শনাক্ত করবে কিশোরী
পূর্বস্থলীর গণধর্ষণে গ্রেফতার তিন যুবক
পূর্বস্থলীর আদিবাসী কিশোরীকে গণধর্ষণের ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। আগামী ৩ জুলাই কিশোরীকে দিয়ে তাদের শনাক্ত করতে জেলে টিআই প্যারেড করানো হবে।
পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম কৃষ্ণ রায়, বিল্টু মণ্ডল এবং গোপী রায়। বয়স ১৮ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। বাড়ি পূর্বস্থলীরই দামপাল এলাকায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাদের ধরা হয়। শুক্রবার কালনা আদালতে তোলা হলে তাদের ১৪ দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বুধবার মেয়েটি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দি দিয়েছে। ১২ জুলাই ‘কেস ডায়েরি’ জমা দেওয়ার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
গত সোমবার রাতে মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিল পূর্বস্থলী ২ ব্লকের পাটুলি গ্রামের বছর সতেরোর ওই কিশোরী। পরের দিন খবর আসে, কয়েক কিলোমিটার দূরে দামপাল গ্রামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রয়েছে সে। সেখান থেকেই তাকে উদ্ধার করা হয়। মেয়েটি তার মা-কে জানায়, পাটুলি এলাকার একটি ফার্মের কাছে তিন যুবক তাকে ধর্ষণ করেছে। পরে রাস্তার পাশে বিবস্ত্র অবস্থায় বসে কাঁদতে দেখে গ্রামের এক মাছবিক্রেতা তাকে উদ্ধার করে স্কুলবাড়িতে আশ্রয় দেন। পরের দিন কালনা হাসপাতালে মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়।
ধৃত তিন। কালনা আদালত চত্বরে শুক্রবার দুপুরে তোলা নিজস্ব চিত্র।
বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা জানান, ঘটনাস্থলের শ’দুই গজের মধ্যে একটি ফাস্ট ফুড সেন্টার আছে। সেখানে গোপনে মদও বিক্রি হয়। বুধবার পুলিশ ওই দোকানের মালিককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। তাঁর কাছ থেকেই জানা যায়, সোমবার সন্ধ্যায় দামপাল ও নারাণপুরের তিন যুবক মদ্যপান করে সেখানে ঘোরাফেরা করছিল। কিশোরীর কাছ থেকে ধর্ষণকারীদের চেহারার বর্ণনা জেনে পুলিশ ফাস্ট ফুড সেন্টারে আসা জনা কুড়ি যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকে। তার মধ্যেই তিন যুবকের কথায় নানা অসঙ্গতি দেখা যায়। দফায়-দফায় জেরা করতেই তারা গণধর্ষণের কথা কবুল করে বলে পুলিশের দাবি। পরে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
তবে ধৃতদের পরিবারের দাবি, তাঁদের বাড়ির ছেলেদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। বিল্টুর মা মীরা মণ্ডলের বক্তব্য, “ঘটনার রাতে আমার ছেলে ৯টার মধ্যে বাড়ি ফিরে ঘুমিয়ে পড়েছিল। অথচ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পাড়ার চায়ের দোকান থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।” গোপীর মা পার্বতী রায়ের দাবি, “ওই দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ আমার ছেলে ওর বাবার জন্য বাড়িতে ডাক্তার ডেকে আনে। তার পরে আর বাড়ি থেকে বেরোয়নি। অথচ পুলিশ ওকে গ্রেফতার করল।”
মামলায় তফসিলি জাতি ও উপজাতি নিগ্রহ দমন আইনের ৩/৪ ধারা যুক্ত হওয়ায় ডিএসপি পদমর্যাদার নীচের কোনও অফিসার তদন্ত করতে পারবেন না। তাই পূর্বস্থলী থানার আইসি রঞ্জন সিংহের বদলে এসডিপিও (কালনা) ইন্দ্রজিত সরকারকে তদন্তভার দেওয়া হয়েছে। ৩ জুলাই জেলে ধৃতদের টিআই প্যারেডে করিয়ে দেখা হবে, কিশোরী তাদের শনাক্ত করতে পারে কি না। ধৃতদের আইনজীবী প্রভাত ঘোষের অভিযোগ, “টিআই প্যারেডের আগেই পুলিশ তাদের কিশোরীর বাড়িতে নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে। সে কথা আদালতকে জানানো হয়েছে।” পুলিশ অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পুলিশ সুপার জানান, এক মাসের মধ্যেই মামলার চার্জশিট দেওয়া হবে।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.