সাব-অপারেটরা হইচই করছেন। তাঁরা সম্প্রচার বন্ধ করে দিলে সেখানকার গ্রাহকদের জবাব দিতে হবে তাঁদেরই।” কোনও কোনও এমএসও সংস্থা হামলার আশঙ্কায় আগাম পুলিশকে জানিয়ে রাখছেন বলে জানান। তবে তার কাটার সম্ভাবনা মানতে রাজি হননি ধর্মঘটপন্থী নেতা অপূর্ববাবু।
বিক্ষোভ কেন, তা জানতে গত ১৪ তারিখ রাজ্য তথ্য-সংস্কৃতি দফতর নন্দনে বৈঠক করে। সেখানে ওই সংগঠন, এমএসও এবং বিভিন্ন চ্যানেলের আধিকারিকেরা ছিলেন। মহাকরণের এক সূত্র বলেন, “কেন অপারেটরদের একাংশ গ্রাহকদের স্বার্থ নিয়ে এত দরদ দেখাচ্ছেন, ওই বৈঠকেই তা পরিষ্কার হয়ে যায়। কারণ কেবল টিভি ডিজিটাইজেশন হয়ে যাওয়ার পরে এক জন অপারেটর ক’টা টেলিভিশনে সংযোগ দিয়েছেন, সব হিসেবই চোখের নিমেষে চলে যাচ্ছে মাল্টি সার্ভিস অপারেটর (এমএসও) থেকে চ্যানেল কর্তৃপক্ষের কম্পিউটারে। ফলে সরকার থেকে চ্যানেল সব স্তরেই প্রতিটি সংযোগ-পিছু নির্ধারিত কর ও ফি দিতে বাধ্য থাকতে হচ্ছে অপারেটরদের। এতেই হয়তো ক্ষোভ।” |