ট্রেন থেকে পড়ে গিয়ে, না অন্য কোনও ভাবে জখম হয়েছিল সেটা স্পষ্ট নয়। তবে বন্ধুর সঙ্গে বাইরে গিয়ে সিউড়ির বছর উনিশের তরুণ অর্পণ দাসের মৃত্যু হয়েছিল দুর্গাপুরের বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার সন্ধ্যায়। ঘটনার দু’দিনের মাথায়, শুক্রবার বিকেলে অর্পণের মৃত্যুর জন্য তার বন্ধুকে দায়ী করে ও মৃত্যু রহস্যের কিনারা চেয়ে সিউড়ি থানায় অভিযোগ জানাতে যান বাবা অখিল দাস। তবে ঘটনাটি যেহেতু অন্ডালে ঘটেছে, তাই ওখানে রেলপুলিশের কাছে অভিযোগ জানানোর পরামর্শ দেয় সিউড়ি পুলিশ। তার পরেই অভিযুক্তকে অন্ডাল রেলপুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে ঘটনার তদন্ত করবে সিউড়ি পুলিশও।
অর্পণের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত মঙ্গলবার বিকালে সিউড়ি মল্লিকগুনা পড়ার বাসিন্দা অর্পণ বছর দু’য়েকের ছোট চিত্তব্রত বিশ্বাসের সঙ্গে ওর দিদির বাড়ি আসানসোলে যাচ্ছি বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিল। বুধবার বিকেল তিনটে নাগাদ নিজের এক বন্ধুকে ফোন করে জানায়, সে বাড়ি ফেরার পথে অণ্ডালে না নেমে ভুল করে রাজবাঁধ পৌঁছে গিয়েছে। ওখানেই সে ট্রেন থেকে পড়ে গিয়ে পায়ে চোট পায়। আধঘণ্টা পরে ফের অন্ডালে এসেও তার বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তার পর থেকেই আর যোগাযোগ কারা যায়নি অর্পণের সঙ্গে। সঙ্গী চিত্তব্রতও ফোন ধরেনি। এর কিছুক্ষণ পরে অন্ডালের রেল পুলিশের মাধ্যমে পরিবারের লোকেরা খবর পান, ট্রেন থেকে পড়ে গিয়ে ছেলে জখম হয়েছে। অর্পণকে প্রথমে রেল হাসপাতালে ও অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে দুর্গাপুরের বিধাননগরে ভর্তি করানো হয়। সন্ধ্যায় সেখানেই তার মৃত্যু হয়। দুর্গাপুরের টিউটাউন থানার পুলিশ যে রিপোর্ট দিয়েছে, সেখানে অবশ্য মৃতের মাথায় ও শরীরে একাধিক ক্ষত চিহ্নের উল্লেখ করেছে। অর্পণের মা পরিণীতা দাস, দিদি শ্রাবন্তী দাস ও তার বন্ধুদের প্রশ্ন, যে ছেলে পড়ে যাওয়ার পর ফোনে পায়ে আঘাত লাগার কথা বলে তার মাথায় আবার আঘাত লাগলো কী ভাবে বা দ্বিতীয় বার পড়ে গেল কী ভাবে? তবে যাই ঘটে থাকুক, অর্পণের সঙ্গী বন্ধুটি কেন এ কবারও ফোন করে খবর দেয়নি বা যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও অসংলগ্ন কথাবার্তা বলেছে। যদিও শুক্রবার অর্পণের বন্ধু চিত্তব্রত বলে, “অন্ডালে এসেই ওর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে গিয়েছিল। তার পর কী হয়েছে আমি জানি না।” পড়শিরা অবশ্য দাবি করেছেন, মৃতের পকেটে পুলিশ মাদক জাতীয় দ্রব্য পেয়েছে। সঙ্গী বন্ধুটিকেও এলাকায় নেশা করতে দেখা গিয়েছে। ঘটনাটি নেশার কারণেও ঘটে থাকতে পারে। যদিও চিত্তব্রত নেশা করার কথা অস্বীকার করেছে। |