বৃহস্পতিবার দিন ভর থানা লক-আপে শুয়ে বসে কাটালেন সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন ও দেবযানী মুখোপাধ্যায়। বুধবার বিকেলে বালুরঘাট আদালত থেকে ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতে নিয়ে তাদের প্রায় ৯০ কিলোমিটার দূরে কুশমন্ডি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযুক্ত সারদার দুই কর্তার বিরুদ্ধে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট থানাতে ৩০০-উপর মামলা আছে। তার একটি মামলায় আদালত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। তবে সংবাদমাধ্যমের নজরদারি এড়াতে তাদের জেলার শেষ প্রান্তের থানায় নিয়ে যাওয়া হয় বলে পুলিশ সূত্রের খবর। কুশমন্ডির থানা লকআপে আলাদা দুটি সেলে তাদের থাকার ব্যবস্থা হয়েছে। গঙ্গারামপুরের এসডিপিও স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় তাদের এক দফা জেরা করে। দক্ষিণ দিনাজপুরে পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এ জেলায় সারদার এজেন্ট কারা ছিলেন, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, সম্পত্তির পরিমাণ কত, তা জানতে অভিযুক্ত সারদা কর্তাদের জেরা করা হচ্ছে।” পুলিশ সূত্রের খবর, বালুরঘাটের বাসস্ট্যান্ড যুবশ্রী মোড়ে সারদার অফিসটি দেবযানী মুখোপাধ্যায়ের নামে পুরসভার কাছ থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে টাকা তোলার ব্যবসা শুরু হয়। হিলির ত্রিমোহিনী এলাকায় অত্যাধুনিক নার্সিংহোম চালুর নামে সারদার তরফে প্রায় ২৪ বিঘা জমি কিনে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সাইনবোর্ড দেখিয়েই মানুষকে টোপে ফেলে এলাকা থেকে প্রচুর টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করেছেন গ্রাহকেরা। ওই জমিটি ফাঁকাই পড়ে বলে অভিযোগ। বালুরঘাট জেলা সরকারি আইনজীবী দেবাশিস মজুমদার জানিয়েছেন, সারদার কর্তাদের নামে বালুরঘাটে মোট ৩১৯টি প্রতারণা, জালিয়াতি ও বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে। তারই একটি মামলায় সুদীপ্ত সেন ও দেবযানীকে কলকাতার আলিপুর জেল থেকে এনে বুধবার বালুরঘাট আদালতে তোলা হয়। এ দিন অন্য একটি প্রতারণা ও জালিয়াতির মামলায় অভিযুক্ত সুদীপ্ত সেনদের বুনিয়াদপুরে গঙ্গারামপুর মহকুমা আদালতে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক দেবাশিস চৌধুরী। গঙ্গারামপুরের প্রাণসাগর এলাকার বাসিন্দা জয়নাল আবেদিন সারদার বিরুদ্ধে মামলা করেন। অভিযুক্তরা ১৪ দিন পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন। তার পরেই অভিযুক্তদের মহকুমা আদালতে হাজির করাতে উদ্যোগী হতে জেল সুপারকে এ দিন বিচারক নির্দেশ দেন বলে আদালত সূত্রে খবর। |