আগামী ৭২ ঘণ্টায় সিকিম এবং উত্তরবঙ্গে প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা জানিয়ে সতর্কতা জারি করল কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর। সর্তকতা পাঠান হয়েছে শিলিগুড়ির মহকুমাশাসকের দফতরেও। তা জেলা প্রশাসনের তরফে বিডিওদের এবং পুরসভাকে জানানো হয়েছে। ভারী বৃষ্টির কথা জানিয়ে জনপ্রতিনিধিদের কাছে এসএমএস যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার পরিস্থিতি মোকাবিলার বিষয়টি নিয়ে চিঠি আসে পুরসভার পরিবেশ বিভাগে।
এই অবস্থায় উত্তরাখন্ডের ভয়াবহ দুর্যোগের প্রেক্ষাপটে দার্জিলিঙের পাহাড়বাসীরা শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। বিমল গুরুঙ্গের নেতৃত্বে গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন থেকে অবিলম্বে পাহাড়ের জন্য আলাদা বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী তৈরি করে রাখার দাবি জানানো হয়েছে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকারের কাছে জিটিএ কর্তৃপক্ষ চিঠি দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার মহাকরণে চিঠির বিষয়টি জানিয়েছেন পাহাড়ের বিধায়ক হরকা বাহাদুর ছেত্রী। তাঁর কথায়, পাহাড়ে বহুতল বাড়ি করার উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ৩৩ ফুটের উপর বাড়ির উচ্চতা হওয়ার কথা নয়। দেখা যাচ্ছে, পাহাড়ে পাঁচ ছ’তলা বাড়ি হচ্ছে। উত্তরাখন্ডে ঘটনার পর আমরা চিন্তিত। ২০১১ সালের ভুমিকম্পে পাহাড়েই ২০ জনের মৃত্যু হয়। এ বছর পাহাড়ে ব্যাপক বৃষ্টি হচ্ছে। তাই ভয়ের একটা সম্ভাবনা থাকেই। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মোকাবিলায় একটি প্রশিক্ষিত বাহিনী থাকলে কাজের সুবিধা হবে। কেন্দ্রীয় ও রাজ্যকে বিষয়টি জানান হয়েছে। |
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহার এই ৩ জেলার বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে শিলিগুড়ি পৌঁছেছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ৩৫ জনের একটি দল। বৃহস্পতিবারও সুকনায় বৈঠক করেন তাঁরা।
সিকিম প্রশাসন সূত্রের খবর, এই পরিস্থির কথা বিবেচনা করে নাথুলা ও ছাঙ্গু যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ২৯ জুন পর্যন্ত ওই দুই এলাকায় পর্যটকদের যেতে দেওয়া হবে না বলে প্রশাসন জানিয়েছে। উত্তর ও পূর্ব সিকিমের কিছু এলাকায় ধসও নেমেছে বলে জানা গিয়েছে। তবে প্রতি ক্ষেত্রেই ধস সরিয়ে দ্রুত রাস্তা পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসনের দাবি। আবহাওয়া দফতরের সিকিমের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, “উত্তরপ্রদেশে নিম্নচাপের টানেই উত্তরবঙ্গ ও সিকিমে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সিকিমে ৭২ ঘণ্টা ধরে নাগাড়ে বৃষ্টির পুর্বাভাস থাকলেও উত্তরবঙ্গে আগামী ২৪ ঘণ্টার পরে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কিছুটা কমতে পারে। উপগ্রহ চিত্র অনুযায়ী আগামী সপ্তাহেও বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি চলতে পারে।” এই ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রতিবারে মত এই বছরেও প্রাক বর্ষা প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। শিলিগুড়ি পুরসভার তরফে মিটিং করা হয়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে সিভিক পুলিশের সাহায্য চাওয়া হবে বলে জানান পরিবেশ এবং জঞ্জাল অপসারণের দফতরের মেয়র পারিষদ স্বপন চন্দ। গত বছরের মিলন মোড়ের বন্যা পরিস্থিতি দেখেই সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। |