বেশ কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন মা ও ছেলে। শালবনি গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। মা গৌরী পাত্র (৭৬) সুস্থ হয়ে বাড়িও ফিরে যান। পরে ফের অসুস্থ হওয়ায় মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। বুধবার তিনি মারা গিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকালে শালবনি গ্রামীণ হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে গৌরীদেবীর ছেলে মনমোহন পাত্রের (৪৭)।
শালবনির যাত্রা গ্রামে আরও অনেকেই জ্বরে আক্রান্ত। কারও কারও বমি-পায়খানা হচ্ছে। রোগাক্রান্ত দু’জনের শরীরে কলেরার জীবাণু মিলেছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরিশচন্দ্র বেরা বলেন, “যাঁদের শরীরে কলেরার জীবাণু পাওয়া গিয়েছে তাঁরা ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন। তবে যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের দেহে কলেরার জীবাণু পাওয়া যায়নি।”
স্বাস্থ্য দফতর অবশ্য বিষয়টি হালকা ভেবে দেখতে নারাজ। বিশেষ করে বৃহস্পতিবারই অসুস্থ ২ জনের দেহে কলেরার জীবাণু রয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতরের হাতে রিপোর্ট পৌঁছেছে। তারপরই নড়েচড়ে বসেছে স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গ্রামে ৩৮০ জন মানুষের বসবাস। যাঁদের মধ্যে প্রায় ৮০ জন কিছুদিন ধরেই রোগে ভুগছিলেন। ১৭ জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁদের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছিল। তাঁদেরই ২ জনের দেহে কলেরার জীবাণু মিলেছে। ক’দিন ধরেই ওই গ্রামে স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা যাচ্ছিলেন। ঘটনার গভীরতা বুঝে বৃহস্পতিবার শালবনি গ্রামীণ হাসপাতালে যান জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরিশচন্দ্র বেরা ও সহকারী জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (১) সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গি।
ব্লক হাসপাতালের কর্মী-চিকিৎসক ও নার্সদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই গ্রামে কী ভাবে জীবাণু মুক্ত করার কাজ করতে হবে সে বিষয়েও পরামর্শ দেন। তারই সঙ্গে ওষুধ, ব্লিচিং দিয়েও গ্রামে পাঠানো হয় একটি প্রতিনিধি দলকে।
স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, ধীরে ধীরে শালবনির ওই এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসছে। তবে যতদিন না গ্রামের সকলেই সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠবেন ততদিন পর্যন্ত প্রতিদিনই গ্রামে স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধিরা যাবেন। অসুস্থদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পাশাপাশি এলাকাটিকে সম্পূর্ণ জীবাণুমুক্ত করার কাজও চলবে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে। |